লোকারণ্য শহীদ মিনার ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান
‘করোনাকালের এই ঈদে আর যামু কই। ঢাকা শহরে বিনোদন কেন্দ্র বলতে এখন শহীদ মিনার আর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানই আছে। করোনার কারণে ছেলেমেয়েরা বলতে গেলে ঘরবন্দি। ওদের বায়না মেটাতে আসরের নামাজ পড়ে শহীদ মিনারে নিয়ে আসি। এসে দেখি মেলা বসে গেছে! চারদিকে মানুষ আর মানুষ। মানুষের ভিড় আর গরমে একটু প্রাণ ভরে নিশ্বাস নিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছুটে আসি। বাচ্চারা খোলা মাঠে দৌড়াচ্ছে আর আমি লেকের পাড়ে মুক্ত বাতাস খাচ্ছি।’
রোববার (১৬ মে) ঈদের তৃতীয় দিন বিকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের লেকের পাড়ে অসংখ্য মানুষের ভিড়ে বসে থাকা রাজধানীর জিগাতলার বাসিন্দা গার্মেন্টস ব্যবসায়ী মুখলেছুর রহমান এসব কথা বলছিলেন।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ঈদুল ফিতরের তৃতীয় দিন বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান লোকে লোকারণ্য। শহীদ মিনারে গিয়ে দেখা যায়, ছোটখাটো মেলা বসেছে। ছেলেমেয়েদের নিয়ে ঘুরতে আসা অভিভাবকরা বাচ্চাদের খুশি করতে বিভিন্ন খেলনা কিনে দিচ্ছেন। ঈদের নতুন জামাকাপড় পরিধান করে এখানে সেখানে বসে কিশোর-কিশোরীসহ বিভিন্ন বয়সীরা আড্ডা মারছেন।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্য ও রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি (সার্বক্ষণিক মাস্ক পরিধান, দূরত্ব বজায় রেখে চলা, জনসমাগম এড়িয়ে চলা, ঘন ঘন সাবান বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়া) মেনে চলার অনুরোধ জানালেও, শহীদ মিনারে দেখা যায়, সেখানে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। কিছু সংখ্যক মানুষ ছাড়া সিংহভাগের মুখে মাস্ক নেই। মাস্ক থাকলেও তা থুতনির নিচে নামিয়ে রাখা। জুতা পায়ে মূল বেদীসহ সর্বত্র ঘুরে বেড়াচ্ছে মানুষ। এত বিপুল জনসমাগমস্থলে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে মানুষকে সতর্ক করতে কাউকে দেখা যায় না।
সরেজমিনে পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, দোয়েল চত্বরের ঝর্ণার সামনে অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে ছবি তুলছেন। একটু সামনে এগিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়ে দেখা যায়, উদ্যানজুড়ে মানুষ আর মানুষ। খোলা মাঠ পেয়ে শিশুরা মহানন্দে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বয়স্করা লেকের পাড়ে বসে ও শিখা চিরন্তনের সামনের খোলা মাঠে বসে গল্পগুজব করছেন।
এখানেও অধিকাংশের মুখে মাস্ক নেই। পার্কের ভেতর বিভিন্ন ধরনের খেলনা, বেলুন ও বিভিন্ন খাবারের পসরা সাজানো দেখা যায়। তবে সন্ধ্যা নামার আগেই নিরাপত্তারক্ষীরা বাঁশি বাজিয়ে উদ্যান থেকে সবাইকে বেরিয়ে যেতে অনুরোধ করেনন। স্বল্প সময় হলেও খোলা উদ্যানে ভালো সময় কেটেছে বলে জানান আগতরা।
এমইউ/এমএসএইচ/জেআইএম