‘প্রান্তিক কৃষকদের রক্ষায় বিশেষ পরিকল্পনা নিতে হবে’

দুর্বৃত্তদের কারণে সরকার কৃষির প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন আদিবাসী ও সংখ্যালঘু বিষয়ক সংসদীয় ককাসের (কোনো রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিশেষ কাজ সম্পাদনকারী গোষ্ঠী বা চক্র) আহ্বায়ক ফজলে হোসেন বাদশা।
তিনি বলেন, কৃষিকে গুরুত্ব সহকারে দেখা ও প্রান্তিক কৃষকদের রক্ষা করার ক্ষেত্রে সরকারের বিশেষ পরিকল্পনা নিতে হবে। তা না হলে আমরা প্রতিদিন রবি ও অভিনাথ মার্ডির (রাজশাহীতে সেচের পানি না পেয়ে আত্মহত্যাকারী আদিবাসী দুই কৃষক) গল্প শুনবো।
বুধবার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে আদিবাসী ও সংখ্যালঘু বিষয়ক সংসদীয় ককাস আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
বাদশা বলেন, আজকে দেশের বাইরে থেকে খাদ্য আমদানি করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে তাও পাওয়া যাবে না। আমাদের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার যে বাস্তবতা রয়েছে তা যদি আমরা কাজে না লাগাই, তাহলে খুবই সাংঘাতিক বিরূপ প্রতিক্রিয়া ঘটবে।
তিনি বলেন, আগে প্রতি বছর ৬ ইঞ্চি করে পানির স্তর নেমে যেতো। বর্তমানে এক ফুট করে প্রতি বছর পানির স্তর নেমে যাচ্ছে। এখন কমপক্ষে এক হাজার ৬০০ ফিট নিচে পানি পাওয়া যায়। বর্ষাকালেও ডিপ টিউবওয়েল (গভীর নলকূপ) দিয়ে সেচব্যবস্থা চালাতে হয়।
‘রাজশাহী ও রংপুর বরেন্দ্র প্রকল্পের আওতাভুক্ত এলাকা এখন মরুকরণের দিকে যাচ্ছে। ঠাকুরগাঁও থেকে রংপুরের দিকে যেতে দেখা যায়, শিল্প স্থাপনের জন্য শত শত একর জমি শিল্পপতিরা ক্রয় করে নিচ্ছেন। তাহলে কৃষকরা কোথায় যাবে? অথচ খাদ্যের সিংহভাগ আসে এই অঞ্চল থেকে।’
ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার বন্ধ করা দরকার জানিয়ে তিনি বলেন, শিল্পতে যে বিদ্যুৎ বিল দিতে হয় কৃষিতেও তাই দিতে হয়। পার্লামেন্টে অনেকবার উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প নামে ভূ-ওপরস্থ পানি দিয়ে নতুন করে উত্তরাঞ্চলে সেচ ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রস্তাব এনেছি। সেটিকে কেউ গ্রাহ্যের মধ্যেই আনতে চায় না। বর্ষাকালে নদী থেকে খাল-বিলে ও জলাশয়ে যে পানি আসে তা সংরক্ষণ করে এর প্রকৃত ব্যবহার হওয়া দরকার। দুজন কৃষক প্রাণ দিল। এমন অনেকেই দিচ্ছে, যা আমরা জানি না।
মতবিনিময় সভায় মুখ্য আলোচনা পেশ করেন ড. মেসবাহ কামাল। এছাড়াও নির্ধারিত আলোচকের বক্তব্য দেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, প্রথম আলোর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হাসান, সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
এএএম/এমপি/এএসএম