ব্যক্তিগত গাড়ি ও মাইক্রো ভাড়া করে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:১৪ পিএম, ২২ মে ২০২০

মহামারি করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যেও প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে ব্যক্তিগত গাড়ি ও ভাড়া করা মাইক্রোবাসে ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন অনেকে।

শুক্রবার যাত্রাবাড়ি ও সায়েদাবাদ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার পরিবহন ছাড়ছে না। তবে গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে অনেকেই টার্মিনালের আশপাশে এসে অবস্থান নিচ্ছেন। তাদের অনেকে মাইক্রোবাস ভাড়া করে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছেন।

এদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে শুক্রবার সকাল থেকেই ব্যক্তিগত গাড়ি, মাইক্রোবাস চলাচলের পরিমাণ বেড়েছে।

মহাসড়কে চলাচল করা ব্যক্তিগত গাড়িতে যাতায়াতকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একটি অংশ নিজস্ব গাড়ি নিয়ে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন। তবে মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার ভাড়া করেও একটি বড় অংশ ঢাকা ছাড়ছেন। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দো ভাগাভাগি করে নিতে বাড়ি টাকা দিয়েই এসব মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার ভাড়া করছেন তারা।

dhaka

বরিশালের গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার জন্য যাত্রাবাড়ি থেকে প্রাইভেট কার ভাড়া করেছেন মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, ঈদ করতে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি। আমরা তিনজন মিলে ১৫ হাজার টাকা মাইক্রোবাসটি ভাড়া করেছি। টাকা একটু বেশি খরচ হচ্ছে, তারপরও পরিবারের সবার সঙ্গে মিলে ঈদ করতে পারবো এটাই বড় কথা।

যাত্রাবাড়ি থেকে নোয়াখালীর গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করা করিম বলেন, আমরা চারজন মিলে ১২ হাজার টাকা দিয়ে গাড়িটি ভাড়া করেছি। ভাড়া অনেক বেশি, তারপরও বাড়িতে যেতে পারছি এটাই বড় কথা। তবে পরিবহন চললে আমাদের এতো টাকা খরচ হতো না।

তিনি বলেন, ঢাকায় অনেক দিন ধরেই বন্দী জীবন কাটাচ্ছি। কতদিন হয়ে গেছে বাবা-মা, ভাই-বোনের মুখ দেখতে পায় না। সবাই পথের দিকে চেয়ে আছে, কবে বাড়ি যাবো। যত কষ্টই হোক বাড়িতে গিয়ে বাবা-মায়ের হাসি মুখ দেখলেই, সব কষ্ট দূর হয়ে যাবে।

dhaka

করোনার ভয় করছে না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভয় তো করছেই। তারপরও এভাবে আর কতদিন থাকা যায়? তাই আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে বাবা-মায়ের কাছে যাচ্ছি।

এদিকে গণপরিবহন না চললেও অনেকে যাত্রাবাড়ি ও সায়দাবাদের বিভিন্ন পরিবহনের কাউন্টারের আসছেন। তাদের পাশাপাশি পরিবহন শ্রমিকরাও সায়দাবাস টার্মিনাল অঞ্চলে ঘোরাঘুরি করছেন।

সায়েদাবাদ টার্মিনালের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মালেক নামের একজন বলেন, ঈদ করতে কুমিল্লার গ্রামের বাড়ি যাবো। সকাল থেকে অপেক্ষায় আছি, যদি কোনা সুযোগ পায় চলে যাবো। এভাবে ঢাকায় পড়ে থাকতে আর ভালো লাগছে না। মাইক্রোবাস ভাড়া করে আমাদের পক্ষে যাওয়া সম্ভব না। তাই ট্রাক, কাভার্ডভ্যানের অপেক্ষা করছি।

dhaka

সায়েদাবাদ টার্মিনালের পাশে ঘোরাঘুরি করা পরিবহন চালক শহিদ নামের একজন বলেন, মানুষ মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কারে করে বাড়ি যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের পরিবহন চালাতে দেয়া হচ্ছে না। মালিক পক্ষ থেকেও আমাদের কোনো সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে না। আমরা দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছি।

বৃহস্পতিবার রাতে সরকারের উচ্চমহল থেকে পুলিশের প্রতি নির্দেশনা আসে, ছুটিতে জরুরি কাজের জন্য কেউ যদি গ্রামের বাড়ি ফিরতে চায় তাহলে তাদের যেন অনুমতি দেয়া হয়। তাদের যেন খুব বেশি হয়রানি বা প্রশ্নোত্তরের শিকার না হতে হয়। তবে গণপরিবহন চলবে না।

এমএএস/এমএসএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।