ধুলোর রাজ্যে দুর্ভোগ

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয় সম্পাদকীয়
প্রকাশিত: ০৮:৩৮ এএম, ২৫ নভেম্বর ২০১৮

ধুলো দূষণ নিয়ে অভিযোগ পুরনো। এবার ধুলার কারণে সড়কের পাশে অবস্থিত বিভিন্ন দফতর, শিক্ষা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়িতে বসবাসরত মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের উন্নয়ন কাজের ধীরগতিতে সদর উপজেলার প্রায় ১০ কিলোমিটার সড়ক ধুলার রাজ্যে পরিণত হওয়ায় এ অবস্থা হয়েছে। এছাড়া সড়ক উন্নয়ন কাজের মান নিয়েও স্থানীয়দের মধ্যে রয়েছে ক্ষোভ।

রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের প্রায় ৪৫ কিলোমিটার অংশের পুরোটাই ছিল খানাখন্দে ভরা। সড়ক বিভাগের তত্ত্বাবধানে প্রায় ১ বছর আগে সড়কের উন্নয়ন কাজ শুরু হলেও এখনও দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন হয়নি। এছাড়া ধীরগতির কাজ আর নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারে ধুলায় নাকাল সড়কটি।

শুধু জেলা শহরেই নয় খোদ রাজধানীতেই যত্রতত্র যখন তখন খোঁড়াখুঁড়ির কারণে সৃষ্টি হচ্ছে ধুলার। সকাল বেলা বাসা-বাড়ি থেকে বের হয়ে লোকজনকে রীতিমত ধুলায় গোসল করে ফিরতে হয়। ওয়াসা, ডেসা, তিতাস- এক সংস্থা রাস্তা খুঁড়ে কাজ শেষ করে তো আরেক সংস্থা শুরু করে। এতে যেমন রাষ্ট্রের অর্থের শ্রাদ্ধ হয় তেমনি ভোগান্তিও বাড়ে। এক মন্ত্রণালয়ের সাথে আরেক মন্ত্রণালয়ের কাজের কোনো সমন্বয় না থাকায় যুগ যুগ ধরে চলছে এই জগাখিচুড়ি অবস্থা। কিন্তু এ থেকে কি কোনো পরিত্রাণ নেই?

বাস্তবতা হচ্ছে, ঢাকা বিশ্বের দূষিত নগরগুলোর মধ্যে অন্যতম। বিভিন্ন স্থানে অপরিকল্পিতভাবে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি, উড়ালসড়ক নির্মাণ, বাড়িঘর নির্মাণ ও ভাঙাচোরা রাস্তায় যানবাহন চলাচলের কারণে বাতাসে ধুলার পরিমাণ অত্যধিক মাত্রায় বেড়েছে। রাজধানীর কোথাও না কোথাও নির্মাণ কাজ চলছেই। এ কারণেও সৃষ্টি হচ্ছে ধুলার। যা দূষণের মাত্রা বাড়িয়েই চলেছে। বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত মেগাসিটির তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে ঢাকা। ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বায়ুদূষণজনিত অসুখে বছরে সাড়ে আট হাজার শিশু মারা যায়। বিষয়টি ভাবা যায়!

এছাড়া যানজট, যানবাহন ও কলকারখানার কালো ধোঁয়া, ট্যানারি বর্জ্য, খাদ্যে ভেজাল, সেবাপ্রতিষ্ঠানগুলোর নিন্মমানও ঢাকার জীবনযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। অধিক জনসংখ্যার চাপে ন্যুজ্ব এ শহরে নেই পয়ঃনিষ্কাশনের সুষ্ঠু ব্যবস্থা। জনসংখ্যা বাড়ছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গাড়ি-ঘোড়া। কিন্তু সে তুলনায় রাস্তাঘাট, হাসপাতাল স্কুল-কলেজ, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি ইত্যাদি নাগরিক সেবা পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ রাজধানী ঢাকাই দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রাণকেন্দ্র।

এ অবস্থায় ধুলো-দূষণ বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার বিকল্প নেই। এজন্য পরিকল্পনা মাফিক সবকিছু হতে হবে। মন্ত্রণালয় ও সংস্থাকে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। সবার আগে বন্ধ করতে হবে যখন তখন খোঁড়াখুঁড়ি।

এইচআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।