ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার
উদ্ধারকাজ দেখে তুরস্কের বাসিন্দারা আমাদের বুকে জড়িয়ে ধরেন
তুরস্কে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর দেশটিতে হতাহতদের উদ্ধারকাজে অংশ নেয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের ৬০ সদস্যের উদ্ধারকারী দল। তুরস্কে উদ্ধারকাজ শেষ করে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশি উদ্ধারকারী দল। দেশে ফিরে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দলের টিম লিডার ঢাকা বিভাগের উপ-পরিচালক (ডিডি) দিনমনি শর্মা তার অভিজ্ঞতার কথা ব্যক্ত করেছেন।
তিনি বলেন, আমাদের কাজের ধরন দেখে তুরস্কের বাসিন্দা সবসময় বলেছিলেন আমরা তাদের বন্ধু নয়, আমরা তাদের ভাই। তারা সালাম দিয়ে বাংলাদেশ বাংলাদেশ বলে স্লোগান দিচ্ছিলেন। আমাদের কাজের ডেডিকেশন দেখে তারা আমাদের বুকে জড়িয়ে ধরেন। আমাদের মিশন পুরোপুরি সফল হয়েছে।
আরও পড়ুন: একদিনে পাঁচ মরদেহ উদ্ধার করলো সেনাবাহিনীর বিশেষ উদ্ধারকারী দল
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন দিনমনি শর্মা। তুরস্কে ভূমিকম্পে উদ্ধারকাজ শেষে ফায়ার সার্ভিস প্রতিনিধি দলের দেশে ফেরা নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
দিনমনি শর্মা বলেন, উদ্ধার অভিযানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ জন, সেনাবাহিনীর মেডিকেল টিমের ১০ জন, ফায়ার সার্ভিসের ১২ জনসহ মোট ৪৬ জন অংশ নেন। আমাদের জন্য বিদেশে কাজ করার অভিজ্ঞতা একেবারেই নতুন। সেখানে কাজ করা অনেক কঠিন চ্যালেঞ্জ ছিল আমাদের জন্য। সেখানে রানা প্লাজার মতো শত শত ভবন ধসে পড়ে।

আরও পড়ুন: তুরস্ক সরকারের অনুরোধে ৫ দিন বেশি উদ্ধারকাজ চালায় বাংলাদেশি দল
ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, আমরা আদিয়ামান শহরে কাজ করেছি, ওই শহরটি অনেক পরিকল্পিত। তারপরও সব ভবন ধংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। যে দুই-একটি ভবন এখনো দাঁড়িয়ে আছে সেসবেও ফাটল ধরেছে।
তিনি বলেন, তুরস্কের দুই প্রদেশে ১১টি ভবনে উদ্ধার অভিযান চালিয়েছি আমরা। যেখানে কাজ করেছি সফল হয়েছি। যেখানে হাত দিয়েছি মৃত-জীবিত ভিকটিম উদ্ধার করতে পেরেছি। ২২ জনের মরদেহ ও একজনকে জীবিত উদ্ধার করেছি আমরা।
তুরস্কে ফায়ার সার্ভিস উদ্ধারকারী দলের টিম লিডার আরও বলেন, উদ্ধার অভিযানে যাওয়ার পর কিছুক্ষণ পরপর আফটার শক (মৃদ ভূমিকম্পন) হচ্ছিল। প্রতিদিন-প্রতিরাত আমাদের কষ্ট করে থাকতে হয়েছে সেখানে। এমনকি আমরা দুই তিন কিলোমিটার দূরে দূরে যন্ত্রপাতি নিয়ে হেঁটে গিয়েছি।
আরও পড়ুন: তুরস্ক থেকে দেশে ফিরলো বাংলাদেশি উদ্ধারকারী দল
তিনি বলেন, তুরস্কে ৪০টির মতো দেশ উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়। তারা উদ্ধার অভিযান শেষ করে ফিরে গেলেও একমাত্র বাংলাদেশ দলকে সে দেশের সরকার নির্ধারিত দিনের চেয়েও ৫ দিন বেশি রাখার জন্য অনুরোধ করে। আমাদের এ অভিজ্ঞতার ফলে ভবিষ্যতে যে কোনো দেশে সক্ষমতা নিয়ে পাশে দাঁড়াতে পারবো। উদ্ধার অভিযান চালাতে পারবো। এ অভিজ্ঞতা বাংলাদেশসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যবহার করতে পারবো।
টিটি/কেএসআর/জিকেএস