‘দূরপাল্লার বাস চলাচলের মাধ্যমে পরিবহন ব্যবস্থা সচল করুন’
স্বাস্থ্যবিধি মেনে মোট আসনের অর্ধেক যাত্রী নিয়ে দূরপাল্লার বাসসহ সব গণপরিবহন এবং স্বাভাবিক মালামাল নিয়ে পণ্য পরিবহন চলাচলের মধ্য দিয়ে পরিবহন ব্যবস্থা সচল করার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি ও সংসদ সদস্য শাজাহান খান।
শুক্রবার (১৪ মে) দুপুরে গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে পরিবহন শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তিনি এসব দাবি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘শ্রমিক ভাইদের বলব, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আজকের অবস্থান কর্মসূচি পালন করব। এর মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের কথা তুলে ধরছি, আমাদের পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে পরিবহন ব্যবস্থা সচল করার জন্য আহ্বান জানাই।’
পরিবহন শ্রমিকদের পাঁচ দফা দাবির প্রথমটি হলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে মোট আসনের অর্ধেক যাত্রী নিয়ে দূরপাল্লার পরিবহনসহ সব গণপরিবহন এবং স্বাভাবিক মালামাল নিয়ে পণ্য পরিবহন চলাচলের সুযোগ দিতে হবে।
শাজাহান খান বলেন, ‘ঈদ মানেই আনন্দ। কিন্তু এবারের ঈদ আমাদের শ্রমিকদের কাছে নিরানন্দ বয়ে এনেছে। শ্রমিকদের কোনো আনন্দ নেই। আজকে ১ মাস ৭ দিন গাড়ি চলাচল বন্ধ। দূরপাল্লার গাড়ি চলছে না। ১ মাস পর খুলে দেয়া হয়েছে আন্তঃজেলা পরিবহন। সেগুলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের, দূরপাল্লার পরিবহন শ্রমিকদের আয় নাই। যদি আয় করতো, তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে চলতো।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত বছর করোনার সময় সরকারের পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছিল। অনেক ধনাঢ্য ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল। দুর্ভাগ্য আমাদের, এবার তেমন কোনো সংস্থাও আমাদের কাছে আসে নাই, সরকারের পক্ষ থেকেও এখন পর্যন্ত কোনো সাহায্য পাওয়া যায় নাই। আমাদের দূরপাল্লার শ্রমিক ভাইয়েরা না খেয়ে আছেন। তাদের খোঁজখবর নেয়ারও কেউ নেই।’
শাজাহান খান আরও বলেন, ‘আমরা লকডাউনের বিরোধিতা করছি না। সরকারের যারা বিশেষজ্ঞ মহল, তাদের উদ্দেশে আমাদের বক্তব্য হলো, লকডাউন চলা অবস্থায় আমাদের পরিবহন শ্রমিকরা কীভাবে চলবেন, কীভাবে তারা খাদ্য সহায়তা পাবেন, কিছু আর্থিক অনুদান পাবেন, সে কথা বলা হয় নাই। এ পর্যন্ত একজন পরিবহন শ্রমিকও খাদ্য সহায়তা পায় নাই।’
তাদের বাকি দাবিগুলো হলো, লকডাউনের কারণে কর্মহীন সড়ক পরিবহন শ্রমিকদের আর্থিক অনুদান ও খাদ্য সহায়তা প্রদান করতে হবে। লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় মালিকদের যানবাহন মেরামত, কর্মচারী ও শ্রমিকদের বেতন-ভাতা ও ঈদ বোনাস ইত্যাদি দেয়ার জন্য নামমাত্র সুদে ও সহজ শর্তে ৫ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দিতে হবে। সারা দেশে বাস ও ট্রাক টার্মিনালগুলোতে পরিবহন শ্রমিকদের জন্য ঈদের আগে ও পরে ১০ টাকায় ওএমএসের চাল বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে। করোনার কারণে গণপরিবহন ব্যবসায় অর্থ বিনিয়োগের বিপরীতে সব ব্যাংক ঋণ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণ ও ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ঋণের সুদ মওকুফসহ কিস্তি আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করতে হবে এবং ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট নিয়ে ক্লাসিফাইড ঋণগুলো আনক্লাসিফাইড করতে হবে।
পিডি/এমএইচআর/এমএস