নাইম শেখের ঝোড়ো সেঞ্চুরিতে মোহামেডানকে হারালো আবাহনী

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৪:৪১ পিএম, ২২ মার্চ ২০২৩

খেলার বয়স তখন ৮৩ ওভার, আবাহনী ইনিংসের তখনও ১০০ বল বাকি। মোহামেডান পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বির বলকে ওয়াইড লং অনের ওপর দিয়ে বিশাল ছক্কা হাঁকালেন নাইম শেখ। উল্টো দিকে ঘুরে শেরে বাংলার পশ্চিম কোনায় আবাহনী ড্রেসিং রুমের দিকে ব্যাট উঁচিয়ে ধরলেন। এরই সঙ্গে তার শতরান পূর্ণ হলো।

চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডানের বিপক্ষে শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে দুর্দান্ত শতক উপহার দিলেন ফর্মে থাকা বাঁহাতি ওপেনার। প্রথম ম্যাচে ব্রাদার্সের সাথে ৮৫ আর পরের খেলায় শাইনপুকুরের সাথে ৪৩ রান করা নাইম আজ বুধবার শেরে বাংলায় শতরান করতে খেললেন মাত্র ৮০ বল। চার হাঁকালেন ১১টি। ছক্কার মার ছিল ৩টি।

নাইম শেখের হার না মানা সেঞ্চুরির সাথে আবাহনী ইনিংসে দারুণ ব্যাটিং করেছেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। ৪১ বলে ৪৯ রানের ঝোড়ো ইনিংস উপহার দিয়েছেন জাতীয় দল থেকে সদ্য বাদ পড়া আফিফ।

এ দুই বাঁহাতির ঝোড়ো উইলোবাজিতে মোহামেডানের ২৩৫ রান টপকে ৬ উইকেটের কৃতিত্বপূর্ণ জয়ের স্বাদ পেয়েছে আবাহনী। নাইম শেখের ৮৬ বলে ১১০ আর অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ১৮ বলে ২৫ রানে অপরাজিত থেকে ৯৩ বল আগেই দলকে জিতিয়ে সাজঘরে ফেরেন।

এর আগে দুই ওপেনার ইমরুর কায়েস আর মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ফিফটি হাঁকালেও মোহামেডানের ইনিংস থেমে গিয়েছিল ৮ উইকেটে ২৩৫ রনেই।

মোহামেডান অধিনায়ক ইমরুল কায়েস টস জিতে ব্যাটিং বেছে নিয়ে দলকে শুভ সূচনা এনে দিয়েছিলেন। প্রথম উইকেটে ইমরুল কায়েস আর মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ১৩৭ রানের বিশাল জুটি গড়ে দেন।

দুই ওপেনার পঞ্চাশ পেরিয়ে যান; কিন্তু দলকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করিয়েও দু’জনের কেউই রানের গতি বাড়াতে পারেননি। যখন রান গতি বাড়নোর সময় ঠিক তখনই দু’জন আউট হয়ে যান। ইমরুল ৬৬ (৯৬ বলে) আর অংকন ৭০ রানে (৮৫ বলে) আউট হন অতি অল্প সময়ের ব্যবধানে।

ইমরুল আর অঙ্কনকে আউট করে মোহামেডানকে সামনে থেকে পিছনের পায়ে ঠেলে দেয়ার গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করেছেন আবাহনী স্পিনার তানভির ইসলাম ও পেসার সাইফউদ্দীন। তানভিরের বলে কাট করতে গিয়ে পয়েন্টে ক্যাচ তুলে দেন মোহামেডান অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। আর অঙ্কনকে আউট করেন পেসার সাইফউদ্দীন।

সোজা ব্যাটে সজোরে হাকানো অঙ্কনের সেই জোরালো শট চলে যাচ্ছিল মাথার ওপর দিয়ে। বোলার সাইফউদ্দীন ফলো থ্রুতে নিজেই অসামান্য দক্ষতায় তা ধরে ফেলেন। তারপর মোহামেডান ইনিংসে শুরু হয় মড়ক।

দুর্দান্ত সূচনার পর ওয়ান ডাউনে নেমে সৌম্য সরকার একদম স্লো খেলে ৬ বলে ১ রান করে আবাহনী বাঁ-হাতি স্পিনার তানভিরের বলে সুইপ খেলতে গিয়ে ফাইন লেগ আর লং লেগের মাঝামাঝি ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। আর সাইফউদ্দীনের বলে মারবো কি মারবো না- এমন দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগে শর্ট কভারে ক্যাচ দেন অভিজ্ঞ রিয়াদ।

শুভাগত হোম শর্ট মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন প্রথম বলেই। আবাহনী পেসার তানজিম সাকিবের বাউন্সারে পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দেন শুভাগত। ঠিক এরপরই ছন্দপতন। তিন পরিণত ও অভিজ্ঞ পারফরমার এবং দলের তিন স্তম্ভ সৌম্য সরকার (৬ বলে ১) মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (৬ বলে ৩) আর শুভাগত হোম (০) চরম ব্যর্থ হলে রান তোলার গতি একদম কমে যায়।

এক সময় মনে হয় মোহামেডানের রান ২০০‘ও হবে না। পরের দিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অনুষ্টুপ মজুমদার (৩৩ বলে ৩০) আর আরিফুল হক (৪৮ বলে ৩৭*) প্রাণপন চেষ্টা করে দলকে ২৩০-এর ঘরে পৌঁছে দেন।

জাতীয় দলে ব্যর্থ হলেও আবাহনীর হয়ে যথারীতি বল হাতে সফল সাইফউদ্দীন। ৪৫ রানে একাই ৪ উইকেটের পতন ঘটিয়েছেন তিনি। এছাড়া আরেক পেসার তানজিম সাকিব ও বাঁ-হাতি স্পিনার তানভির ইসলাম পান দুটি করে উইকেট।

এআরবি/এমএমআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।