করোনা নিয়ন্ত্রণে বলেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে
করোনা নিয়ন্ত্রণে আসছে বলেই স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর নবাব আব্দুল গণি রোডে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জুনিয়র কনসালটেন্ট (অ্যানেস্থেসিওলজি) পদে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের যোগদান ও ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে তিনি এ কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে আসায় স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন লকডাউন না থাকায় দেশের অর্থনীতি সচল হয়েছে। এখন আমাদের মূল কাজ করোনার টিকা নিশ্চিত করা। সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। এরই মধ্যে গণটিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শেষ হয়েছে। চলতি মাসে আরও দেড় কোটি ডোজ টিকা আসবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, করোনা মোকাবিলায় সরকার সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কম ছিল। রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় আইসিইউসহ সব ধরনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেউ বলতে পারবে না, চিকিৎসা বা অক্সিজেনের অভাবে কেউ মারা গেছেন।
জুনিয়র কনসালটেন্টদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ নির্দেশনায় এই জুনিয়র কনসালটেন্টদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এখন তারা সাধারণ মানুষকে চিকিৎসা দিয়ে তাদের সক্ষমতার পরিচয় দেবেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, পিএসসি মাত্র ৪১ দিনে এইনিয়োগ সম্পন্ন করেছে। এজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে অনেকে ঠিকমতো চিকিৎসা পাননি। কেউ কেউ অক্সিজেন পাননি। সামনে এই সংকট এলে তা মোকাবিলা করতে হবে।
‘সম্প্রতি রেকর্ডসংখ্যক চিকিৎসক, নার্স নিয়োগ দিয়েছি। এভাবে চিকিৎসায় এশিয়ার অন্যতম দেশ হবে বাংলাদেশ। এক সময় অন্যান্য দেশ থেকে এখানে মানুষ চিকিৎসা নিতে আসবে’, যোগ করেন সচিব।
স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব আলী নূর বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় প্রধানমন্ত্রী অনেক গুরুত্ব দিয়েছেন। এজন্য নতুন আরও চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দিয়েছেন।
তিনি বলেন, চিকিৎসককে রোগী ও তার স্বজনদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে। এভাবে চিকিৎসার মান বাড়াতে হবে। এটা নিশ্চিত হলে কেউ চিকিৎসা নিতে বিদেশে যাবেন না।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, করোনা বিশ্বের সবকিছু এলোমেলো করে দিয়েছে। ১৮৩ জন চিকিৎসক মারা গেছেন। তাদের পরিবারকে সহযোগিতা করতে ধাপে ধাপে কাজ করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বাকিদের দ্রুত সময়ের মধ্যে দিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, উপজেলা পর্যায়ের অনেক হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও যন্ত্র নেই। নানা সীমাবদ্ধতার কারণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তা নিশ্চিত করতে পারেনি। এখন তা পূরণের চেষ্টা করছি। এখন অ্যানেস্থেসিওলজিতে যারা নিয়োগ পেয়েছেন, তাদের তা সামলে নিয়ে কাজ করতে হবে। এ বিভাগের চিকিৎসকদের দায়িত্ব অনেক বেশি। একটু ভুলের কারণে অনেক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, অ্যানেস্থেসিওলজি বিভাগে চিকিৎসক নিয়োগে আগে এ ধরনের পরীক্ষা কখনো হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নির্দেশে এ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আশা করি, আগামী দিনে সেবার মান বাড়বে। তিনি চিকিৎসকদের নিজেদের দুর্বলতা দূর করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, করোনা দুটি জিনিস শিখিয়েছে। তা হলো অক্সিজেন ও অ্যানেস্থেসিওলজি। রোগীদের নিজ পরিবারের সদস্যদের মতো সেবা দিতে হবে। এতে রোগী তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবে।
অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের মহাসচিব এম আবদুল আজিজ, আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসম্পদবিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এমএমএ/এআরএ/জিকেএস