রাবিতে শাবিপ্রবি ভিসির কুশপুতুলে জুতার মালা-থুতু নিক্ষেপ

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনায় উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বাম ছাত্র সংগঠনগুলো।
হামলার ঘটনায় উপাচার্যকে ‘ইন্ধনদাতা’ আখ্যায়িত করে তার কুশপুতুলে জুতার মালা পরান সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এসময় ঘৃণা প্রকাশ করে কুশপুতুলে থুতুও নিক্ষেপ করেন তারা।
বুধবার (২৬ জানুয়ারি) বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে শাবিপ্রবি উপাচার্যের কুশপুতুলে জুতার মালা পরান বাম ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা। পরে তারা বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে আমতলায় মিলিত হন।
এসময় রাকসু আন্দোলন মঞ্চের আহ্বায়ক আব্দুল মজিদ অন্তর বলেন, শাবিপ্রবি ভিসি ফরিদ উদ্দিন আহমেদের আদেশে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ যে অমানবিক হামলা চালিয়েছে আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাই। তার এমন অপকর্মের জন্যই আজ তার কুশপুতুলে জুতার মালা ও থুতু নিক্ষেপ করার আয়োজন করেছি। এসময় তিনি শাবিপ্রবি উপাচার্যের অপসারণ দাবি করেন।
শাবিপ্রবির সাবেক শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ প্রসঙ্গ টেনে নাগরিক ঐক্য পরিষদের রাবি শাখার আহ্বায়ক মেহেদী হাসান মুন্না বলেন, ‘এখন তাদের পরিবারকে হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। এমন নৈরাজ্য কর্মকাণ্ড স্বৈরাচারী সরকারের আমলেই করা সম্ভব। এ থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।’
ছাত্র ফেডারেশনের রাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক মহব্বত হোসেন মিলন বলেন, শাবিপ্রবির উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার নির্দেশ দিয়েছেন। জাবি ছাত্রীদের নিয়ে কটূক্তি করে তিনি শিক্ষকতার মহান পেশাকে কলঙ্কিত করেছেন। এসব স্বৈরাচারী কাজ করে তিনি নৈতিকতা হারিয়েছেন। তার ভিসি পদে থাকার কোনো অধিকার নেই।’
কর্মসূচিতে বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর প্রায় ডজনখানেক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
অনশন ভাঙলেও উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় সস্ত্রীক ক্যাম্পাসে এসে পানি খাইয়ে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ সাতদিনের অনশন ভাঙেন অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল।
গত ১৩ জানুয়ারি থেকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। পরে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিও সামনে আসে।
এরপর ১৬ জানুয়ারি বিকেলে তিন দফা দাবি আদায়ে উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করেন তারা। পরে পুলিশ উপাচার্যকে উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সময় পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। পুলিশ ৩০০ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে।
১৯ জানুয়ারি বিকেলে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে তার বাসভবনের সামনে আমরণ অনশন শুরু করেন ২৩ শিক্ষার্থী। একে একে শিক্ষার্থীরা অনশনে যোগ দেন। পরে ২৬ জানুয়ারি সকালে শিক্ষার্থীরা অনশন ভাঙলেও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
এসআর/এমএস