একই সময়ে আমিরাতগামী একাধিক ফ্লাইট, করোনা পরীক্ষায় বিড়ম্বনা

মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল
মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০২:০২ পিএম, ১৭ অক্টোবর ২০২১
ফাইল ছবি

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সংযুক্ত আরব আমিরাতগামী (ইউএই) প্রবাসীকর্মীসহ যাত্রীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। ইউএই সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রত্যেক যাত্রীকে ফ্লাইট ছাড়ার ছয় ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে স্থাপিত আরটি-পিসিআর ল্যাবরেটরিতে করোনার নমুনা পরীক্ষা করাতে হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে ১০টি ফ্লাইট সরাসরি ইউএই যাচ্ছে। এছাড়া সংখ্যায় কম হলেও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশ হয়ে ইউএই যাচ্ছে এমন ফ্লাইটও রয়েছে।

তবে একই সময়ে একাধিক ফ্লাইট থাকায় বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানিয়েছে, প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে ৭টা ৪০ মিনিটের মধ্যে চার থেকে পাঁচটি ফ্লাইট ইউএই যাচ্ছে। একই সময়ে একাধিক ফ্লাইটের যাত্রী থাকায় আরটি-পিসিআর ল্যাবরেটরির জন্য নির্ধারিত ছোট জায়গায় নমুনা দেওয়া ও রিপোর্ট সংগ্রহের জন্য শত শত যাত্রীর ভিড় লেগে থাকছে। ফলে প্রবাসী কর্মীসহ যাত্রীদের ভিড় সামলাতে স্বাস্থ্যবিভাগ তথা তাদের অনুমোদনপ্রাপ্ত করোনার নমুনা পরীক্ষার ছয়টি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্যবিভাগের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, একই সময়ে ইউএইগামী একাধিক ফ্লাইট শিডিউলের কারণে সুষ্ঠুভাবে কার্যক্রম পরিচালনায় কিছুটা ব্যাঘাত ঘটছে। বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে ১ নাম্বার টার্মিনাল সংলগ্ন যে স্থানটি ছয়টি প্রতিষ্ঠানের আরটি-পিসিআর ল্যাবরেটরির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় কম। ইউএইগামী যাত্রীরা ছয়-সাত ঘণ্টা আগে নমুনা পরীক্ষা করাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত হন। একই সময়ে ফ্লাইট হওয়ার কারণে শত শত প্রবাসী কর্মীর নমুনা পরীক্ষা ও রিপোর্ট প্রদান কার্যক্রম নির্বিঘ্নে পরিচালনা দুরূহ হয়ে পড়ে। ইউএইগামী ফ্লাইটের অধিকাংশ যাত্রী প্রবাসী কর্মী। রিপোর্ট পাওয়ার পরও বুঝতে না পেরে ফ্লাইটে না গিয়ে তারা আবার লাইনে দাঁড়িয়ে যান। ইউএই ফ্লাইট শিডিউল একই সময়ের বদলে একটু রি-শিডিউল করে দিলে ভালো হয় বলে জানান এসব কর্মকর্তা।

গতকাল (১৬ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ও কোভিড ইউনিট চিফ ডা. মো. ইউনুস স্বাক্ষরিত করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কিত প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, শাহজালাল বিমানব্ন্দরের করোনা ল্যাবে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় তিন হাজার ৬১ জনের নমুনা পরীক্ষায় চার জনের করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে বিমানবন্দরে ইউএইগামী যাত্রীদের যাত্রার ছয় ঘণ্টা আগে নমুনা পরীক্ষা শুরু করা হয়। ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত সর্বমোট ৩০ হাজার ৪০৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২১ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। অন্যান্যরা নেগেটিভ রিপোর্ট নিয়ে ইউএই গেছেন। ইউএইগামী যাত্রীদের সিংহভাগই (সম্প্রতি এক হিসাবে দেখা গেছে ৯৪ শতাংশ) প্রবাসী কর্মী। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় তথা সরকার তাদের বিনামূল্যে করোনার নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, ছয় ঘণ্টা আগে নমুনা পরীক্ষার জন্য যাত্রীরা বিমানবন্দরে আসায় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রবাসী কর্মীদের শুকনো খাবার বিনামূল্যে সরবরাহ করা হতো। গত দু/একদিন যাবৎ সেটি দেয়া হচ্ছে না।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কর্মরত সহকারী পরিচালক ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ বলেন, শুরুর দিকে কিছুটা সমস্যা থাকলেও বর্তমানে বিমানবন্দরে ইউএইগামী যাত্রীদের ফ্লাইট ছাড়ার ছয় ঘণ্টা আগে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার রিপোর্ট প্রদান করে পাঠানো হচ্ছে।

তবে একই সময়ে একাধিক ফ্লাইট শিডিউলের কারণে যাত্রীর চাপ সামলাতে কিছুটা সমস্যার কথা স্বীকার করে বিভিন্ন ফ্লাইটের শিডিউল একটু সময়ের ব্যবধানে হলে ভালো হতো বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এমইউ/ইএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।