দুর্যোগে ঝুঁকিপূর্ণ উপকূলের উন্নয়নে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দের দাবি

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দুর্যোগের ঝুঁকিতে থাকা উপকূলের উন্নয়নে জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখার দাবি জানিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা বলেছেন, দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে একের পর এক দুর্যোগ আঘাত হানছে। ঝুঁকি মোকাবিলায় সরকার টেকসই বেড়িবাধ নির্মাণ, পানি সংকট নিরসন ও বনায়নসহ অন্যান্য প্রকল্প নিলেও বাজেটের অভাবে যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এ কারণে উপকূলের উন্নয়নে আগামী বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া জরুরি।
শনিবার (২০ মে) ‘ঘূর্ণিঝড় আম্পান থেকে মোখা: কেমন আছে উপকূল?’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় তারা এসব কথা বলেন।
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তিন বছর উপলক্ষে ওয়াটারকিপারস-বাংলাদেশ, লিডার্স, সমাজ কল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থা (স্কাস), ফেইথ ইন একশন, সচেতন সংস্থা এবং সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্রের সঞ্চালনায় সভায় মূল বক্তব্য উত্থাপন করেন লিডার্সের নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মণ্ডল।
আলোচনায় অংশ নেন শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী, ওয়াল্ড কনসার্নের কান্ট্রি ডিরেক্টর গ্লোরিয়াস গ্রাগরি দাস, এসকেএস ফাউণ্ডেশনের উপ-পরিচালক জোসেফ হালদার, স্ক্যান সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মুকুল, স্কাস চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমা, পশুর রিভার ওয়াটারকিপার মো. নূল আলম শেখ, স্বদেশ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মাধব চন্দ্র দত্ত, সাতীরার নাগরিক নেতা আবুল কালাম আজাদ, ফেইথ ইন একশনের জ্যাকব টিটো, কোস্টাল ভয়েসের কৌশিক দে বাপি, শিশু অধিকার ফোরামের সাফিয়া সামি, উন্নয়নকর্মী মো. আফতাবুজ্জামান, পরিবেশকর্মী এস এম ইকবাল হোসেন বিপ্লব, অধ্য জিএম আমিনুল ইসলাম, সচেতন সংস্থার রিয়াদ হোসেন প্রমুখ।
সভায় বক্তারা উপকূলকে দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণার দাবি জানিয়ে বলেন, একের পর এক ঘূর্ণিঝড় উপকূলে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। প্রতিনিয়ত এ দুর্যোগের ঝুঁকি বাড়ছে। বর্তমানে শতাধিক পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যে কারণে চরম ঝুঁকির মধ্যে দিন কাটাচ্ছে ওই অঞ্চলের জনগণ। এ ঝুঁকি মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি।
উপকূলীয় অঞ্চলের উন্নয়নে পৃথক বোর্ড গঠনের আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, ভৌগলিক অবস্থান, ঘন ঘন প্রাকৃতিক দূর্যোগ, দুর্বল অবকাঠামো, দারিদ্রতা, দীর্ঘমেয়াদী লবণাক্ততা, সংকটাপন্ন কৃষি প্রভৃতির কারণে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। স্বাভাবিক জোয়ারের পানিতেই ওই এলাকার বিস্তীর্ণ জনপদ প্লাবিত হয়। এইসংকট মোকাবিলায় ঝুঁকিতে থাকা বেড়িবাঁধগুলো দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নিতে হবে। স্থায়ী ও মজবুত বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে হবে। উপকূলীয় জনগণের নিরাপদ খাবার পানির টেকসই ও স্থায়ী সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
জানা গেছে, ২০২০ সালের ২০ মে সুপার সাইক্লোন আম্পান উপকূলে আঘাত হানে। এতে বেড়িবাঁধ ভেঙে উপকূলের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত ও জানমালের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়। তিন বছর পার হলেও তা কাটিয়ে উঠতে পারেনি উপকূলের মানুষ।
এইচএস/এমআইএইচএস/এএসএম