হাত-পা ও আঙুলের টুকরো উদ্ধার

জমি লিখে না দেওয়ায় স্ত্রী-সন্তান মিলে হাসানকে খুন করেন: পিবিআই

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: ০৫:০৬ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩
পিবিআইয়ের তদন্তকারী দল, ইনসেটে নিহত হাসান

গত ২১ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর ১২ নম্বর ঘাট এলাকায় পাওয়া যায় একটি ট্রলিব্যাগ (লাগেজ)। সেই ব্যাগের ভেতরে মেলে মানুষের হাত-পা ও উরুসহ আঙুলের আট টুকরো। মানব শরীরের এসব খণ্ডিত অংশ কার তার পরিচয় পাওয়া যাচ্ছিল না। এরপর এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনে মাঠে নামে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সবশেষ শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে নগরীর আকমল আলী রোডের খাল থেকে উদ্ধার করা হয় খণ্ডিত শরীরের বুকসহ কিছু অংশ। সেই সঙ্গে পরিচয় মেলে নিহত ব্যক্তির।

জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) অনুযায়ী তার নাম মো. হাসান। বয়স ৬১ বছর ছয় মাস। চট্টগ্রামের বাঁশখালীর কাথারিয়া ইউনিয়নের বড়ইতলী গ্রামের সাহাব মিয়ার ছেলে তিনি। হাসানের অস্থায়ী ঠিকানায় লেখা আছে, সিলেট সদরের সাধুরবাজার সংলগ্ন রেলওয়ে কলোনির জামাল মিয়ার গ্যারেজ।

আরও পড়ুন: মানুষ হত্যার অপরাধ কী হিসেবে গণ্য?

পিবিআই বলছে, জমিজমা লিখে না দেওয়ায় হাসানকে হত্যা করেন তার স্ত্রী ও সন্তানরা। এরই মধ্যে নিহতের স্ত্রী ছেনোয়ারা বেগম ও ছেলে মোস্তাফিজুর রহমানকে আটক করেছে পিবিআই।

এর আগে শরীরের খণ্ডিত অংশ উদ্ধারের ঘটনায় পতেঙ্গা থানা পুলিশ বাদী হয়ে হত্যা মামলা করে। এরপর ছায়া তদন্ত শুরু করে পিবিআই।

পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) একেএম মহিউদ্দিন সেলিম বলেন, ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে আকমল আলী রোডের ইপিজেডের পকেট গেট এলাকার জমির ভিলার একটি বাসায় খুন হন হাসান। এ বাসায় পরিবার নিয়ে থাকেন নিহতের ছোট ছেলে। যেদিন হাসানকে খুন করা হয়, সেদিন ওই বাসায় ছিলেন তার স্ত্রী এবং বড় ছেলে। হত্যাকাণ্ডের পর মরদেহ টুকরো টুকরো করা হয়। এরপর প্রত্যেক টুকরো মোড়ানো হয় স্কচটেপে। এরপর টুকরোগুলো বাসা থেকে বের করেন হাসানের ছোট ছেলে।

আরও পড়ুন: ২০ লাখ টাকায় খুনি ভাড়া করে এখলাসকে হত্যা: ডিবি

পিবিআই জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই বাসা শনাক্ত করা হয়। আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনার পর হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি পরিষ্কার হয়। এরপর আটক হাসানের স্ত্রী ও বড় ছেলের দেওয়া তথ্যে আকমল আলী সড়কের খাল থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় স্কচটেপে মোড়ানো শরীরের একটি খণ্ড উদ্ধার করা হয়।

পিবিআই কর্মকর্তারা বলেন, হাসান প্রায় ৩০ বছর ধরে পরিবার থেকে দূরে ছিলেন। তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ ছিল না পরিবারের। তিনি কোথায় ছিলেন পরিবারের লোকজনও জানতো না। গত এক বছর আগে তিনি ফিরে আসেন। বাঁশখালীতে নিহত হাসানের কিছু পৈতৃক জমি ছিল। স্ত্রী-সন্তানেরা এসব জমি তাদের নামে লিখে দিতে হাসানকে চাপ দেন। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে প্রায়ই বাগবিতণ্ডা হয় হাসানের।

আরও পড়ুন: ৫০০ নবজাতককে হত্যা করে খেয়েছিলেন এই মানুষখেকো

এরপর ১৯ সেপ্টেম্বর স্ত্রী, দুই ছেলে এবং ছেলের বউ মিলে হাসানকে খুন করেন। ঘটনা ধামাচাপা দিতে মরদেহ টুকরো টুকরো করে স্কচটেপ মুড়িয়ে বিভিন্ন জায়গায় ফেলা হয় বলে জানান পিবিআই কর্মকর্তারা।

এমডিআইএইচ/জেডএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।