দ্বিতীয় দিনেই রাজধানীতে ‘ঢিলেঢালা’ লকডাউন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:৩৯ পিএম, ২৪ জুলাই ২০২১

অডিও শুনুন

করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে সরকারঘোষিত দেশব্যাপী দুই সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধের (লকডাউন) দ্বিতীয় দিন আজ (শনিবার)। এদিন রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে পুলিশের বেশকিছু তল্লাশি চৌকি থাকলেও বেশিরভাগ চৌকিতেই তেমন কড়াকড়ি ছিল না। কোনো কোনো এলাকায় লোকজনকে নির্বিঘ্নে ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে। কোথাও আবার অলি-গলির রেস্টুরেন্টে খাবার পরিবেশন করতেও দেখা গেছে।

এদিন সকাল থেকেই রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে গণপরিবহন না চললেও ব্যক্তিগত গাড়ি অবাধে চলতে দেখা গেছে।

jagonews24

সরেজমিনে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, ওয়ারী, মতিঝিল, লালবাগ, শাহবাগ, মালিবাগ, মগবাজার, ফার্মগেট, মোহাম্মদপুর, ধানমণ্ডি, শ্যামলী ও মিরপুর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রাজপথ ছিল রিকশার দখলে। প্রাইভেটকারের চলাচল গতকালের তুলনায় ছিল বেশি।

এদিন ফার্মগেট মোড়ে প্রায় আধাঘণ্টা দাঁড়িয়েও দেখা যায়নি পুলিশের চেকপোস্ট। সংসদ ভবন, তেজগাঁও ও কারওয়ান বাজার থেকে আসা গাড়িগুলোকে অবাধে চলতে দেখা গেছে।

jagonews24

ফার্মগেট মোড়ে দায়িত্বরত ট্রাফিকের সার্জেন্ট শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সকাল থেকে হঠাৎ হঠাৎ বৃষ্টির কারণে পুলিশ সদস্যরা রাস্তার পাশে সরে আসেন। বৃষ্টি কমে গেলে পুলিশের তৎপরতা শুরু হবে বলে দাবি করেন তিনি।’

বাংলামোটরেও একই দৃশ্য চোখে পড়ে। সেখানে পুলিশের কোনো সদস্যকে দেখা মেলেনি। অনেকটা অবাধেই চলতে দেখা যায় ব্যক্তিগত যানবাহন।

jagonews24

তবে রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও শাহবাগ এলাকায় বৃষ্টি উপেক্ষা করে পুলিশের চেকপোস্ট ছিল চোখে পড়ার মতো।

কারওয়ান বাজার মোড়ে বিভিন্ন বিভিন্ন দিক থেকে আসা গাড়িগুলো পুলিশের চেকপোস্টের মুখোমুখি হতে হয়। সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তারা গাড়ি থামিয়ে বাইরে বের হওয়ার কারণ জানতে চান। সদুত্তর না পেলে গাড়ির মালিককে গুনতে হয় জরিমানা।

jagonews24

শাহবাগে কথা হয় ফুড ডেলিভারিম্যান আব্দুল আলিমের সঙ্গে। ফুডপান্ডার অর্ডার নিয়ে যাচ্ছিলেন নয়া পল্টনে। তিনি জানান, আগে একটি কোম্পানির মার্কেটিংয়ে কাজ করতেন। করোনায় চাকরি যাওয়ায় এখন ডেলিভারিম্যানের কাজ করছেন। লকডাউন চলায় অর্ডার বেশি হচ্ছে। প্রথম দিকের চেয়ে রাস্তায় এখন চলাচল বেড়েছে। তবে অনেক মোড়েই চেকপোস্ট নেই বলে জানান তিনি।

রাজধানীর মতিঝিলের চেকপোস্টে পুলিশ যাত্রাবাড়ী থেকে আসা একটি প্রাইভেটকার থামায়। ভেতরের যাত্রী জানান, অসুস্থ মেয়েকে দেখতে ঢাকায় এসেছেন। কাগজপত্র চেক করে পুলিশ গাড়িটিকে ছেড়ে দেয়।

jagonews24

দুপুরে শাহবাগ পুলিশের চেকপোস্টে দেখা যায় মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার ও পিক-আপ ভ্যান থামিয়ে চালক ও যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে। উপযুক্ত কারণ দেখাতে না পারলে জরিমানা গুনতে হচ্ছে।

শাহবাগে দায়িত্বরত একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, গতকাল শুক্রবারের চাইতে গাড়ি চলাচল যেমন বেড়েছে তেমনই বেড়েছে ব্যক্তিগত গাড়ি। যারা বাইরে বের হচ্ছেন তারা বিভিন্ন অজুহাত দেখাচ্ছেন। জেল-জরিমানা করেও মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।

jagonews24

ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) ইফতেখায়রুল ইসলাম বলেন, ‘করোনার সংক্রমণরোধে দুই সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ নিশ্চিতে রাজধানীজুড়েই সক্রিয় রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। রাজধানীতে সরকারি বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে অকারণে ও নানা অজুহাতে ঘর থেকে বের হওয়া এবং লকডাউনেও প্রতিষ্ঠান খোলা রাখায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’

এদিকে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে দুই সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ নিশ্চিতে প্রথমদিন গতকাল শুক্রবার সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে বাইরে বের হয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) হাতে গ্রেফতার হন ৪০৩ জন। আর ২০৩ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করা হয় এক লাখ ২৭ হাজার ২৭০ টাকা। এছাড়া ট্রাফিক বিভাগ কর্তৃক ৪৪১টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলায় জরিমানা করা হয়েছে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা।

টিটি/এসএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।