‘পুষ্টিহীনতা দূর করতে জিংক সমৃদ্ধ ধানের আবাদ বাড়াতে হবে’

বায়োফর্টিফাইড জিংক রাইসের মাধ্যমে দেশের মানুষের জিংকের ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেছেন, পুষ্টিহীনতা দূর করতে জিংক সমৃদ্ধ ধানের আবাদ বাড়াতে হবে।
মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পর্যটন কনফারেন্স হলে ‘বায়োফর্টিফাইড জিংক রাইস অ্যাওয়ার্ড সিরিমনি ২০২২’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের অধিকাংশ মানুষ বায়োফর্টিফাইড জিংক সমৃদ্ধ চাল সম্পর্কে বা এর গুণাগুণ সম্পর্কে মোটেই সচেতন নন। তারা এই জিংক সমৃদ্ধ চাল বা ধান সম্পর্কে জানেনও না। জিংক সমৃদ্ধ চাল ভোক্তাদের আকৃষ্ট করতে গণমাধ্যমকে এগিয়ে আসতে হবে।
‘আজ-কাল আমরা রাসায়নিক ফর্মুলায় তৈরি করা জিংক খাচ্ছি। কিন্তু ভাতের মাধ্যমে যে এ উপাদানটি আমরা প্রাকৃতিকভাবে পেতে পারি তা জানি না। এই বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরি করা দরকার।’
তিনি বলেন, দেশের মিলাররা ভোক্তাদের চাহিদা অনুযায়ী চিকন চাল তৈরি করে বাজারে সরবরাহ করে থাকে। কারণ গ্রাহকরা জিংক চালের জন্য উৎসাহ দেখান না এবং কৃষকরাও এই ধান চাষ করতে আগ্রহী হন না। কারণ জিংক সমৃদ্ধ ধানের চাল একটু মোটা হয়ে থাকে। গ্রাহক বা ভোক্তা চিকন আর চকচকে চাল পছন্দ করে।
সাধন চন্দ্র বলেন, সাধারণ চালেও পুষ্টি থাকে তবে চাল চিকন করতে গিয়ে পুষ্টির অংশ ছেঁটে ফেলা হচ্ছে। সারাদেশে বছরে চার কোটি টন ধান সংকট হয়। মিলাররা বলেন- চাল চিকন করতে গিয়ে চার থেকে পাঁচ শতাংশ হাওয়া হয়ে যায়। সেই হিসাবে বছরে ১৬ লাখ টন চাল হাওয়া হয়ে যায় বা নষ্ট হয়ে যায়। এটা না করলে বিদেশ থেকে হয়তো চাল আমদানি করতে হতো না।
মন্ত্রী বলেন, দেশে খাদ্য ঘাটতি হবে না, দুর্ভিক্ষও হবে না। অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমরা সচেতন আছি, দেশে পর্যাপ্ত ধান চালের মজুত রয়েছে। কেউ অবৈধ মজুত করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইসমাইল হেসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাখাওয়াত হোসেন, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো. সাহজাহান কবীর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বেনজির আহম্মদ, হারভেস্টপ্লাসের কান্ট্রি ডিরেক্টর এ কে এম খায়রুল বাশার, খাদ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইম্প্রুভড নিউট্রেশনের (গেইন) কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. রুদাবা খন্দকার, পোর্টফলিও লিড ড. আশেক মাহফুজ, মিলার প্রতিনিধি মোতাহার হোসেন ও কৃষক প্রতিনিধি আইয়ুব নবী বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে বায়োফর্টিফাইড জিংক রাইস উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ ও বাজারজাতকরণে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১১ জন কৃষক, তিনজন রাইস মিলার ও ১০জন খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাকে অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। গেইন ও হারভেস্টপ্লাসের সহযোগিতায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে খাদ্য অধিদপ্তর।
এনএইচ/আরএডি/এমএস