খেতুরিধামের মহোৎসবে ভক্ত-দর্শনার্থীর ঢল, সড়কে তীব্র যানজট
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার খেতুরীধামে বৈষ্ণব সাধক নরোত্তম দাস ঠাকুরের খেতুরিভাব (তিরোভাব) মহোৎসবে ভিড় করেছেন লাখো ভক্ত ও দর্শনার্থী। ভক্তদের ভিড়ে রাজাবাড়ি থেকে বসন্তপুর পর্যন্ত এবং বিজয়নগর থেকে প্রেমতলী বাজার মোড় পর্যন্ত সড়কে দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট।
শনিবার (১১ অক্টোবর) সকাল থেকে সড়কে যানজট দেখা যায়। পার্কিংয়ের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় যানজট বেড়েছে। প্রধান সড়কে ৪ কিলোমিটার যানজট দেখা দিয়েছে।
খেতুরী গ্রামটি উপজেলার প্রেমতলী বাজার থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে। ভোর থেকেই ভক্ত, অনুরাগী ও সাধু-সন্ন্যাসীরা দল বেঁধে মহোৎসবে যোগ দিচ্ছেন। ধর্মীয় আচার, নামসংকীর্তন, প্রসাদ বিতরণ ও আলোচনা সভায় মুখর হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। এ বছর প্রায় আট থেকে দশ লাখ ভক্তের উপস্থিতি প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
শ্রী কৃষ্ণ জয়সওয়াল নামের এক যাত্রী জানান, ‘প্রেমতলী থেকে গোদাগাড়ী যাচ্ছিলাম রোগী নিয়ে। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে জ্যামে আটকে আছি। সামনে-পেছনে গাড়ি নড়ছে না।’
ভক্তদের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ প্রশাসন ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। প্রায় পাঁচ শতাধিক পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছেন গোদাগাড়ী, প্রেমতলী ও খেতুরী এলাকায়। তাদের সঙ্গে রয়েছেন ট্রাফিক পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও।

গোদাগাড়ী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘লাখো ভক্তের নিরাপত্তা ও যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ দিন-রাত কাজ করছে। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরাও সহায়তা করছেন।’
উৎসব উপলক্ষে আশপাশের গ্রামগুলোতে বসেছে নানা ধরনের দোকানপাট ও অস্থায়ী মেলা। ধর্মীয় আবহে ভক্তদের মিলনমেলায় গোটা খেতুরী এখন এক বিশাল আধ্যাত্মিক উৎসবে রূপ নিয়েছে।
নরোত্তম দাস ঠাকুর ছিলেন বৈষ্ণব ধর্মের মহান সাধক ও সংস্কারক। তিনি বাংলায় ভক্তি আন্দোলনের প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তার তিরোভাব তিথি উপলক্ষে প্রতিবছর এই মহোৎসব পালিত হয়। ধর্মীয় উৎসব হলেও এটি এখন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।
সাখাওয়াত হোসেন/এমএন/এমএস