দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব

কিশোর গ্যাং ‘কাইচ্চাবাড়ি গ্রুপের’ মারধরে লিখন নিহত

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:০০ পিএম, ১২ অক্টোবর ২০২২

‘আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ‘গোচারটেক ভাই বেরাদার গ্যাং’ গ্রুপের কয়েকজন সদস্য ‘কাইচ্চাবাড়ি গ্যাংয়ের’ এক সদস্যকে মারধর করে। বিষয়টি কাইচ্চাবাড়ি কিশোর গ্যাং লিডার রনিকে জানালে রনি ও তার গ্রুপ প্রতিশোধ নিতে লোহার রড ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ‘গোচারটেক ভাই বেরাদার গ্যাং’ গ্রুপের মেহেদীর সঙ্গে লিখনকেও এলোপাতাড়ি মারধর করে। এক পর‌্যায়ে লোহার রডের আঘাতে লিখন মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে তাকে উদ্ধার করে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন গত ৫ জুলাই সকালে মারা যায় লিখন।’

বুধবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক ডিআইজি মোজাম্মেল হক।

ডিআইজি মোজাম্মেল হক বলেন, আশুলিয়া থানার পলাশবাড়ি এলাকায় আধিপত্য বিস্তার এবং মাদকের অপব্যবহারসহ নানা অপরাধে জড়িত কিশোর গ্যাং কালচারের প্রবণতা রয়েছে। সেখানে ‘কাইচ্চাবাড়ি গ্যাং’ ও ‘গোচারটেক ভাই বেরাদার গ্যাং’ নামে দুটি কিশোর গ্যাং রয়েছে। যারা এলাকায় ইভটিজিং, ছোটখাট ছিনতাই, মাদক সেবন ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সার্বক্ষণিক দাঙ্গা হাঙ্গামার সৃষ্টি করছে।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, কিছুদিন আগে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ‘গোচারটেক ভাই বেরাদার গ্যাং’ গ্রুপের কয়েকজন সদস্য ‘কাইচ্চাবাড়ি গ্যাংয়ের’ সদস্য আদরকে মারধর করে। বিষয়টি আদর গ্রুপ লিডার রনিকে জানালে রনি ও তার গ্রুপ প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত ৪ জুলাই সন্ধ্যার দিকে আশুলিয়া পলাশবাড়ি গোচারটেক ইস্টার্ন হাউজিং মাঠের পাশে লোহার রড ও ধারালো দেশীয় অস্ত্রসহ অবস্থান করে তারা। এ সময় ভিকটিম ‘গোচারটেক ভাই বেরাদার গ্যাং’ মেহেদীকে ঘটনাস্থলের পাশ দিয়ে যেতে দেখে রনি ও তার গ্রুপ তাকে বেদম মারধর করে। ঘটনাস্থলের একটু দূরে লিখন মাঠে বসে মোবাইল ব্যবহার করছিল। এসময় তার বন্ধু মেহেদীকে মারধর করতে দেখে এগিয়ে এলে লিখনকেও মারধর করে তারা।

Rab1

আরও পড়ুন>> কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় লিখন নিহতের ঘটনায় মূলহোতাসহ গ্রেফতার ৪

একপর‌্যায়ে লোহার রডের আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে লিখন। অবস্থা বেগতিক দেখে হামলাকারীরা লিখন ও মেহেদীকে ফেলে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয়রা আহতাবস্থায় লিখনকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ও মেহেদীকে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। আহত মেহেদী চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠলেও গুরুতর আহত লিখন গত ৫ জুলাই সকালে চিকিৎসাধীন মারা যায়।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় নিহতের চাচা শরীফুল ইসলাম বাবু বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় ‘কাইচ্চাবাড়ি গ্যাংয়ের’ রনি ও এনায়েতসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এরপর র‌্যাব থেকে ছায়া-তদন্ত শুরু করে ও জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়। ঘটনার পর থেকেই রনিসহ অন্যান্য আসামিরা দিনাজপুর, রংপুর, পটুয়াখালী, বরিশাল, ঝালকাঠি ও গাজীপুরে আত্মগোপনে চলে যায়। এসময় তারা কোনো মোবাইল ফোন ব্যবহার করেনি। একপর‌্যায়ে তাদের টাকা-পয়সা শেষ হয়ে গেলে টাকা-পয়সা সংগ্রহের জন্য গোপনে আশুলিয়া এলাকায় এলে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) রাতে আশুলিয়া থানার বিভিন্ন এলাকায় সাড়াশি অভিযান চালিয়ে গ্রুপ লিডার রনিসহ (১৯) তার তিন সহযোগী রাকিব (১৮), জিলানী (১৮) ও মো. সোহাগকে (১৯) গ্রেফতার করা হয়।

টিটি/এমএএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।