‘সারারাত জেগে খবর দেখবো নাকি’, ট্রেন মিস করে যাত্রীর ক্ষোভ

মঙ্গলবার মধ্যরাতে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের পর বুধবার ভোর থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। তবে ট্রেন চলাচলের খবর না জানায় অনেক যাত্রী আগে টিকিট কেটেও নির্ধারিত ট্রেন ধরতে পারেননি। এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন তারা।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সকালে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে এমন চিত্র দেখা যায়।

মো. হারিছ নামে এক যাত্রী জাগো নিউজকে বলেন, ‘কক্সবাজার যাওয়ার জন্য পাঁচ হাজার ৩০০ টাকা দিয়ে পর্যটক এক্সপ্রেসের টিকিট কেটেছি। রাত ১২টা পর্যন্ত দেখলাম ট্রেন চলাচল করবে না। হঠাৎ করে আবার আড়াইটায় নাকি ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছে। আমি সারারাত জেগে জেগে খবর দেখবো নাকি?’

তিনি বলেন, ‘কক্সবাজারে সাত হাজার টাকা দিয়ে হোটেল বুকিং করে রেখেছি। আবার ফিরতে ট্রেনের টিকিট কেটে রাখছি, আমি তো যেতেই পারছি না। এখন কী করবো? এই টাকা কে দেবে?

আরও পড়ুন

• ঢাকা থেকে ট্রেন চলাচল শুরু
• চরম ভোগান্তির পর রেলের কর্মবিরতি প্রত্যাহার
• ৩১ ঘণ্টা পর রাজশাহী থেকে ছুটলো ট্রেন
• ট্রেন বন্ধে বেড়ে গেলো বাসভাড়া

কক্সবাজার অভিমুখী পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেন নিয়মিত কমলাপুর থেকে ভোর ৬টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে যায়। তবে আজ কিছুটা বিলম্বে সকাল ৮টায় ঢাকা ছেড়ে গেছে এই ট্রেন। ট্রেন চলার খবর না জানতে পেরে এদিন ট্রেন মিস করেছেন হারিছ।

ফাহাদ আল রশিদ নামে আরেক যাত্রী বলেন, ‘রাজশাহী যাবো, ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট কেটে রাখছিলাম। ৪২৫ টাকা করে আমি ৬টি টিকিট কেটেছি। জানতাম যে আজও ট্রেন চলাচল বন্ধ। সকালে ট্রেন চলাচলের খবর শুনে স্টেশনে এসে আর ট্রেন পাইনি। এখন এতগুলো টাকার টিকিট কী করবো? স্টেশন মাস্টারও আমাদের কথা শুনতে চান না।’

টিকিট থেকেও ট্রেন না পাওয়া অন্য যাত্রীরা বলেন, ‘আমরা এখন কী করবো? যদি জানতাম (ট্রেন চলবে) তবে যথাসময়ে আসতাম।’

এ বিষয়ে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা বলিনি যে ট্রেন চলবে না। আমাদের যান্ত্রিক কোনো ত্রুটিও ছিল না। যারা যাবেন তাদের উচিত ছিল সকালে কল সেন্টারে কল দেওয়া, খোঁজ নেওয়া।’

বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন এবং আনুতোষিক সুবিধার দাবিতে কর্মবিরতির ডাক দেন রানিং স্টাফরা। কর্মবিরতির কারণে গত সোমবার মধ্যরাতের পর থেকেই রাজধানীর কমলাপুরসহ বিভিন্ন স্টেশন থেকে ট্রেন ছেড়ে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। মঙ্গলবারও বন্ধ থাকে ট্রেন চলাচল। এতে দুর্ভোগে পড়েন হাজার হাজার মানুষ।

পরে বুধবারের মধ্যে দাবি পূরণের আশ্বাসে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেন রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের বাসায় বৈঠক শেষে মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে কর্মবিরতি তুলে নেওয়ার ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন।

আরএএস/ইএ/এমএস