শিশুসহ আহত ৪
আদালতে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মারধর-শ্লীলতাহানির অভিযোগ
নারায়ণগঞ্জ আদালতে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানসহ তার জুনিয়র ও মহুরির বিরুদ্ধে এক নারী ও তার স্বামীকে প্রকাশ্যে মারধর, শ্লীলতাহানিসহ প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই দম্পতির দুই শিশুসন্তানও মারধরের শিকার হয়।
রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আদালত প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে। পরে ভুক্তভোগী নারী ফতুল্লা মডেল থানায় অভিযোগ করেন।
ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘আদালতে হাজিরা দিতে গেলে আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেনের নির্দেশে তার জুনিয়ররা ও মুহুরি মিলে আমাদের ওপর হামলা করেন। তারা আমার স্বামীকে বেধড়ক মারধর এবং আমার শ্লীলতাহানি করেন। আমার জামা-কাপড় ছিঁড়ে ফেলেন। এসময় আমাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। হামলার সময় আমার ছোট দুই ছেলে বাধা দিতে গেলে তাদেরও পিটিয়ে জখম করা হয়। আমার শিশুসন্তান আব্দুল্লাহ মেরুদণ্ডে আঘাত পেয়েছে।’
হামলার কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের পাওনা টাকা আদায়ের জন্য আদালতে মামলা করেছিলাম। আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খান ওই মামলার বিবাদী পক্ষের আইনজীবী। তিনি এই মামলা তুলে নিতে আগে থেকেই আমাদের হুমকি দিয়ে আসছিলেন। মামলা তুলে না নিলে আমাকে ও আমার স্বামীকে খুন করে বুড়িগঙ্গা নদীতে মরদেহ ভাসিয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেন। আজ আদালতে গেলে আমাদের ওপর নৃশংস হামলা করা হয়।’
আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খানের জুনিয়র খোরশেদ আলম বলেন, ‘মূলত বাদী ও বিবাদীপক্ষের মধ্যে এই ঝামেলার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে তারা আমাদের মুহুরির ওপর হামলা করেন। তখন আমরা এই ঝামেলা মিটমাট করার চেষ্টা করি। কিন্তু এটি সমাধান করতে গিয়ে আমরা নিজেরাই ফেঁসে গেছি।’
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, ‘এ ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। আমি ঘটনার ঘটার এক ঘণ্টা পর আদালতে যাই। আমি তখন আদালতে ছিলাম না তা ভিডিও দেখলেই স্পষ্ট বোঝা যায়। তারপরও কী কারণে আমার নাম যুক্ত করা হয়েছে তা জানা নেই।’
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার প্রধান বলেন, ‘বাদী ও বিবাদীপক্ষ উভয়ই দুষ্টু প্রকৃতির। তারা এর আগেও ঝামেলায় জড়িয়েছিল। আমরা মিটমাট করেছিলাম। শুনেছি, আজও আবার একই ঘটনা ঘটেছে, যা আমাদের জন্য বিব্রতকর। তবে আজকের ঘটনার বিষয়ে আমি এখনো বিস্তারিত জানি না।’
ফতুল্লা থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে থানায় এ ঘটনায় অভিযোগ করা হয়েছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখছি।
মোবাশ্বির শ্রাবণ/এসআর/জেআইএম