মৃত্যুর মিছিলে আরও ৫ জন, নতুন আক্রান্ত ৫৫২

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০২:৪৩ পিএম, ০২ মে ২০২০

মহামারি করোনাভাইরাসে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে ১৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হিসেবে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৫৫২ জন। ফলে দেশে করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল আট হাজার ৭৯০ জনে। এছাড়া সুস্থ হয়েছেন আরও তিনজন। ফলে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা ১৭৭।

শনিবার (২ মে) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। অনলাইনে বুলেটিন উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

তিনি জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ছয় হাজার ১৯৩টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে পরীক্ষা করা হয়েছে পাঁচ হাজার ৮২৭টি। সব মিলিয়ে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৭৬ হাজার ৬৬টি। নতুন যাদের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে, তাদের মধ্যে আরও ৫৫২ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ফলে মোট করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন আট হাজার ৭৯০ জন। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মারা গেছেন আরও পাঁচজন। এদের তিনজন পুরুষ ও দুজন নারী। পাঁচজনই ঢাকার বাসিন্দা। ফলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭৫ জনে। এছাড়া সুস্থ হয়েছেন আরও তিনজন। ফলে মোট সুস্থ হয়েছেন ১৭৭ জন।

বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে ১৬৮ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন এক হাজার ৬৩২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৫৮ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন এক হাজার ২২ জন।

সারাদেশে আইসোলেশন শয্যা রয়েছে নয় হাজার ৬৩৮টি। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে আছে তিন হাজার ৯৪৪টি এবং ঢাকার বাইরে পাঁচ হাজার ৬৯৪টি। বর্তমানে করোনা চিকিৎসার জন্য আইসিইউ শয্যা রয়েছে ৩৪১টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট আছে ১০২টি।

হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় মোট কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে এক হাজার ৫৪৩  জনকে এবং এ পর্যন্ত মোট কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে এক লাখ ৯০ হাজার ৪৪৩ জনকে। 

গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৮৫০ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন এক লাখ ২১ হাজার ৩৪৯ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৬৯ হাজার ৯৪ জন।

ডা. নাসিমা জানান, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কোয়ারেন্টাইনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে ৬১৫টি প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে কোয়ারেন্টাইন সেবা দেয়া যাবে ৩০ হাজার ৯৫৫ জনকে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকার এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয় বুলেটিনে।

চার মাস আগে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া এ ভাইরাস ক্রমে গোটা বিশ্বকে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। চীন পরিস্থিতি অনেকটাই সামাল দিয়ে উঠলেও এখন মারাত্মকভাবে ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৪ লাখ ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা প্রায় দুই লাখ ৪০ হাজার। তবে ১০ লাখ ৮৪ হাজারের বেশি রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।

গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর প্রথম দিকে কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর মিললেও এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা। বাড়ছে মৃত্যুও।

প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। নিয়েছে আরও নানা পদক্ষেপ। যদিও এরই মধ্যে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকার কিছু পোশাক কারখানা খুলতে শুরু করেছে। তবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিশ্চিত করা না গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে কি-না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

পিডি/এমইউ/এইচএ/এমএস/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।