হাতিরঝিল ভরাট ও পান্থকুঞ্জ পার্ক ধ্বংসের আয়োজন বন্ধের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:৩৬ পিএম, ১৩ মে ২০২৩

হাতিরঝিল ভরাট ও পান্থকুঞ্জ পার্ক ধ্বংসের আয়োজন বন্ধের দাবি জানিয়েছে ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি)। শনিবার (১৩ মে) হাতিরঝিল, পান্থকুঞ্জ পার্ক এবং সংলগ্ন এলাকার ওপর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পরিকল্পনাগত প্রভাব: আইপিডির পর্যবেক্ষণ শীর্ষক অনলাইন অনুষ্ঠানে এ দাবি জানায় আইপিডি।

রাজধানীর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প শুরু থেকেই অব্যবস্থাপনা ও সমন্বয়হীনতার মধ্য দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে জানিয়ে আইপিডি জানায়, এ কাজ জনদূর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে এ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের আইন, পরিকল্পনা ও যথাযথ পদ্ধতির তোয়াক্কা না করে হাতিরঝিলের জলাধার ভরাটের মাধ্যমে পরিবেশ ধ্বংস করেছে। কোনো ধরনের পরিকল্পনাগত প্রভাব বিশ্লেষণ ছাড়াই নতুন করে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের জন্য পলাশি পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা হাতিরঝিল প্রকল্পের সার্বিক লক্ষ্য ও উপযোগিতাকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করবে।

এ প্রক্রিয়া না থামানো গেলে পান্থকুঞ্জ পার্ক নষ্ট করবার পাশাপাশি পলাশি পর্যন্ত বিদ্যমান রাস্তার উপযোগিতাও নষ্ট হবে এবং এ এলাকার মানুষজনের জীবনযাত্রা ব্যাহত হবে।

jagonews24

অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধে আইপিডির পক্ষ থেকে নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ‘রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে আলোচনা ও সমন্বয় না করেই এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন র্যাম্প নির্মাণ ও সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। কোনো ধরনের পরিকল্পনাগত প্রভাব বিশ্লেষণ ছাড়াই নতুন করে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের যেই এক্সটেনশন রাস্তা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা হাতিরঝিল প্রকল্পকে ধ্বংস করবে। হাতিরঝিলে প্রস্তাবিত ৪১টি পিলার প্রকল্প এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, জলাধারের পানিপ্রবাহ ও সার্বিক উপযোগিতা ধ্বংস করবে। জলাধার ভরাটের উদ্যোগ জলাধার সংরক্ষণ আইন ও বিভিন্ন পরিকল্পনার সুস্পষ্ট লংঘন। পৃথিবীর উন্নত ও আধুনিক শহরগুলো নগর এলাকায় ফ্লাইওভারকেন্দ্রীক পরিবহন সমস্যা সমাধানের কৌশল থেকে সরে এসেছে। অথচ আমরা এখন পরিবহন সমস্যার সমাধান কৌশল হিসেবে নগর এলাকায় ফ্লাইওভারকেন্দ্রীক পরিবহন সমাধান পরিকল্পনা করে যাচ্ছি, যা ব্যক্তিগত গাড়িকে উৎসাহিত করে। পরিবহন-ভূমি ব্যবহার এর পারস্পরিক সম্পর্কজনিত প্রভাব বিশ্লেষণ না করেই অধিকাংশ পরিবহন প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে।’

আইপিডির পক্ষ থেকে বলা হয়, পরিবহন অবকাঠামো সংশ্লিষ্ট প্রকল্পে জনগণের মতামত গ্রহণ, গণশুনানির আয়োজন করার প্রয়াস একেবারেই অনুপস্থিত। ট্রাফিক সমস্যার সমাধানে অর্থনৈতিক ও পরিকল্পনাগত প্রভাব যথাযথ বিবেচনা না নিয়েই মেগা প্রকল্পে অতি আগ্রহ।

এ ক্ষেত্রে দেশীয় স্বার্থান্বেষী মহলের পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগকারী রাষ্ট্র ও বিদেশি ঠিকাদারদের প্রভাবে অতি ব্যয়বহুল এবং কম উপযোগী পরিবহন অবকাঠামো প্রকল্প গ্রহণ, যা শ্বেতহস্তীতে পরিণত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা।

টপ ডাউন প্ল্যানিং বা ওপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া এ ধরনের পরিকল্পনা জনগণের প্রকৃত চাহিদাভিত্তিক সমাধানের সঙ্গে সম্পৃক্ততাবিহীন।

এমএমএ/এমআইএইচএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।