স্কুলছাত্র হত্যা : পুলিশ কনস্টেবল ও র‌্যাবের সোর্সের স্বীকারোক্তি


প্রকাশিত: ০১:৫০ পিএম, ১৬ মার্চ ২০১৫

স্কুলছাত্র সাঈদকে অপহরণ করে হত্যার ঘটনায় র‌্যাবের কথিত সোর্স গেদা মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। সিলেট মহানগর হাকিম আদালত-১ এর বিচারক শাহেদুল করিম তার খাস কামরায় পুলিশ কনস্টেবল এবাদুর ও ওলামালীগ সেক্রেটারি আব্দুর রকিবের  জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

সোমবার গেদার রিমান্ড আবেদনের প্রেক্ষিতে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। স্কুলছাত্র সাঈদকে অপহরণের পর কনস্টেবল এবাদুর ও র‌্যাবের কথিত সোর্স গেদাকে চিনে ফেলায় তারা সাঈদের মুখচাপা দিয়ে তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এরপর গুম করতে তারা ৭টি বস্তার ভেতর তার লাশ পুঁতে রাখে। এ ঘটনায় পুলিশের হাতে আটক তিন আসামি পুলিশের কাছে এভাবেই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয় বলে জানান সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (মিডিয়া) রহমত উল্যাহ।

মামার বাসায় বেড়াতে যাওয়ার পথে গত মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে নগরীর রায়নগর এলাকা থেকে অপহৃত হয় চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র আবু সাঈদ (৯)। এরপর শনিবার রাত ১১টার দিকে মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে নগরীর কুমারপাড়া ঝর্ণারপার এলাকায় পুলিশ কনস্টেবল এবাদুর রহমানের বাসা থেকে তার গলিত লাশ উদ্ধার করে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে বিশেষ কৌশলে এসএমপি’র বিমানবন্দর থানা পুলিশের কনস্টেবল এবাদুর ছাড়াও আটক করা হয়-জেলা ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাকিব ও র‌্যাব-পুলিশের কথিত সোর্স গেদা মিয়াকে। আটকের পর তাদের রাতভর কোতয়ালি থানায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

কনস্টেবল এবাদুরের বরাত দিয়ে এডিসি রহমত উল্যাহ জানান, ‘সেসহ আরো তিনজন এ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত। এক সময় সাঈদের পরিবারের সাথে তার পরিবার একই বাসায় সাবলেট থাকতো। এই সুবাদে সাঈদের পরিবার ছিল পূর্ব পরিচিত। সাঈদকে অপহরণের পর তার বাসায় আনা হয়। কিন্তু, পূর্ব পরিচিত হওয়ায় তারা তাকে হত্যার পরিকল্পনা নেয়। এ অনুযায়ী অপহরণের পরদিন বুধবারই তাকে হত্যা করা হয়। এরপর লাশ গুম করতে ৭টি বস্তার ভেতরে তার লাশ ঢুকানো হয়।’

রহমত উল্যাহ জানান, গুম করার জন্য তারা শিশু সাঈদের লাশটি বস্তাবন্দী করে রেখেছিল। শনিবার রাতে উদ্ধার না হলে তারা ঠিকই লাশটি কোথাও ফেলে দিতো।

তিনি জানান, সাঈদ অপহরণের পর পুলিশের কয়েকটি টিম নগরীতে কাজ শুরু করে। এ অনুযায়ী দুর্বৃত্তদের মোবাইল ট্র্র্যাকিং করা হয়। তিনি জানান, বিশেষ কৌশলে এবাদুরসহ তিন আসামিকে নগরীর বিভিন্নস্থান থেকে আটক করা হয়।

এরপর তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী-৩৭ নম্বর কুমারপাড়া ঝরণারপাড় পুলিশ কনস্টেবল এবাদুরের বাসা থেকে শিশুটির গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি জানান, এ ঘটনায় সম্পৃক্ত ওলামা লীগের আরো এক নেতাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। তবে, তদন্তের স্বার্থে তার নাম প্রকাশ করতে অপারগতা প্রকাশ করেন এডিসি।

এদিকে, হাজী শাহমীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র আবু সাঈদ এর হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সোমবার দুপুরে নগরীর কুমারপাড়ায় ঝরণা তরুণ সংঘের উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধন শেষে কুমারপাড় এলাকা থেকে এক বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নগরীর কুমারপাড়া ঝরনা এলাকা থেকে বের হয়ে শাহী ঈদগাহ, শাহমীর স্কুল অতিক্রম করে কুমারপাড়া এলাকায় গিয়ে শেষ হয়।

এমএএস/পিআর

জাগোনিউজের খবর পেতে ফলো করুন
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।