‘পরিবেশ দূষণ রোধে পলিথিন-প্লাস্টিক বর্জন জরুরি’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: ০৫:০০ এএম, ০৬ জুন ২০২৩

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. আমিনুর রহমান বলেছেন, চট্টগ্রামে প্রতিদিন গড়ে আড়াই হাজার টন বর্জ্য তৈরি হয়। এর মধ্যে প্রায় ৮ শতাংশ প্লাস্টিক বর্জ্য, যা আমাদের খাল-নালাগুলোতে গিয়ে পড়ে। বর্ষা এলেই তার প্রতিফলন দেখা যায়। পরিবেশ দূষণ রোধে প্লাস্টিক ও পলিথিনের ব্যবহার অবশ্যই বর্জন করতে হবে।

তিনি বলেন, প্লাস্টিক দূষণের বিষয়টি অত্যন্ত ভয়ঙ্কর। জরিপ বলছে, গত এক বছরে বঙ্গোপসাগরে ২৬ লাখ টন প্লাস্টিক বর্জ্য পাওয়া গেছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন আগামী ১ জুলাই থেকে প্লাস্টিকমুক্ত শহর গড়তে কাজ শুরু করবে। আমরা তার জন্য বসে না থেকে আজ থেকেই নিজেরা সচেতন হই।

সোমবার (৫ জুন) সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়নে চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তর আয়োজিত বিশ্ব পরিবেশ দিবসের আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘সবাই মিলে করি পণ, বন্ধ হবে প্লাস্টিক দূষণ, প্লাস্টিক দূষণ সমাধানে, সামিল হই সকলে’। অনুষ্ঠানে দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

আলোচনা সভায় বিভাগীয় কমিশনার বলেন, চট্টগ্রামের সবুজ অরণ্য হারিয়ে গেছে। বৈশ্বিক জলবায়ুর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি না হওয়া কিংবা শীতকালে শীত অনুভূত না হওয়া জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ। সুতরাং পরিবেশ দূষণ রোধ করতে না পারলে ভবিষ্যতে জলবায়ু হুমকির মুখে পড়তে হবে আমাদের। এজন্য পরিবেশ দূষণ রোধে নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসার পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বেশি বেশি করে গাছ লাগাতে হবে।

এতে সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের পরিচালক হিল্লোল বিশ্বাস। সিনিয়র কেমিস্ট জান্নাতুল ফেরদৌস ও জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালনক আফজারুল ইসলামের যৌথ সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. অলক পাল।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ফয়সল মাহমুদ, রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মাহফুজুর রহমান ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাকিব হাসান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম গবেষণাগার কার্যালয়ের পরিচালক নাসিম ফারহানা শিরীন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. অলক পাল বলেন, দেশে ১২ লাখ মানুষ সরাসরি প্লাস্টিক উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত। এর সঙ্গে প্রায় পাঁচ হাজার কোম্পানি প্লাস্টিক উৎপাদন করছে। যার প্রতিফলন আমাদের পরিবেশে দেখা যাচ্ছে। সারাদেশে প্রতিদিন তিন হাজার টন প্লাস্টিক ব্যবহার হচ্ছে। এর মধ্যে একবার ব্যবহার করা প্লাস্টিকের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। পানীয় সামগ্রী বিক্রয় প্রতিষ্ঠানগুলো সবচেয়ে বেশি প্লাস্টিক ব্যবহার করছে। এসবের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিতে পারে। তাছাড়া প্লাস্টিক উৎপাদনের কাঁচামাল আমদানির ওপর সরকার অতিরিক্ত কর আরোপ করতে পারেন।

ইকবাল হোসেন/এএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।