‘বাজেটে পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব বেআইনি ও অনৈতিক’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৩৩ পিএম, ১১ জুন ২০২২

প্রস্তাবিত বাজেটে বিত্তবান, ব্যবসায়ী, মুনাফাভোগী ও অর্থপাচারকারীদের স্বার্থ দেখা হয়েছে। কর পরিশোধের মাধ্যমে পাচার করা টাকা ফেরত আনার প্রস্তাব অনৈতিক ও বেআইনি। মুদ্রা পাচারকারীদের অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার যে সুযোগ দেওয়া হয়েছে, তা কোনোভাবেই সমর্থন করা যায় না। অর্থমন্ত্রীকে এই বাস্তবতা অনুধাবন করতে হবে।

শনিবার (১১ জুন) এফডিসিতে শ্রীলঙ্কার সংকট উত্তরণে করণীয় নিয়ে এক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।

তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতিতে অভিবাসীদের অবদান বিবেচনায় তাদের প্রতি আরও সদয় হতে হবে। রেমিট্যান্সের ওপর ২.৫ শতাংশ প্রণোদনার সুযোগে মানি লন্ডারিংয়ের সঙ্গে জড়িতরা উপকৃত হচ্ছে।

সাবেক এই গভর্নর বলেন, বাংলাদেশে মেগা প্রকল্পের জন্য যে ঋণ নেওয়া হয়েছে আগামী তিন বা চার বছর পর কয়েকটি প্রকল্পের ঋণ পরিশোধ করতে হবে। এই ঋণ পরিশোধে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি না থাকলে সামগ্রিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। বাংলাদেশের জনগণ শ্রীলঙ্কার মতো এই দেশে কোনো শ্বেতহস্তী প্রকল্প হতে দেবে না। আমাদের অবস্থা কখনো শ্রীলঙ্কার মতো হবে না। বাংলাদেশে অর্থনীতি স্থিতিশীল রাখার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক নেতৃত্ব তা পারেনি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, এবারের বাজেটে পাচার করা অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে যে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে তা অপব্যবহার যাতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পাচারের অর্থ মানুষের হক উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী যে মন্তব্য করেছেন তাতে দুষ্কৃতিকারীরা যাতে প্রশয় না পায় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এত সামান্য করের মাধ্যমে পাচারকারীদের অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার সুযোগ সৎ করদাতাদের নিরোৎসাহিত করবে। এবারের বাজেটে পাচার করা অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার প্রস্তাবটি পুনর্বিবেচনার দাবি জানান তিনি।

তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কার মতো রাতারাতি মেগা প্রকল্পের পেছনে ছুটতে গিয়ে আমরা যেনো হোঁচট না খাই সেদিকে সজাগ থাকতে হবে। আমরা যেসব প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছি শ্রীলঙ্কার মতো তার রিটার্ন সঠিক সময়ে না আসলে অর্থনীতিতে বিপর্যয় আসতে পারে। প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় যাতে অকারণে বেড়ে না যায় সেদিকে নজর দিতে হবে।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক ড. শাকিলা জেসমিন, সাংবাদিক উম্মান নাহার আজমী ও সাংবাদিক আরিফুর রহমান। ছায়া সংসদে মক স্পিকার হিসেবে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

প্রতিযোগিতায় শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়কে পরাজিত করে স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। ইউনাইটেড কর্মাশিয়াল ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলের মাঝে ট্রফি ও সনদপত্র বিতরণ করা হয়।

আরএসএম/এমআরএম/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।