‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা ইতিহাসের এক ভাগ্যাহত বীর’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:২৫ পিএম, ০২ জুলাই ২০১৯

১৭৫৭ সালে পলাশীর প্রান্তরে পরাজয়ের পর নবাব সিরাজদ্দৌলার বেদনাদায়ক মৃত্যু হলেও, উপমহাদেশের মানুষ তাকে আজও শ্রদ্ধা ও সম্মানের সঙ্গে স্মরণ করে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া।

তিনি বলেন, ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন সকাল ৮টায় যুদ্ধ শুরু হয়। কিন্তু প্রধান সেনাপতি মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতায় নবাবের পরাজয় ঘটে। সেই সঙ্গে বাংলার স্বাধীন সূর্য অস্তমিত হয়। পলাশীর ষড়যন্ত্রে যুদ্ধে বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলার শোচনীয় পরাজয় ঘটলেও ইংরেজরা ক্ষান্ত হয়নি সেদিন। এরপর তারা নবাবের চরিত্রে নানাভাবে কলঙ্ক লেপন করতে থাকে, অন্ধকূপ হত্যা, লাম্পট্য ইত্যাদি।

মঙ্গলবার বিকেলে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজদ্দৌলার ২৬২তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় গণমুক্তি আন্দোলন আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ন্যাপ মহাসচিব বলেন, সিরাজউদ্দৌলার চরিত্রে কলঙ্ক লেপন করে কলকাতায় একটা মনুমেন্ট তৈরি হয়েছিল। তার নাম ছিল হলওয়েল মনুমেন্ট। পরবর্তীতে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর নেতৃত্বে ১৯৪০ সালের ৩ জুলাই হলওয়ের মনুমেন্ট অপসারণের জন্য সত্যাগ্রহ আন্দোলনের ডাক দিলেন। বাঙালি হিন্দু ও মুসলমানেরা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করে ইংরেজদের বাধ্য করে ওই হলওয়ের মনুমেন্ট তুলে নিতে। পরবর্তীতে সুভাষ চন্দ্র বসুর উদ্যোগে ২৩শে জুন প্রথম পলাশী দিবস উদযাপিত হয়েছিল কলকাতায়। সঙ্গে ছিলেন কবি কাজী নজরুল ইসলাম এবং মাওলানা আকরাম খাঁ। এ ব্যাপারে কবি নজরুলের একটি বিবৃতি প্রকাশ পেয়েছিল দৈনিক আজাদ এবং মাসিক মোহাম্মদী পত্রিকায় ১৯৩৯ সালের জুনে।

তিনি আরও বলেন, জাতীয় বীর সিরাজউদ্দৌলাকে স্মরণ করে অনুপ্রাণিত হয়, ব্যথিত হয়। একথা সত্য, নবাব সিরাজ ইতিহাসের এক ভাগ্যাহত বীর, দেশপ্রেমিক। ১৫-২০ বছর আগেও নবাব সিরাজউদ্দৌলার ইতিহাস চর্চা ও সিরাজকে নিয়ে নাটক-সিনেমা বাংলার ঘরে ঘরে প্রচলিত ছিল। আমাদের ঐতিহ্য সাহিত্য সংস্কৃতি ও রাজনীতির কবর আমরা নিজেরাই রচনা করছি। আজকাল দেশপ্রেমিক সিরাজউদ্দৌলার ইতিহাস চর্চা ও নাটক-সিনেমা নেই বললেই চলে। আমাদের উচিত, সিরাজউদ্দৌলার প্রকৃত ইতিহাস ও দেশপ্রেমের ঘটনাগুলো জাতির সামনে তুলে ধরা।

গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা। স্বাধীনতা রক্ষায় যুদ্ধ করে তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার হন, প্রাণ হারান আঁততায়ীর হাতে। এসবের পেছনে মূল কলকাঠি নাড়েন তার সিপাহসালার বিশ্বাসঘাতক মীর জাফর। মৃত্যুর পরেও বীর নবাবের প্রতি যথাযথ সম্মান দেখানো হচ্ছে না। চরম অবহেলা ও অযত্নে রয়েছে তার সমাধিস্থল। অন্যদিকে ব্রিটিশদের সঙ্গে আঁতাত করা মীর জাফর, তার তিন স্ত্রী ও বংশধরদের কবরস্থান বেশ সংরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে।

সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, বাংলাদেশ জনতা লীগ চেয়ারম্যান শেখ ওসমান গনি বেলাল, বাংলাদেশ লেবার পার্টির মহাসচিব আবদুল্লাহ আল মামুন, ন্যাপ সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামাল ভুইয়া, সংগঠনের সমন্বয় কমিটির সদস্য আবদুল হালিম, মাওলানা আবু জাফর রেদোয়ানী, আফরোজা বেগম, যুবনেতা আবদুল্লাহ আল কাউছারী প্রমুখ।

কেএইচ/এমএসএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।