জহুরুল ইসলামের তিন কবিতা
সেই ডিসেম্বর
এই যে মাটি-
এখানে একটু বসে দেখো-আহা! কী শান্তি।
একটা হলুদ গামছা পেতে বসো,
কিংবা এই ঘাসের উপর।
ঠিক এই মাঠের মুখোমুখি-
কী, মনে পড়ে সেইসব মুখগুলির কথা?
বাতাসে কান পেতে রাখো-
শোনা যায় সেই দিনের মিছিরের আওয়াজ?
একদম নদীর গর্জনের মতো।
তারাই তো রেখে গেছে আমাদের জন্য এই আলো, হাওয়া, মাটি।
এই যে ঘাসের কচি মুখগুলো,
তাদের বুকের ভেতর আজও রক্তের গন্ধ বয়ে বেড়ায়-
ভোরের প্রার্থনায় তাদেরও চোখে জল ঝরে।
এই যে পাখির ডাক-
এও কী সেই ডিসেম্বরের মিছিলের আওয়াজ!
****
রক্তের নদী বেয়ে
বিজয় এসেছে রক্তের নদী বেয়ে-
এই মাঠে, ঘাসে-
মানুষের বুকের জমিনে আজ ফুল ফোটে-
বাতাসে দোল খায়।
অজস্র স্বপ্ন আকাশের নক্ষত্রের মতো জ্বলে আর নেভে।
আগুনের মতো জ্বলে উঠে নিভে গেছে কতো ভোর,
সেই ভোর আজ বুকের ভেতর সোনা রাঙা মুখ হয়ে ভাসে।
****
রক্তের ফসল
রক্তের ভেতর রক্তের বীজ বুনেছিলো যেই পাখি,
তারা আকাশে নক্ষত্র হয়ে ঝুলে আছে।
সেই বীজ রক্তজবা আর তার ঘ্রাণ-
পতাকার সবুজ শরীরের ভেতর জবা রঙ।
মাঠের নরম দেহে যারা স্বপ্ন বোনে-
ক্লান্ত শরীরে এসে যেখানে শুয়ে পড়ে,
প্রশান্তির হাওয়া এসে দোল খায়;
এসব তাদেরই রেখে যাওয়া রক্তের ফসল।
ওই সব ফুলের প্রতি হাজার সালাম,
ওই পাখি যেইখানে উড়ে গেছে-
ওইখানে বয়ে যাক শান্তির নহর-
কেএসকে/