ওসমানী মেডিকেল কলেজে যানবাহন প্রবেশে বাধা : বিপাকে রোগীর স্বজনরা
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সকল ধরনের যানবাহন প্রবেশে বাধা দিচ্ছেন পরিবহন শ্রমিকরা। এমনকি রোগী ও মরদেহবাহী গাড়ি চলাচলেও বাধা দেয়া হচ্ছে। আর এতে করে বিপাকে পড়তে হচ্ছে মরদেহ ও রোগীর স্বজনদের।
শনিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের বারন্দায় অন্তত তিনটি মরদেহ নিয়ে অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে স্বজনদের। এই সময় রোগীদের কোলে করে হাসপাতালে নিয়ে আসতেও দেখা যায়।
জানা যায়, সম্প্রতি সিলেট ওসমানী হাসপাতাল চত্বরে মাইক্রোবাস (অ্যাম্বুলেন্স) পার্কিং নিষিদ্ধ করে কর্তৃপক্ষ। এর প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দেয় মাইক্রোবাস (অ্যাম্বুলেন্স) শ্রমিক ইউনিয়ন মেডিকেল কলেজ শাখা। শনিবার সকাল ৬টা থেকে এ ধর্মঘট শুরু হয়। ধর্মঘটের কারণে ওসমানী হাসপাতালে সব ধরনের যানবাহন প্রবেশ ও বাহির হতে বাধা দিচ্ছে শ্রমিকরা। এর ফলে সকাল থেকে দুর্ভোগে পড়েন রোগীর স্বজনরা।
শুক্রবার বিকেলে জামালগঞ্জ উপজেলার খিদিরপুর গ্রাম থেকে ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি হন সুনাই মিয়া। শনিবার সকাল ১১টায় তিনি মারা যান। তবে দুপুর ২টা পর্যন্ত হাসপাতালের জরুরি বিভাগের বাইরে মরদেহ নিয়ে অপেক্ষা করতে দেখা যায় স্বজনদের। পরিবহনের অভাবে মরদেহ নিয়ে যেতে পারছেন না তারা।
সুনাই মিয়ার ছেলের বৌ চম্পা বেগম জাগো নিউজকে জানান, হাসপাতালের ভেতরে পরিবহন শ্রমিকরা গাড়ি চলাচল করতে না দেয়ার কারণে বাড়িতে যেতে পারছি না।
এ বিষয়ে মাইক্রোবাস (অ্যাম্বুলেন্স) শ্রমিক ইউনিয়ন মেডিকেল কলেজ শাখার সভাপতি আকমল হোসেন লুকু বলেন, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মেডিকেলের ভেতর থেকে মাইক্রোবাস (অ্যাম্বুলেন্স) পার্কিং বাতিল করে। এতে মরদেহ ও রোগী বহনকারী কোনো মাইক্রোবাস (অ্যাম্বুলেন্স) মেডিকেলের ভেতর পাকিং করতে পারছে না।
তিনি আরো জানান, পাকিং বাতিলের প্রতিবাদে মাইক্রোবাস শ্রমিকরা সকাল থেকে অনিদিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করছে। হাসপাতালের ভেতরে মাইক্রোবাস (অ্যাম্বুলেন্স) পার্কি করতে না দেয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে।
ওসমানী হাসপাতালে দ্বায়িত্বরত পুলিশের এএসআই ইব্রাহীম খলিল জানান, হাসপাতালের অভ্যন্তরে এলোমেলোভাবে গাড়ি রাখার কারণে ইমার্জেন্সি রোগীর জীবন বিপন্ন হতে পারে। গাড়ি রোগী নিয়ে হাসপাতালে ঢুকবে, রোগীকে নামিয়ে দিয়ে হাসপাতালের বাইরে গাড়ি অবস্থান করবে।
হাসপাতালের পরিচালক মহোদয়ের নির্দেশে এলোমেলো পার্কিং রোধে এই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবহিত আছেন বলেও জানান তিনি।
হাসপাতালের টলিতে মরদেহ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন সুনামগঞ্জের অনুকুল রায়। অনুকুল রায় জানান, ভোরে আমার মা মারা গেছেন। মার মরদেহ বাড়ি নেয়ার জন্য কোনো অ্যাম্বুলেন্স বা মাইক্রবাস পাচ্ছি না। মাইক্রোবাস ধর্মঘট থাকায় মরদেহ নিয়ে বিপাকে পড়েছি।
জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাসনাত জানান, সকাল থেকে আমরা সব ধরনের অ্যাম্বুলেন্স ও মাইক্রোতে রোগী পরিবহন বন্ধ রেখেছি। শনিবারের মধ্যে বিষয়টির সুরাহা না হলে আগামীকাল রোববার থেকে বৃহত্তর কর্মসূচি দেয়া হবে।
ছামির মাহমুদ/এআরএ/আরআইপি