সরকার বাজেট বাস্তবায়ন করতে সক্ষম: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:০৪ পিএম, ০৪ জুন ২০২৩
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা/ছবি: সংগৃহীত

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার সদ্য ঘোষিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার জাতীয় বাজেট বাস্তবায়ন করতে সক্ষম বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, আমরা আমাদের সক্ষমতা আগেই দেখিয়েছি। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আকারের জাতীয় বাজেট দিয়েছি এবং আমরা তা বাস্তবায়ন করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আমরা এটি বাস্তবায়ন করতে পারি এবং আওয়ামী লীগ তা করতে পারে।

রোববার (৪ জুন) চিলাহাটি-ঢাকা-চিলাহাটি রুটে নতুন আন্তঃনগর ট্রেন ‘চিলাহাটি এক্সপ্রেস’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

আরও পড়ুন: বাজেট বাস্তবায়ন সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ

নীলফামারীর চিলাহাটি রেলস্টেশনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকেই (বাজেট নিয়ে) অনেক কথাই বলবে। কিন্তু আমরা আওয়ামী লীগ দেশ ও দেশের মানুষের মঙ্গল কীসে, তা জানি।

তিনি বলেন, ২০০৬ সালে বিএনপির শাসনামলে বাজেটের আকার ছিল মাত্র ৬১ হাজার কোটি টাকা। আমাদের সরকার গত ১ জুন ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে।

সমালোচনাকারীদের উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, একদল লোক দেশে পর্যাপ্ত সংখ্যক টেলিভিশন চ্যানেল থাকায় এর অপব্যবহার করছে। আওয়ামী সরকারই বেসরকারি খাতে সেগুলোর লাইসেন্স দিয়েছে। সরকার যা-ই করুক না কেন, তারা এসি রুমে বসে সরকারের সব কাজের সমালোচনা করে এবং সব কিছুতে ‘কিন্তু’ (ত্রুটি) খোঁজে। তারা দেশের জনগণকে হতাশ করতে এবং বিদেশিদের সামনে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কিছু কথাও ছড়িয়ে দেয়।

আরও পড়ুন: এটা গরিব মারার বাজেট: ফখরুল

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিন্তু তারা (নিন্দুকেরা) এ থেকে কী পায়- আমি জানি না। তারা সম্ভবত কিছু হাদিয়া (টাকা) সংগ্রহ করে থাকতে পারে- আমি আসলে বলতে পারবো না। তবে, তারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কথা বলে তৃপ্তি পায়।

সরকার বাজেট বাস্তবায়ন করতে সক্ষম: প্রধানমন্ত্রী

প্রতি বছর জাতীয় বাজেট দেওয়ার পর যারা বলেন সরকারের পক্ষে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না, তাদের সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, সরকার বাস্তবায়নের মাধ্যমে তা করে দেখায়।

আমি এ ধরনের লোকদের বলতে চাই- অনুগ্রহ করে মনে রাখবেন, আপনি গত বছর কী বলেছিলেন এবং আজকের বাংলাদেশ কোথা থেকে কোথায় এসে দাঁড়িয়েছে। অনুগ্রহ করে হিসাব করুন ও তুলনা করুন।

তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্বজুড়ে প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ অন্যান্য দেশ থেকে জ্বালানি তেল, গ্যাস, খাদ্যসামগ্রী, গম, চিনি ও অন্যান্য যা কিছু আমদানি করছে, তার মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি পরিবহন খরচ বাড়ানো হয়েছে, যা দেশের অর্থনীতির ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। তবে আমরা পরিস্থিতি সামাল দিতে কিছু উদ্যোগ নিয়েছি।

আরও পড়ুন: এ বাজেট সরকারের নির্বাচন পার করার কৌশল: জিএম কাদের

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ৮০০ যাত্রী ধারণক্ষমতাসম্পন্ন আন্তঃনগর ট্রেন ‘চিলাহাটি এক্সপ্রেস’ উদ্বোধন করেন, যা সপ্তাহে ছয়দিন এ রুটে চলাচল করবে।

সরকার বাজেট বাস্তবায়ন করতে সক্ষম: প্রধানমন্ত্রী

চিলাহাটি রেলওয়ে স্টেশন নীলফামারী জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থল। কারণ, হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রুটটি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আবারও রেল যোগাযোগ চালুর জন্য পুনরুজ্জীবিত করা হয়েছে। পণ্যবোঝাই ওয়াগনের পাশাপাশি এ রুটে চলছে আন্তঃদেশীয় মিতালী এক্সপ্রেস।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন রেলওয়ে সচিব ড. মো. হুমায়ন কবির। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।

আরও পড়ুন: আইএমএফের প্রেসক্রিপশনে বাজেট করিনি: অর্থমন্ত্রী

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ রেলওয়ের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টরি প্রদর্শিত হয়। ২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৪ বছরে মোট ৭৪০ কিলোমিটার নতুন রেলপথ স্থাপন করেছে, ২৮০ কিলোমিটার রেলপথকে ডুয়েলগেজে রূপান্তর করেছে এবং ১ হাজার ৩০৮ কিলোমিটার রেলপথ পুনঃস্থাপন করেছে।

এসময়ের মধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ের (বিআর) জন্য ৬২৩টি নতুন যাত্রীবাহী গাড়ি ও ৫১৬টি পণ্যবাহী ওয়াগনসহ মোট ১১৪টি লোকোমোটিভ সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া ১৩০টি রেলওয়ে স্টেশনের সিগন্যালিং সিস্টেম আধুনিকীকরণ করা হয়েছে। এখন যাত্রীদের চলাচলের জন্য ১৪২টি নতুন ট্রেন রয়েছে।

এমকেআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।