প্রণয় ভার্মা
বাংলাদেশের সঙ্গে সমতা-শ্রদ্ধার ভিত্তিতেই সম্পর্ক চায় ভারত
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত স্থিতিশীল, ইতিবাচক, গঠনমূলক ও ভবিষ্যৎমুখী সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) ঢাকার ইন্ডিয়ান কালচারাল সেন্টারে ভারতীয় হাইকমিশনের আয়োজনে মৈত্রী দিবস ২০২৫-এর ৫৪তম বার্ষিকীতে এ মন্তব্য করেন তিনি। অনুষ্ঠানে ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা দিনটিকে দুই দেশের সম্পর্কের ইতিহাসে ‘এক ঐতিহাসিক মাইলফলক’ বলে উল্লেখ করেন।
প্রণয় ভার্মা বলেন, সমতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে গড়ে উঠবে দুই দেশের সম্পর্ক, আর এর কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে উভয় দেশের জনগণ।
তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে স্থিতিশীল, ইতিবাচক, গঠনমূলক, ভবিষ্যৎমুখী ও পারস্পরিকভাবে কল্যাণকর সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায়, যা সমতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত। দুদেশের জনগণ এ সম্পর্কের প্রধান অংশীদার।
আশা প্রকাশ করে ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, অতীতের যৌথ ত্যাগ এবং ভবিষ্যতের নতুন আকাঙ্ক্ষাকে শক্তি হিসেবে নিয়ে ভারত–বাংলাদেশ আরও ঘনিষ্ঠ অংশীদারত্ব গড়ে তুলবে।
অনুষ্ঠানে ছিল বাংলাদেশি শিল্পীদের মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, যা দুই দেশের দীর্ঘদিনের সাংস্কৃতিক বন্ধন ও ঐতিহ্যের প্রতিফলন। প্রথম পরিবেশনা ছিল সুন্দরম প্রোডাকশনের প্রতিবন্ধী-অন্তর্ভুক্তিমূলক থিয়েটার ‘৭১ ইন সাইলেন্স’। রমেশ মায়াপ্পানের নির্দেশনায় এ পরিবেশনায় শারীরিক অভিব্যক্তির মাধ্যমে তুলে ধরা হয় বাংলাদেশের জন্মের গল্প-স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনা থেকে তার পরিণতি পর্যন্ত।
এরপর সৃষ্টি কালচারাল সেন্টারের নৃত্য পরিবেশনা মঞ্চে উপস্থাপন করে বাংলাদেশের বর্ণিল সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং ভারত–বাংলাদেশ বন্ধুত্বের প্রতীকী চিত্র। অনুষ্ঠানটির শেষাংশে জনপ্রিয় রক ব্যান্ড শিরোনামহীনের প্রাণবন্ত সংগীত দর্শকদের মাতিয়ে তোলে।
মুক্তিযোদ্ধা, সাংস্কৃতিক কর্মী, তরুণ প্রজন্মসহ বিভিন্ন অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। আয়োজকদের মতে, মৈত্রী দিবস শুধু একটি স্মরণীয় দিন নয়, এটি দুই প্রতিবেশী দেশের যৌথ ইতিহাস, মূল্যবোধ ও পারস্পরিক সহমর্মিতার প্রতীক। এ উদ্যাপন দুই দেশের মানুষের ত্যাগকে সম্মান জানায় এবং ভবিষ্যৎ অংশীদারত্বকে আরও সুদৃঢ় করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে।
১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল ভারত, যা ছিল বাংলাদেশের মুক্তির দশদিন আগে। সেই গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক সহায়তার স্মরণেই প্রতিবছর পালিত হয় মৈত্রী দিবস।
জেপিআই/এমএএইচ/