স্পষ্ট বলে দিয়েছি এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবো না: খসরু

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:১৬ পিএম, ২৬ অক্টোবর ২০২২
আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছি, এই ফ্যাসিস্ট সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবো না।

বুধবার (২৬ অক্টোবর) রাজধানীর পল্টনে গণঅধিকার পরিষদের প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

গণঅধিকার পরিষদকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, যারা এখানে উপস্থিত হয়েছেন সবাই তাদের রাজনৈতিক অবস্থান পরিষ্কার করেছেন, বিশেষ করে আগামী নির্বাচন সামনে রেখে যারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই ফ্যাসিস্ট সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না, সবাইকে শুভেচ্ছা।

খসরু বলেন, দেশের মানুষ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। আজ এই প্রেক্ষাপটে কারা জনগণের পক্ষে অবস্থান করছে আর কারা ফ্যাসিস্টের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আগামী নির্বাচনে গিয়ে জাতির বিরুদ্ধাচরণ করছে তা জাতি পর্যবেক্ষণ করছে। আমরা যুগপৎ আন্দোলনের মধ্যদিয়ে এই সরকারের পতন ঘটাবো।

বিএনপির এই নেতা বলেন, বিএনপির জনসভায় এত বাধা-বিপত্তির পরও মানুষ সেখানে আসছে কেন জানেন? আমরা স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছি, এই ফ্যাসিস্ট সরকারের অধীনে আমরা নির্বাচনে যাবো না। আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটাবো, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। জনগণ তাদের প্রতিনিধি ও সরকার গঠন করবে।

‘মানুষ এখন বুঝতে পারছে, রাস্তায় নেমে সরকারের পতন ঘটানো ছাড়া মুক্তির কোনো পথ নেই। আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ, যে যুগপৎ আন্দোলনের সূচনা হয়েছে যার যার অবস্থান থেকে আগামী দিনগুলোতে রাস্তায় থেকে ফ্যাসিস্টের পতন ঘটাতে ত্বরান্বিত করতে পারবেন বলে আশা করি।’

তিনি বলেন, যারা এখনো সিদ্ধানহীনতায় ভুগছেন তাদের উদ্দেশ্যে বলি, উচ্ছিষ্টভোগী হবেন না। আগামী নির্বাচন রাজনীতিবীদদের পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হলে জনগণের পক্ষে পরিষ্কার অবস্থান নিতে হবে।

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমাদের সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে, আমরা যে চেতনায়, মানসিকতায়, ইচ্ছায় পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলাম, তার তেমন কিছুই বাস্তবায়িত হয়নি। আমাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল গণতন্ত্র নিরাপদ হবে, পাকিস্তানের ২২ ধনী পরিবারের হাত থেকে আমরা মুক্তি পাবো, কিন্তু এর কিছুই আমরা পাইনি।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, এমন একটা সরকার ক্ষমতায় রয়েছে যারা প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে ফ্যাসিবাদ কায়েম করছে। যারা প্রকাশ্যে ভোট চুরিকে জায়েজ করতে চেষ্টা করে। কখনো মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান দিয়ে, কখনো প্রগতিশীলতার স্লোগান দিয়ে, কখনো উন্নয়নের স্লোগান দিয়ে নাগরিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তে যেতে হবে। নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত হচ্ছে একটি গণতান্ত্রিক বন্দোবস্ত। যেখানে নাগরিক অধিকার থাকবে। কোনো শাসক ক্ষমতা দিয়ে সেই অধিকার কেড়ে নেওয়ার সুযোগ পাবে না।

গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর বলেন, সমাজে একটা নৈরাজ্য তৈরি হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে। সরকার রাষ্ট্র চালাতে ব্যর্থ হচ্ছে। তাই আমরা বলছি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে আপনারা বিদায় নেন। প্রধানমন্ত্রী নিজে বারবার দুর্ভিক্ষের কথা বলছেন কেন? আপনারা উন্নয়নের মহাসড়কের কথা তুললেন। এখন খাদের কিনারায় কেন নিয়ে এসেছেন? হাতিরঝিলের লাইট জ্বালিয়ে শতভাগ বিদ্যুতের উৎসব করলেন, এখন কেন জ্বালানি আমদানি করতে পারছেন না? যে সংকট ধেয়ে আসছে তাতে ব্যবসায়ী, শিক্ষক, আমলা, শ্রমজীবী মানুষ কেউ এর থেকে রেহাই পাবে না। আজকে যদি দেশকে বাঁচাতে হয় এই সরকারের পতনের দাবিতে আন্দোলন-সংগ্রামের বিকল্প নেই।

কবি ও প্রাবন্ধিক ফরহাদ মজহার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচন চায়, সুতরাং দেশে নির্বাচন হবে, বিএনপির কাজ হচ্ছে সবাইকে নিয়ে বৃহত্তর জোট গড়ে তোলা।

অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, মেজর জেনারেল (অব.) আমসা আমিন, অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির সভাপতি ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান ইরান, গণধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

কেএইচ/ইএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।