মার্স করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে আগাম প্রস্তুতি গ্রহণের আহবান


প্রকাশিত: ০৭:৫৩ পিএম, ১৮ জুন ২০১৫

তীব্র শ্বাসতন্ত্রবাহিত মার্স (মিডল ইষ্ট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম) করোনা ভাইরাস রোগের সংক্রমণ প্রতিরোধ ও মোকাবেলায় বাংলাদেশসহ দক্ষিন এশিয়ার ১১টি দেশকে সতর্ক প্রহরা ও আগাম প্রস্তুতি গ্রহণের আহবান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ড মধ্যপ্রাচ্যে থেকে এক যাত্রীর মার্স করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত হওয়ার পর এ আহবান জানানো হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিন এশিয়া অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক ড. পূনম ক্ষেত্র পাল সিং দক্ষিন এশিয়ার সদস্য দেশগুলোকে প্রতিরোধে প্রস্তুুতি কেমন তা পর্যালোচনার পরামর্শ দিয়ে বলেন, শক্তিশালী স্বাস্থ্য পদ্ধতির মাধ্যমে উচ্চ মাত্রার সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারলেই স্বাস্থ্যকর্মীদের সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করা যেতে পারে।

সম্প্রতি উত্তর কোরিয়ায় ১৬৪ ও চীনে ১জনসহ ১৬৫ জন মার্স করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। তাদের মধ্যে ২৩জন মারা গেছে। আক্রান্ত ও মৃতদের মধ্যে স্বাস্থ্যকর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সংখ্যাই বেশী।

মহাখালী রোগতত্ত্ব, রোগ নিরাময় ও গবেষণা কেন্দ্র (আইইডিসিআর) এর মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোশতাক হোসেন বৃহস্পতিবার জাগো নিউজ ২৪.কমকে বলেন, মার্স করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের প্রস্তুুতি রয়েছে। আক্রান্তদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে বিপুল সংখ্যক চিকিৎসককে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে ।

তিনি বলেন, মার্স করোনা ভাইরাস শ্বাসতন্ত্রবাহিত এ ভাইরাস হাঁচি ও কাশির মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। আক্রান্ত রোগীরা উচ্চমাত্রার জ্বর, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া ও শ্বাসপ্রশ্বাসের কষ্টে ভোগে থাকেন।

তিনি আরো জানান, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর কোরিয়া থেকে ব্যবসায়িক ও পেশাগত কাজে বাংলাদেশীসহ বিদেশী নাগরিকরা যাতায়াত করে। ফলে বিমানবন্দরে সতর্কতার সাথে আগতদের প্রতি নজরদারি আরও বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। সন্দেহভাজন  কোন যাত্রী পাওয়া গেলে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কি প্রক্রিয়ায় চিকিৎসাসেবা প্রদান করতে হবে সে সম্পর্কে  ইতিমধ্যেই চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে এবং এখনও প্রশিক্ষন চলছে। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে সার্ভিল্যান্স সেন্টারের  শ্বাসকষ্ট নিয়ে যারা আসছেন তাদের কাছ থেকে তথ্যউপাত্ত নিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করা হচ্ছে। 

এদিকে গত কয়েকমাসে মধ্য প্রাচ্য থেকে ফেরত বেশ কিছুসংখ্যক রোগীর নমুনা আইইডিসিআরের ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হলেও তাদের কেউ মার্স করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রমান মেলেনি। তবে গত বছরের জুন মাসে বাংলাদেশে মার্স করোনা ভাইরাস রোগী শনাক্ত হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য অধিদফতরের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, মার্স করোনা ভাইরাস রোগের বিস্তার ও সংক্রমণ প্রতিরোধে হাসপাতালগুলোর পর্যাপ্ত প্রস্তুুতি নেই। উচ্চ সংক্রমণের এই রোগ দেখা দিলে তা সামাল দেয়া মুশকিল হবে। আক্রান্ত রোগীকে কিভাবে সামলাতে হবে সে সম্পর্কে অধিকাংশ চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী এখনও জানেননা। দেশের বিমানবন্দর গুলোতে থার্মাল মেশিন বসানো হলেও বর্তমানে সেখানে যথাযথ স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়না। আগত যাত্রী স্বেচ্ছায় অসুস্থ হওয়ার তথ্য জানালে তবেই স্বাস্থ্যকর্মীরা তথ্যউপাত্ত নিয়ে আইইডিসিআরকে অবহিত করেন।
 
উল্লেখ্য, ২০১২ সালে সৌদি আরবে প্রথম মার্স ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়। এ পর্যন্ত ২৬টি দেশের ১৩৩৩ জন রোগী সনাক্ত  হয়েছে।


টিআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।