শহীদ মিনার যেন করোনামুক্ত এলাকা!
কঠোর বিধিনিষেধের দ্বিতীয় দিন শনিবার (২৪ জুলাই) সন্ধ্যা আনুমানিক ৬টায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মূলবেদীসহ চৌহদ্দিতে বেশকিছু সংখ্যক নারী-পুরুষ ও শিশুর জটলা দেখা যায়। তাদের কেউ পরিবার-পরিজনসহ বসে খোশগল্প করছেন। কেউ আবার মোবাইলে সেলফি তুলছেন, কেউবা গিটার হাতে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
এর মধ্যে আবার একদল শিশুকে বেশ কয়েকটি সাইকেল নিয়ে চক্কর দিতে দেখা যায়। একজন আবার মোটরসাইকেল নিয়ে ওপরে উঠে কোনো এক বন্ধুর খোঁজ করছিলেন।
এ সময় উপস্থিত মানুষের মধ্যে কারও মুখে মাস্ক আছে কারও নেই। যারা পরেছেন তারা মাস্ক থুতনির নিচে নামিয়ে রেখেছেন।
সন্ধ্যা যত ঘনিয়ে আসছিল শহীদ মিনারে মানুষের ভিড় ততোই বাড়ছিল। রিকশা ও মোটরসাইকেল নিয়ে অনেককেই শহীদ মিনারের দিকে আসতে দেখা যায়। ফলে সেখানে মানুষের উপস্থিতি দেখে মনে হতে পারে যেন এটি করোনামুক্ত ঘোষিত এলাকা।
করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ ও মৃত্যুরোধে সরকারি নির্দেশনায় শুক্রবার (২৩ জুলাই) থেকে কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হয়েছে। চলবে ৫ জুলাই পর্যন্ত।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বিধিনিষেধ চলাকালে বিশেষ জরুরি কাজ ছাড়া ঘরের বাইরে বের হওয়া নিষেধ। জরুরি প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হলে স্বাস্থ্যবিধি (মুখে মাস্ক পরিধান করা, নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখা, জনসমাগমস্থলে না যাওয়া ও হাত সাবান দিয়ে ধৌত করা বা স্যানিটাইজ করা) মেনে চলার নির্দেশনা থাকলেও দ্বিতীয় দিনেই তা অমান্য হতে দেখা গেছে।
রাজধানীর লালবাগের খাজে দেওয়ানের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছেন শহীদ মিনারে।
আলাপকালে তিনি জানান, ঈদের দুদিন পশু কোরবানি নিয়ে ব্যস্ত থাকায় ছেলেমেয়ে নিয়ে কোথাও ঘুরতে যেতে পারেননি। লকডাউনে লোকজন কম হবে ভেবে হাঁটতে হাঁটতে শহীদ মিনারে এসেছেন। কিন্তু এখানে এসে দেখেন অনেক মানুষ। একটু বিশ্রাম নিয়ে তিনি চলে যাবেন বলে সামনে এগিয়ে যান।
বংশাল থেকে সাইকেল নিয়ে ঘুরতে এসেছেন আনুমানিক ১৬-১৭ বছরের কিশোর সাইফ আলী।
আলাপকালে সে জানায়, লকডাউনে বাসায় বসে থাকতে একদম ভালো লাগে না। তাই কয়েক বন্ধু মিলে সাইকেল নিয়ে ঘুরতে ঘুরতে এখানে এসেছে।
করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির প্রসঙ্গ তুলতেই ‘অই, চল বাসায় চলে যাই’ বলে দ্রুত শহীদ মিনার ত্যাগ করে সে।
এমইউ/জেডএইচ/এএসএম