রাজধানীর রাস্তায় যানজটের সেই পুরোনো চিত্র
শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা। রাজধানীর নিউমার্কেটের অদূরে মিরপুর রোডে রোগীবাহী একটি অ্যাম্বুলেন্স একটানা সাইরেন বাজিয়ে চলেছে। অ্যাম্বুলেন্সের সামনে বাস, প্রাইভেটকার, জিপ, কাভার্ডভ্যান, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল ও রিকশার যানজট লেগে আছে। অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার বাইরে বেরিয়ে এসে কর্তব্যরত ট্রাফিক কনস্টেবলকে বলছিলেন, মুমূর্ষু রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছে, কোনোভাবে পথ করে দেওয়া যায় কি না?
ড্রাইভারের কথা শুনে নির্বিকার কনস্টেবলের জবাব, ‘দেখেন না, সারা রাস্তা যানজট লেগে আছে! যানজট না ছাড়লে কীভাবে যাবেন?’
অদূরে ঢাকা কলেজের সামনে দুই মোটরসাইকেলচালককে নির্দিষ্ট লেন ছেড়ে অন্য লেনে আসায় তর্ক-বিতর্ক করতে দেখা যায়। রিকশায় বসে থাকা একজন বয়স্ক লোককে বলতে শোনা যায়, সবাই খালি আগে যেতে চায়।
এ দৃশ্যপট শুধু মিরপুর রোডের নয়, রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তাঘাটের। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যু কমে আসার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর রাস্তাঘাটে সেই পুরোনো যানজটের চিত্র ফিরে এসেছে। করোনাভীতি কাটিয়ে যান্ত্রিক নগরী ঢাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বাসিন্দারা কর্মব্যস্ত হয়ে পড়ায় নগরীতে যানজট আগের চেয়ে বহুলাংশে বেড়েছে। যানজটের কারণে নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে বিলম্ব হচ্ছে। যানজট কমাতে কোনো কোনো রাস্তায় নির্দিষ্ট সময়ের জন্য রিকশা চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হলেও খুব একটা সুফল মিলছে না।
রাজধানীর ধানমন্ডির বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন জানান, ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি একজন রোগীকে দেখার জন্য শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি বাসা থেকে বের হন। ছুটির দিন হওয়ায় তিনি ভেবেছিলেন খুব অল্প সময় পৌঁছাবেন। কিন্তু যানজটের কারণে দেড় ঘণ্টায় হাসপাতালে পৌঁছান।
একইদিন রাজধানীর মগবাজার থেকে কারওয়ান বাজারে বাজার করতে গিয়েছিলেন দেলোয়ার হোসেন। এফডিসির সামনে থেকে সোনারগাঁও হোটেলের সামনে পৌঁছাতে তার ৩০ মিনিট লেগে যায়।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, এই রাস্তাটিতে সারাক্ষণ যানজট লেগেই থাকে। কখনো ট্রেন যাতায়াত করলে সময় আরও বেশি লাগবে। ঢাকা শহরে চলাফেরা করাই এখন দায় হয়ে পড়েছে।
এমইউ/এমএইচআর/জিকেএস