গভীর রাতে অসুস্থ, বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসা মিললো ঢামেকে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৪১ পিএম, ২১ আগস্ট ২০২৫
ফাইল ছবি

রাজধানীতে এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেলেন সাংবাদিক রাজন ভট্টাচার্য। তার নিকটাত্মীয় ওপেন হার্ট সার্জারি করা এক রোগী হঠাৎ রাতে অজ্ঞান হয়ে পড়ে মাথায় গুরুতর আঘাত পান। এরপর শুরু হয় হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ছোটাছুটি। চার ঘণ্টা দৌড়ঝাঁপ করেও দেশের অন্যতম বড় কয়েকটি হাসপাতালে সঠিক চিকিৎসা মেলেনি। অবশেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা মেলে তার।

বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) রাজন ভট্টাচার্য তার ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে লেখেন, রাত তিনটার দিকে অসুস্থতার খবর পেয়ে ছুটে যাই রোগীর বাসায়। রোগীকে প্রথমে নেওয়া হয় রাজারবাগ সিপিএইচ হাসপাতালে। সেখানে ডাক্তার জানান, রোগীর কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হতে পারে, তবে রক্ত বন্ধ করার কোনো ব্যবস্থা নেই। ব্যান্ডেজ করে পাঠিয়ে দেওয়া হয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে।

তিনি লেখেন, হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে তিন দফা দেখানো হলেও রক্ত বন্ধের কোনো উদ্যোগ নেননি কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। বরং রোগীকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এসময় মাথায় দেওয়া গজ ভিজে টপটপ করে রক্ত ঝরছিল।

সোহরাওয়ার্দীর জরুরি বিভাগ থেকেও রোগীকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় জানিয়ে রাজন ভট্টাচার্য লিখেছেন, বললাম রক্ত ঝরছে, একটু ড্রেসিং করে দিন। তারা জবাব দিলেন, লোক নেই। সময় লাগবে। দ্রুত ঢাকা মেডিকেলে চলে যান।

অবশেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে জরুরি বিভাগে টিকিট কাটার পর ডাক্তার দেখেন। এরপর হাসপাতালের একজন সাধারণ কর্মী ডাক্তারের উপস্থিতিতে ব্যান্ডেজ খুলে সেলাই দেন। এতে রক্ত বন্ধ হয়। রাজন ভট্টাচার্যের ভাষায়, যিনি সেলাই দিলেন, এটা তার কাজ নয়। তবুও আমরা বাধা দেইনি, কারণ আমরা বিপদগ্রস্ত।

পরে রোগীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ডা. ইশতিয়াক আহমেদ পুরো ঘটনা শুনে বলেন, ‘রাতবিরাতে বিপদ হলে সরাসরি ঢাকা মেডিকেলেই আসবেন। এখানে কিছুটা হলেও মানুষ সেবা পায়।’ একই সঙ্গে দেশের স্বাস্থ্যসেবার এ দুরবস্থায় তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।

রাজন ভট্টাচার্য তার স্ট্যাটাসে প্রশ্ন তুলেছেন, স্বাস্থ্যসেবার হাল যদি এই হয়, তবে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে? প্রায় চার ঘণ্টা হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরেও কেউ রক্ত বন্ধের দায়িত্ব নিলো না! হৃদরোগজনিত সমস্যা হয়েছে কি না, তাও নিশ্চিত করতে পারলো না।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও লিখেছেন, এভাবে মাথার রক্ত ঝরতে ঝরতে একদিন অসহায় মানুষের হৃদয়ে বিদ্রোহ জমে উঠবে। আশাকরি আমার এই অভিজ্ঞতা প্রধান উপদেষ্টা, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও নীতি নির্ধারকদের কাছে পৌঁছাবে।

এসইউজে/কেএসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।