মামলাটি হয়েছিল আমাকে গ্রেফতারের জন্য: বেরোবি শিক্ষক মাহমুদুল হক

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০৭:৪৯ পিএম, ২৪ জুন ২০২৫
বেরোবিতে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সহকারী অধ্যাপক মোহা. মাহমুদুল হক

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহা. মাহমুদুল হক বলেছেন, একটি সংঘবদ্ধ ষড়যন্ত্রকারী চক্র আমার বিরুদ্ধে তৈরি হয়েছে। তারাই এসব মামলা করাচ্ছেন। হাজিরহাট থানায় যে মামলা আমার নামে দেওয়া হয়েছে, সেই ব্যক্তি হার্ট অ্যাটাকে মারা গিয়েছিলেন। মামলাটি পরিকল্পিতভাবে শুধু আমাকে গ্রেফতারের জন্যই করা হয়েছে।

হার্ট অ্যাটাকে মারা যাওয়ার ১০ মাস পর করা হত্যা মামলায় জামিনের দুদিন পর ‎মঙ্গলবার (২৪ জুন) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি হেয়াত মামুদ ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে দাবি জানিয়ে সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হক বলেন, ‌‘আমার বিরুদ্ধে করা দুটি মিথ্যা মামলায় আমার (মাহমুদুল হক) নাম প্রত্যাহার করতে হবে এবং হাজিরহাট থানার ওসিকে বরখাস্ত করে আইনের আওতায় এনে তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। এছাড়া কারা কারা এই গ্রেফতারের সঙ্গে জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’

মাহমুদুল হক বলেন, ‘২০০৯ সালে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর ২০১৯ সালে আমি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করি। যোগদানের পর থেকেই নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতিবিরোধী একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে যুক্ত করি। তৎকালীন উপাচার্যের বিরুদ্ধে ৭৯০ পৃষ্ঠার একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করি। বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় পতাকা অবমাননার ঘটনায় গোল বৃত্তকে চারকোনা বানানোর বিষয়ে আমি একটি মামলা করি। ফলে আমার বিপক্ষে কিছু গোষ্ঠী দাঁড়িয়ে যায়। আমি যখনই অধিকার নিয়ে কথা বলি, তখনই কিছু গোষ্ঠী আমার বিপক্ষে দাঁড়ায়।’

আরও পড়ুন:

‎‎গ্রেফতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ঘটনার দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রোগ্রাম শেষে আমি বাসায় যাই। তখন আমার ছেলে ও আমি বাসায় ছিলাম। আমার পরিবার রাজশাহীতে ছিল। দুপুরের খাবার শেষে আমরা বাসার আশপাশে হাঁটছিলাম। হঠাৎ সাদা পোশাক ও ইউনিফর্ম পরিহিত কিছু পুলিশ সদস্য আমার বাসায় আসে। আমি জিজ্ঞাসা করি, আমাকে কি গ্রেফতার করবেন? পুলিশ জানায়, হ্যাঁ, আপনার সঙ্গে কথা বলতে হবে। আপনাকে থানায় যেতে হবে। আপনি মামলার ৫৪ নম্বর আসামি। এরপর আমাকে সরাসরি কোতোয়ালি থানায় নেওয়া হয়। আমি অবাক হয়ে যাই। কারণ মামলা ছিল হাজিরহাট থানায় অথচ আমাকে কোতোয়ালি থানায় নেওয়া হয়। কিছু কাগজপত্র তৈরি করে দ্রুত আমাকে কারাগারে পাঠানো হয়।’

মাহমুদুল হক আরও বলেন, ‘এর আগেও মানিক হত্যা মামলায় আমাকে হয়রানি করা হয়েছিল। সেখানে আমি ছিলাম ১৯ নম্বর আসামি। কেন এসব হয়রানিমূলক মামলা করা হচ্ছে, তা আমি বুঝতে পেরেছি। দীর্ঘদিন আমি অধিকার নিয়ে কথা বলেছি, মানুষের পক্ষে দাঁড়িয়েছি। এসব কারণেই একটি সংঘবদ্ধ চক্র আমার বিরুদ্ধে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারাই এসব মামলা করাচ্ছে এবং বাদীকে প্রভাবিত করছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাকে সরাতে, আমার পরিবারকে হেয় করতে এসব মামলা করা হয়েছে।’

ফারহান সাদিক সাজু/এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।