বাংলাদেশ-ইইউ বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার

বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলস সফরের দ্বিতীয় দিনে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এসময় বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলকে নিয়ে তিনি ইউরোপিয়ান কমিশনের ডিরেক্টরেট জেনারেল ফর ট্রেড, ডিরেক্টরেট জেনারেল ফর এমপ্লয়মন্টে, স্যোশাল অ্যাফেয়ার্স ও ইনক্লুশনের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠকে বাণিজ্য ও শ্রম সংক্রান্ত আলোচনা হয়। এসময় বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা ইইউকে এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জন সম্পর্কে অবহিত করেন। এসময় ইইউ বাংলাদেশমে সহযোগিতা অব্যাহত ও জোরদারের আগ্রহ পুনর্ব্যক্ত করে।
ডিরেক্টরেট জেনারেল ফর এমপ্লয়মেন্ট জুস্ট কোর্তে উভয়পক্ষের মধ্যে পারস্পরিক ইতিবাচক সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন বাংলাদেশকে ক্রমবর্ধমান গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করে। বৈঠকে বাংলাদেশের শ্রমখাতে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের অবস্থাও তুলে ধরেন তিনি।
এ বিষয়ে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এ সময় কারখানার নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হয়। বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা, সবুজ কারখানাতে টেকসই উৎপাদন কৌশল, কারখানা পরিদর্শন, প্রযুক্তির ব্যবহার, আধুনিক মেশিনারির ব্যবহার ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতির বিষয়গুলো সম্পর্কে জুস্ট কোর্তেকে অবহিত করেন।
ডিরেক্টরেট জেনারেল ট্রেডের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে খসড়া জিএসপি লেজিসলেশন ওপর ইইউ’র চলমান নেগোশিয়েশন ও এভরিথিং বাট আর্মস বাণিজ্য সুবিধা থেকে জিএসপি প্লাস-এ বাংলাদেশের উত্তরণের বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এ সময় ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল ফর ট্রেড মারিয়া মার্টিন প্র্যাটের নেতৃত্বে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশকে বিভিন্ন সংস্কার অব্যাহত রাখতে উৎসাহিত করে এবং আন্তর্জাতিক শ্রম মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য বিধানের ওপর গুরুত্বারোপ করে।
বৈশ্বিক অর্থনীতিতে চলমান বাহ্যিক অস্থিরতা, খাদ্য ও জ্বালানি সংকট এবং আন্তর্জাতিক আর্থিকবাজারে অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের পর আরও ছয় বছরের জন্য ইন্টারন্যাশনার সাপোর্ট মেজারস (আইএসএম) অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানান।
স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের পর একই সময়ের জন্য ইন্টারন্যাশনাল সাপোর্ট মেজারস (আইএসএম) অব্যাহত রাখার জন্য এলডিসি গ্রুপের সাবমিশনের ক্ষেত্রে ডব্লিউটিওর নেগোশিয়েশনে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের জোরালো সমর্থনের জন্যও অনুরোধ করেন।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আলোচনাধীন নতুন জিএসপিতে বাংলাদেশের বাণিজ্য স্বার্থ, বিশেষ করে পোশাক খাতের সুরক্ষারও অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল। তারা কোম্পানি ও ব্র্যান্ডগুলোর পক্ষ থেকে ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ এবং দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক আচরণের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রাসঙ্গিক কোম্পানিগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিতকল্পে করপোরেট সাসটেইনেবিলিটি ডিউ ডিলিজেন্সের আওতায় একটি মেকানিজম তৈরিরও অনুরোধ করেন।
সফরের দ্বিতীয় দিন বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ইউরোপিয়ান কমিশনের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ইইউ ট্রেড কমিশনার ভালদিস ডোমব্রোভস্কিসের হেড অব ক্যাবিনেট মাইকেল হেগারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের সঙ্গে ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বেলজিয়াম ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাহবুব হাসান সালেহ, বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্টের (বিল্ড) সভাপতি নিহাদ কবির, বাংলাদেশ এমপ্লোয়ার্স ফেডারেশনের মহাসচিব ফারুক আহমেদ ও ব্রাসেলসে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা।
এএএইচ/এএসএম