ক্রনিক অসুখ কেন আলাদা

লাইফস্টাইল ডেস্ক
লাইফস্টাইল ডেস্ক লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:২২ পিএম, ১০ জুলাই ২০২৫

আমরা সাধারণত অসুস্থতা বলতে বুঝি কিছুদিনের জ্বর, সর্দি, পেট খারাপ বা গ্যাস্ট্রিক, যা কিছুদিন ওষুধ খেলেই সেরে যায়। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি রোগ বা ক্রনিক ডিজিজ এমন এক বাস্তবতা, যা কখনও পুরোপুরি সেরে যায় না। আজীবন এসব রোগ সামলে নিয়ে চলতে হয়।

দীর্ঘমেয়াদি রোগ মানে কী?
ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হাঁপানি, থাইরয়েড, আর্থ্রাইটিস, লুপাস, ক্যানসার, হৃদরোগ, কিডনির সমস্যা, বাঁতের ব্যথা – এই সবই দীর্ঘমেয়াদি রোগ বা ক্রনিক অসুখের উদাহরণ। এই রোগগুলো লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা করতে হয়, এবং কখনও পুরোপুরি সারে না। বরং নিয়মিত চিকিৎসা, খাবারদাবার, ওষুধ, জীবনধারা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়। তাই কখনও মজা করে আর কখনও সত্যিকার অর্থেই বলা হয় যে ক্রনিক অসুখ হলো জীবনসঙ্গীর মতো। কারণ এই অসুখের মতো করে নিজের অভ্যাস বদলে নিয়ে সারাজীবন একসঙ্গে থাকতে হয়!

আজ (১০ জুলাই) ক্রনিক অসুখ সচেতনতা দিবসে জেনে নিন এই ধরনের রোগ সামলানো আলাদা কেন?

ক্রনিক অসুখ কেন আলাদা

১. সম্পূর্ণ নিরাময়ের আশা থাকে না
সাধারণ রোগে আমরা ওষুধ খেয়ে সুস্থ হয়ে উঠি। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি রোগে এমন আশা না রেখে, বরং নিয়ন্ত্রণেই গুরুত্ব দিতে হয়। রোগের সঙ্গে বসবাস করাকে মন থেকে মেনে নেওয়ার চেষ্টা করতে হয়।

২. প্রতিদিনের লাইফস্টাইল পাল্টে ফেলতে হয়
খাওয়া-দাওয়া, ঘুম, হাঁটাহাঁটি, মানসিক চাপ, এমনকি পেশা – সব কিছুতেই রোগের ছাপ পড়ে। এগুলোতে পরিবর্তন আনতে হয়। একজন ডায়াবেটিক রোগীকে যেমন নিয়মিত ইনসুলিন নিতে হয়, তেমনি কিডনি রোগীর ডায়েটেও থাকে কঠিন নিয়ম।

ক্রনিক অসুখ কেন আলাদা

৩. আজীবন ওষুধ খাওয়ার ধৈর্য দরকার
অনেক রোগে প্রতিদিন নিয়ম করে ওষুধ খেতে হয়। মাঝে মধ্যে ভুলে গেলে বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখা কিন্তু সহজ নয়।

৪. মানসিক চাপ ও হতাশা বাড়ে
যেহেতু রোগ পুরোপুরি সারে না, তাই চিকিৎসা নিতে নিতে অনেক সময় রোগীরা হতাশায় ভোগেন। ‘আমি কেন?’ – এই প্রশ্ন, অপরাধবোধ, পরিবারে বোঝা হয়ে যাওয়ার ভয়, এগুলো দীর্ঘমেয়াদি রোগীর মাথায় চলতে থাকে সবসময়।

ক্রনিক অসুখ কেন আলাদা

৫. খরচের বোঝাও বেশি
দীর্ঘ মেয়াদে চিকিৎসা খরচ, নিয়মিত পরীক্ষানিরীক্ষা ও ওষুধ, সব মিলিয়ে প্রতি মাসেই বড় অংকের একটা আর্থিক চাপ হয়। এসং এটিকে অনেকসময় বোঝা মনে হতে পারে।

এসব কারণে হঠাৎ অসুস্থ হওয়ার তুলনায় ক্রনিক অসুখে আক্রান্ত ব্যক্তি তুলনামূলক কম গুরুতর হলেও এই অসুখ বয়ে নিয়ে বেড়ানো ক্লান্তিকর। তাই ধৈর্য ও পরিকল্পনা নিয়ে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনতে হবে। প্রয়োজনে মনোচিকিৎসা নিতে হবে। পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে বোঝাপড়া বাড়াতে হবে, যেন তারা আপনাকে সাহায্য করতে পারেন।

ক্রনিক অসুখ কেন আলাদা

দীর্ঘমেয়াদি রোগ মানেই জীবন শেষ নয়। প্রয়োজন শুধু ধৈর্য, সচেতনতা ও ভালোবাসা। অনেকেই আজকাল ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ নিয়েই সুস্থভাবে জীবন কাটাচ্ছেন – কারণ তারা রোগকে শত্রু নয়, বরং সহবাসযোগ্য প্রতিবেশী হিসেবে মেনে নিয়েছেন।

কারণ আপনার রোগ আপনাকে থামিয়ে দেবে কি না, তা নির্ভর করে আপনি কীভাবে তা সামলান তার উপর।

এএমপি/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।