পুলিশে করোনা আক্রান্ত ৯ হাজার ছাড়াল
বৈশ্বিক মহামারি করোনায় সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে শুরু থেকেই ডাক্তার-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের সাথে কাজ করে আসছে বাংলাদেশ পুলিশ। যে কারণে পুলিশে সংক্রমণ বেশি। মঙ্গলবার (২৩ জুন) পর্যন্ত পুলিশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজার ৩৯৮ জন, যা একক পেশা হিসেবে সর্বোচ্চ। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
পুলিশ সদর দফতর থেকে বলা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ দমনের পাশাপাশি এই বৈশ্বিক মহামারিতে জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তারা। তবে তাদের মধ্যে পুলিশের ৫ হাজার ৪৯১ সদস্য সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
একদিকে করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যু সবচেয়ে বেশি ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি)। আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত ঢাকা মহানগর পুলিশে কর্মরতদের মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ১৪৫ জন সদস্য।
কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল ও ইমপালস হাসপাতালের চিকিৎসকদের নিরলস পরিশ্রম ও আন্তরিক চিকিৎসায় ইতোমধ্যে ডিএমপির ১ হাজার ৬১২ জন সুস্থ হয়েছেন। আক্রান্ত বিবেচেনায় ডিএমপিতে সুস্থতার হার ৭৬.০৩ শতাংশ। এ ভাইরাসে ডিএমপির ১৫ জন সদস্য মারা গেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, সুস্থ হওয়া পুলিশ সদস্যদের অনেকেই জনগণের সেবায় নিজেকে নিযুক্ত করতে আবারও কাজে যোগ দিয়েছেন। পুলিশের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হাসপাতালগুলোর উন্নত ও মানসম্মত 'চিকিৎসা ও সেবায়' সুস্থতার হার দ্রুততার সাথে বাড়ছে।
পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা বলেন, 'এ পর্যন্ত বাংলাদেশ পুলিশের ৩৪ জন গর্বিত সদস্য চলমান করোনাযুদ্ধে দেশের জন্য সর্বোচ্চ স্বীকার ত্যাগ করে জীবন উৎসর্গ করেছেন। সহকর্মী হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করে দেশসেবার দৃপ্ত শপথ বুকে ধারণ করে কাজ করে যাচ্ছে পুলিশ।'
তিনি বলেন, 'আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর ড. বেনজীর আহমেদ বিরামহীনভাবে করোনা প্রতিরোধে দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও সময়োপযোগী দিকনির্দেশনায় আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের সুস্থ করতে ব্যস্ত পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও।'
'পুলিশ সদস্যদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি কমাতে আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদের নির্দেশে আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের জন্য সর্বোত্তম সেবা ও শুশ্রূষা নিশ্চিত করতে বেসরকারি হাসপাতাল ভাড়া করাসহ সব পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত উন্নত চিকিৎসা সরঞ্জামাদি সংযোজন করা হয়েছে। এ কারণে একদিকে পুলিশে আক্রান্তের হার যেমন ক্রমান্বয়ে কমছে, তেমনি দ্রুততার সাথে বাড়ছে সুস্থতার হার।'
সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, করোনাকালে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে পুলিশ বাহিনী আদর্শ স্থাপন করেছে। করোনাকালে যখন কেউ লাশ দাফন করছে না, সেই সময়ও দায়িত্ব নিয়ে পুলিশ লাশ দাফন করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। অসহায় মানুষ পুলিশের কাছে যাচ্ছে। করোনার দুর্যোগে পুলিশের এসব মানবিক কর্মকাণ্ড সব মানুষের নজর কেড়েছে।
তিনি বলেন, ঘর থেকে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত পুলিশের মানবিকতার গল্প সবার মুখে মুখে। পুলিশ এখন মানুষের আস্থার ঠিকানা। কর্মহীন পরিবহন চালক ও শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়েছে পুলিশ।
জেইউ/জেডএ/এমকেএইচ