অন্যের জমিতে দেওয়াল বিএনপি নেতার

মীমাংসা করতে গিয়ে হামলার শিকার জামায়াত নেতা

উপজেলা প্রতিনিধি উপজেলা প্রতিনিধি সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
প্রকাশিত: ০৮:০৭ পিএম, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মুছা মিয়া নামের এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে নিরীহ মানুষের জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি মীমাংসা করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন জামায়াত নেতা।

অভিযুক্ত বিএনপি নেতা বারদী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সহ-সভাপতি। ভুক্তভোগীর নাম আবুল হোসেন।

রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) উপজেলার বারদী ইউনিয়নের চেঙ্গাকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আবুল হোসেন বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতপরিচয় ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ করেন।

ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি ছাড়াও অভিযুক্ত অন্যরা হলেন মোস্তফা মিয়া, গোলজার হোসেন, মঞ্জু মিয়া, বাদল মিয়া, মো. সুমন, আহম্মদ আলী, রাসেল মিয়া ও শাহিন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চেঙ্গাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা আবুল হোসেন পৈতৃক সূত্রে মালিক হয়ে দীর্ঘদিন ধরে জমি ভোগদখল করে আসছেন। সম্প্রতি ভুক্তভোগীর আরেক ভাই আলী হোসেনের কাছ থেকে অভিযুক্ত ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি সাড়ে তিন শতাংশ জমি কেনেন। অভিযুক্ত সাড়ে তিন শতাংশ জমি কিনলেও ২৮ শতাংশ জমি দখলের চেষ্টায় রয়েছেন।

এ নিয়ে ভুক্তভোগী আবুল হোসেনের সঙ্গে অভিযুক্তের দ্বন্দ্ব চলছে। আজ জমি দখলে নিতে অভিযুক্তের নেতৃত্বে তার সহযোগীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে ভুক্তভোগীর বাড়িতে প্রবেশ করেন। এসময় ভয়ভীতি দেখিয়ে দেওয়াল নির্মাণের চেষ্টা করেন তারা।

জমি দখলের বিষয়টি ভুক্তভোগী থানায় জানানোর পাশাপাশি বারদী ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সহ-সভাপতি আব্দুল মতিনকেও জানান। পরে পুলিশ এবং জামায়াতে ইসলামীর নেতা উভয়ের দ্বন্দ্বের মীমাংসায় বসেন। বৈঠকের মধ্যেই অভিযুক্তরা পুলিশের উপস্থিতিতে জামায়াত নেতা আব্দুল মতিনকে পিটিয়ে আহত করেন।

মীমাংসা করতে গিয়ে হামলার শিকার জামায়াত নেতা

ভুক্তভোগী আবুল হোসেন বলেন, ‌‘আমি দীর্ঘদিন ধরে পৈতৃক সূত্রে পাওয়া সম্পত্তি ভোগদখলে রাখলেও সম্প্রতি আমার ভাইয়ের কাছ থেকে সাড়ে তিন শতাংশ জমি কিনেছেন মুছা। তিন শতাংশ কিনলেও তিনি এখন আমাদের মোট ২৮ শতাংশ জমি দখল করতে চাচ্ছেন। মুছার ক্রয়কৃত সম্পত্তির চৌহাদী নদীর ধারে হলেও তিনি মূল বাড়ির জমি দখল নিচ্ছেন। সেখানে ইটের দেওয়াল নির্মাণ করেছেন।’

আহত জামায়াত নেতা আব্দুল মতিন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বিএনপি নেতা মুছা মিয়ার সঙ্গে আমি জেলে ছিলাম। ওইসময় থেকে আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে। আবুল হোসেন ও মুছা মিয়ার সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিরোধ মীমাংসা করতে বসলে অতর্কিতভাবে আমার ওপর হামলা করা হয়। হামলা করে আমার সঙ্গে থাকা টাকা-পয়সাও ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।’

অভিযুক্ত ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি মুছা মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আমাদের হামলা ও মামলা দিয়ে বাড়িছাড়া করে রাখা হয়েছিল। সেসময় আমি আমার সম্পত্তি দখলে নিতে পারিনি। বর্তমানের পরিস্থিতি অনুকূলে থাকায় আমি আমার জমি দখলে নিয়েছি।’

এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাশেদুল হাসান খাঁন জাগো নিউজকে বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধের ঝামেলা হয়েছিল। এ বিষয়ে অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। উভয় পক্ষকে জমির সঠিক কাগজপত্র নিয়ে থানায় আসতে বলা হয়েছে।

পুলিশের উপস্থিতিতে মারামারির জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না, মারামারি হয়নি। হালকা ধস্তাধস্তি হয়েছিল। আমি উভয় পক্ষকে ডেকেছি।’

মো. আকাশ/এসআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।