চাঁদা না দেয়ায় ব্যবসায়ীকে মারধর, সেন্টু কমিশনারের বিরুদ্ধে মামলা

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:০৫ এএম, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০
কমিশনার শফিকুল ইসলাম সেন্টু

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের টাউন হল মার্কেটে চাঁদা না দেয়ায় অস্ত্র বের করে জুস ব্যবসায়ী ও তার কর্মীদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে ডিএনসিসির ৩১নং ওয়ার্ডের কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম সেন্টুর বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় ‘সিঙ্গাপুর জুস অ্যান্ড কফি’র মালিক মো. তরিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা (মামলা নং-৯৬) দায়ের করেছেন। আসামিরা হলেন- ৩১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. শফিকুল ইসলাম সেন্টু (৫৫), সেলিম (৫৫), বাবুল (৫২), আবুল মন্ডল (৬০), মো. সালাম (৪০), মো. লাবু (৩৬), মো. চৌধুরী (৫০) ও মো. মোহন (৫০)।

মামলার বাদী তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত ২০ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টার দিকে স্থানীয় কাউন্সিলর শফিকুল ইসলাম সেন্টুর অফিস থেকে কামরুল ইসলামকে আমার দোকানে পাঠিয়ে তার কার্যালয়ে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দিয়ে আসতে বলে। আমি সেন্টুর অফিসে চাঁদার টাকা না নিয়ে যাওয়ার কারণে তার ক্যাডার বাহিনী নিয়ে গত ২১ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১০টায় আমার দোকানের সামনে আসে’।

তিনি বলেন, ‘কিছু বুঝে ওঠার আগেই সেন্টু আমাকে এলোপাতাড়ি কিলঘুসি ও লাথি মারে এবং চাঁদার টাকা না দেয়ায় আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। এরপর আমার দোকানের ৬৫ বছর বয়সী চাচাকে লাথি মেরে ফেলে দেয়। এরপর দোকানে থাকা আমার বাবাকে কমিশনার কিলঘুষি মারে এবং পিস্তল বের করে বাবার মাথায় বেশ কয়েকটি আঘাত করে’।

তিনি আরও বলেন, ‘চাঁদার টাকা না দেয়ার জন্য আমার বাবাকে গুলি করতে চাই। কর্মচারী মো. তাজুউদ্দিন, সজীব, রুহুল, রিফাত, আশাদুল ইসলামরা আমাকে বাঁচানোর জন্য আসলে তাদেরও ব্যাপক মারধর করে। আমরা কি শান্তিমতো ব্যবসাও করতে পারব না। এখন কি এই চাঁদা দেয়ার যুগ আছে’।

সিঙ্গাপুর জুস অ্যান্ড কফির মালিকের বাবা বলেন, ‘আমি নামাজ পড়ে দোকানে বসে ছিলাম। প্রথমে আমার ছেলে তারিকুল ইসলামকে ডাক দেয়। সামনে যাওয়া মাত্রই কমিশনার চড় দিয়ে লাথি মেরে ফেলে দেয়। এরপর আমার দোকানের ৬৫ বছর বয়সী আরেকজন তাজুল ইসলামকেও গালাগালি লাথি মেরে ফেলে দেয়। আমি বের হলে আমাকে গালাগালি করে ও চড় থাপ্পড় মারতে থাকে। পরে পিস্তল মাথায় ঠেকিয়ে বলে কাল থেকে যেন আর দোকান খোলা না হয়। আমাদের দোকানের কর্মচারীদের একজন একজন করে বের করে আর চড় লাথি মারতে থাকে।

৬৫ বছর বয়সী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে আমি বহু বছর ধরে কাজ করি। হঠাৎ এসে তরিকুলকে ডেকে নিয়ে মারপিট শুরু করে। আমি গেলে আমার বুকে লাথি মেরে গাছের উপর ফেলে দেয়। এত বয়স হয়েছে এই বয়সে এসে একজন জনপ্রতিনিধি আমাদের এভাবে মারতে পারে তা কখনও চিন্তা করিনি। আমরা কি এর সঠিক বিচার পাব’?

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকানদার বলেন, ‘কমিশনারের যন্ত্রণায় এখানকার ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ, ভয়ে কেউ মুখ খোলে না। এই মুরব্বী ও তার ছেলেকে এসে মারপিট করল। কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারে না।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ৩১নং ওয়ার্ড কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম সেন্টু জাগো নিউজে বলেন, ‘আমি গিয়েছিলাম ফুটপাতে মানুষের হাঁটতে অসুবিধা হয় কিনা সেটা দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য’।

সিঙ্গাপুর জুস ও কফির মালিকের কাছে চাঁদা ও তার বাবা এবং কর্মচারীদের মারধর ও অস্ত্র মাথায় ঠেকিয়ে হুমকি দিয়েছেন কিনা সে বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার দ্বারা কি এসব সম্ভব। আমি এসব কিছুই করিনি’।

মামলার তদন্তকারী কর্মকতা মোহাম্মদপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শফিকুল আলম জানান, মামলা হয়েছে কাগজ এখনও হাতে পাইনি। হাতে পেলে পরে জানাতে পারব। মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি)মো. আব্দুল লতিফ জানান, বিষয়টি আমি পরে জানাব।

সৈয়দ আমানত আলী/এমআরএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।