ভৌগোলিক কারণে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অতি চমৎকার: ড. ইউনূস

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ১০:২২ পিএম, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অতি চমৎকার বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ।

তিনি বলেন, আমাদের সামনে বিস্তীর্ণ মহাসাগর। আমাদের উপকূল ভূমি সাগরের সঙ্গে লাগোয়া। এ এক মস্ত বড় সুযোগ। পৃথিবীর দরজা আমাদের সামনে খোলা। আমরা এতদিন ব্যবহার করতে জানিনি। যে মুহূর্তে ব্যবহার শুরু করবো আমাদের অর্থনীতিকে দড়ি দিয়েও বেঁধে রাখা যাবে না।

রোববার (১৬ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস এসোসিয়েশনের আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে তিনি একথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের উত্তরে বিখ্যাত হিমালয় পর্বতমালা। যেখানে জমে আছে আমাদের প্রগতির শক্তি, খাদ্য প্রাণ। কত শক্তি দরকার বাংলাদেশের। সেখানে সব জমে আছে, হারিয়ে যাচ্ছে না। শুধু নেবার অপেক্ষায়। শুধু প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে একটা সম্পর্ক করা যাতে করে আমরা নেপাল আর বাংলাদেশের মধ্যে যে দূরত্বটুকু আছে ততটুকু অতিক্রম করা। তারা এক পায়ে খাড়া, নেপাল বারে বারে বলছে আমাদেরটা নিয়ে যাও। আমরা এক পায়ে খাড়া নেওয়ার জন্য। মাঝখানে ওই টুকু পথ অতিক্রম করার সুযোগটা আমাদের করতে হচ্ছে। আশা করি তাদেরই অর্থনৈতিক কারণে সেটা আমাদেরকে দেবে। সেটা উভয়ের মঙ্গলের জন্য। যদি আমরা সেই পথটা খুলে পাই তাহলে বাংলাদেশকে আটকে রাখার ক্ষমতা কারোর নেই।

অবস্থানগত কারণে আমরা মহা সৌভাগ্যবান এক জাতি। সে জাতির দুঃখ কেন থাকবে আমি বুঝতে পারি না। এটা আমাদের কপালের দোষ, নাকি চরিত্রের দোষ না আমাদের চিন্তার দোষ। যদি থেকে থাকে তাহলে সেখান থেকে মুক্ত হতে হবে। আমরা তো তড়িৎ গতিতে এগিয়ে যেতে চাই।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কুমিরা থেকে টেকনাফ অঞ্চল পর্যন্ত যে উপকূল ভূমি সেখানে যদি কাতারে কাতারে নৌ বন্দর স্থাপন হয়, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর পর্যন্ত যদি আমরা দুনিয়ার সব জাহাজকে কাজ করার জন্য সুযোগ ও আশ্রয় দিতে পারি তাহলে আমাদের আটকাবে কে?

শুধু সমুদ্র বন্দর আমরা ব্যবহার করবো, আমাদের মালামাল যাবে তা তো না, আমাদের নিজস্ব অর্থনৈতিক অঞ্চল আছে। সে অঞ্চলটাকে আমরা এখনো খুলতে পারিনি।
নেপালের সৌভাগ্য তারা হিমালয়ের পাদদেশে আছে, দুর্ভাগ্য হলো সমুদ্রের দেখা তাদের হয় না। তাদের সমুদ্র দেখতে হলে আমাদের মাধ্যমে দেখতে হবে। যৌথ অর্থনীতি গড়ে তোলার মাধ্যমে সে পথ আমরা করে দিতে পারি। তার সমুদ্রের অভাব আর আমাদের পর্বতের অভাব।

ভুটানের সমুদ্র দর্শনের সুযোগ নেই। তাদের সমুদ্রে আসতে হলে আমাদের মাধ্যমে আসতে হবে। আমরা তাদের স্বাগত জানাই। এমনি ভারতের পূর্বাঞ্চলেরও নেপাল ও ভুটানের মতো অবস্থা।

সমুদ্র বন্দরের মাধ্যমে আমাদের মাল তাদের কাছে যাবে তাদের মালামাল আমাদের কাছে আসবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব হতাশায় ভুগি। হতাশার তো কারণ নাই। এটা আনন্দের বিষয়। আমাদের যে অবস্থান যে সুযোগ সুবিধা, প্রয়োজন শুধু অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার প্রক্রিয়াকে জোরদার করা। অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার হলে মালামাল সোজা চলে যাবে নেপালে, ভারতে ও ভুটানে। তাদের মালামাল সমুদ্র বন্দর ব্যবহার করে চলে আসবে।

এমইউ/এমএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।