বিজয় নিশ্চিত, সাকিবকে পেতে মুখিয়ে আবাহনীও

আরিফুর রহমান বাবু
আরিফুর রহমান বাবু আরিফুর রহমান বাবু , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৮:৪২ পিএম, ২০ জুলাই ২০২২

চির প্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডানের মত ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ন হয়নি। সাদা কালোরাতো গতবার সুপার লিগেই উঠতে পারেনি। এতটা খারাপ না করলেও দল অনুযায়ী কাঙ্খিত ফল পায়নি আবাহনীও। শেখ জামাল আর লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের পিছনে থেকেই লিগ শেষ করেছে আকাশী হলুদরা।

অথচ কাগজে-কলমে আবাহনীও ছিল বেশ সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী দল। মুনিম শাহরিয়ার, নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাস, নাইম শেখ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, আফিফ হোসেন ধ্রুব আর সাইফউদ্দীনের মত হাত পাকানো পারফরমার ছিল লাইনআপে।
মোটকথা ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটে শিরোপা জেতার মত দল ছিল আবাহনী। তাদের সঙ্গে অভিজ্ঞ পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি, তারুণ্যের প্রতীক শামীম পাটোয়ারি ও মাহমুদুল হাসান জয়ও ছিলেন আকাশী হলুদ শিবিরে।

কিন্তু তা নিয়েও শেষ হাসি হাসা সম্ভব হয়নি। তিন নম্বর থেকেই তুষ্ট থাকতে হয় ধানমন্ডির ক্লাবকে। সাফল্যকে মানদণ্ড ধরলে আবাহনীর ধারে কাছে নেই কোন দল। এক সময় প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডান প্রায় সমানতালে পাল্লা দিলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পিছিয়ে পড়েছে অনেক। এখন ঢাকার ক্লাব ক্রিকেট, প্রিমিয়ার লিগ তথা লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে আবাহনীর সাফল্য আকাশছোঁয়া। ধারেকাছে নেই আর কোন দল।

গত লিগের আগেও আবাহনী টানা তিনবারের চ্যাম্পিয়ন। খুব স্বাভাবিকভাবেই আগামীবার আবার হারানো শিরোপা পুনরূদ্ধারে তৎপর আকাশী-হলুদরা।

ক্লাব পাড়ার খবর, আগামী বছরের জন্য দল গোছানোর কাজটা প্রায় সেরে ফেলেছে আবাহনী কর্মকর্তারা। যেহেতু তাদের শিবিরে আছেন একঝাঁক পরিণত ও ম্যাচ উইনার, তাই কাউকে নতুন করে দলে ভেড়ানোর আগে আবাহনীর প্রথম টার্গেট হলো নির্ভরযোগ্য ও চালিকাশক্তির ৫-৬ জনকে রেখে দেয়া।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আবাহনীর এক অন্যতম শীর্ষ কর্মকর্তা জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন, ‘কয়েক বছর ধরে আবাহনীর হয়ে খেলা লিটন দাস, মুনিম শাহরিয়ার, নাজমুল হোসেন শান্ত, নাইম শেখ, আফিফ হোসেন ধ্রুব, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও সাইফউদ্দিন ২০২৩ সালেও আবাহনীতেই থাকবেন। তাদের সঙ্গে কথা বার্তাও চূড়ান্ত।

ওই কর্তার অকপট স্বীকরোক্তি, ‘এর বাইরে আমরা পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি, অলরাউন্ডার শামীম পাটোয়ারি আর টপ অর্ডার মাহমুদুল হাসান জয়কে ছেড়ে দিয়েছি। তারা আবাহনী ছেড়ে নতুন ঠিকানা খুঁজে নিয়েছেন।’

পুরনোদের রেখে দেয়ার পাশাপাশি আবাহনী আছে রাঘব বোয়াল শিকারের লক্ষ্যে। দেশসেরা অলরাউন্ডার ও দল বদলের ‘হটকেক’ সাকিব আল হাসানের দিকে চোখ আকাশী হলুদ শিবিরের। ক্লাবটির এক কর্মকর্তা প্রকাশ্যেই জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার আগেও সাকিবের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। সাকিব না করেননি যে তিনি খেলবেন না। বরং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটাঙ্গনের এই বড় তারার ইচ্ছে আছে আবাহনীতে খেলার। এবং সাকিব তাকে বলেছেনও, সময় ও সুযোগ হলে আমিও আবাহনীতে খেলতে চাই। ওই কর্মকর্তার কথা, আমরাও সাকিবকে পেতে চাই।

তবে তিনি স্বীকার করেন, ‘আমরা জানি সাকিবকে পেতে আগ্রহী মোহামেডানও। আমাদের সঙ্গে তার এখন পর্যন্ত কাগজে কলমে পাকা কথা হয়নি। তবে সাকিব ও আমরা দু’পক্ষই চাই সাকিব আবাহনীতে খেলুক। তবে আমাদের মধ্যে তার পারিশ্রমিক নিয়ে কথা চূড়ান্ত হয়নি।’

এদিকে সাকিবকে নিয়ে সত্যিই টানাটানি মোহামেডান-আবাহনীর। দু’পক্ষই তাকে পেতে আগ্রহী। সাকিবও কথা বলেছেন দুই শিবিরের সাথেই। তবে কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না, ‘সাকিব আমাদের।’

দুই শিবিরেই সাকিবকে ঘিরে খানিক সংশয়। মোহামেডান কর্তাদের কথা শুনে মনে হয়, সাকিব আবাহনীর সঙ্গে কথা-বার্তা চূড়ান্ত করে ফেলেছে। আবার আবাহনীর এক শীর্ষ কর্তার মন্তব্য, ‘শুনলাম সাকিব নাকি মোহামেডানের দল সাজানোয় ভূমিকা রাখছে।’ এখন আসলে সাকিব কোন দলে নাম লিখাবেন? সেটাই দেখার বিষয়।

ওদিকে সাকিব খেলুন কিংবা না খেলুন, আগেরবারের টপ স্কোরার এনামুল হক বিজয়ের আবাহনীতে যোগ দেয়া একপ্রকার নিশ্চিত। গত লিগে ১১০০ প্লাস রান করা বিজয়ের সঙ্গে কথাবার্তা চূড়ান্ত আবাহনীর।

আবাহনীর এক কর্মকর্তার দাবি, ‘আমরা এনামুল হক বিজয়কে দলে টানার সবকিছু পাকা করে ফেলেছি। আগামী লিগে বিজয়কে আকাশী-হলুদ জার্সি গায়েই দেখা যাবে। এর বাইরে বাঁ-হাতি স্পিনার রাকিবুল হাসান আর পেসার তাসকিন আহমেদের ওপরও চোখ আবাহনীর। যদিও তাসকিনকে পেতে আগ্রহী মোহামেডানও। তবে আবাহনী কর্তাদের দাবি, ‘তাসকিন আগামী বছর আবাহনীতেই খেলবেন।’

এআরবি/আইএইচএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।