রায়পুরায় পুলিশের সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, আহত ২৫


প্রকাশিত: ০৩:২৮ পিএম, ২৭ মে ২০১৭

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার চরাঞ্চল বাঁশগাড়ীতে পুলিশ ও গ্রামবাসী মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ওসি আজহারুল ইসলাম সরকার এবং ১০ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন।

এ সময় উত্তেজিত গ্রামবাসী ৩ পুলিশ সদস্যকে আটক করে নিয়ে গেলেও পরবর্তীতে বিশেষ অভিযানে তাদের উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান রায়পুরা থানা পুলিশের সেকেন্ড অফিসার আল মামুন।

এ ঘটনায় ৮/১০ জন গ্রামবাসীকে আটক করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেলেও পুলিশ বলছে কাউকে আটক করা হয়নি। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় শাহেদ সরকার সমর্থক রুপু মেম্বারকে প্রধান করে ২৬ জনের নামে এবং অজ্ঞাত আরও ৭/৮শ ব্যক্তিকে আসামি করে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে।

শনিবার সন্ধ্যায় রায়পুরা থানা পুলিশ ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ধরতে গেলে আওয়ামী লীগ নেতা শাহেদ সরকার সমর্থিত গ্রামবাসীর সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। এই ঘটনার পর থেকে এলাকাটিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে নদী ও সড়কপথে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

নিবাচনী সহিংসতা ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উপজেলার চরাঞ্চল বাঁশগাড়ীতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান শাহেদ সরকার ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল হকের সমর্থকদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল।

এরই জের ধরে চলতি ৮ মে দুই পক্ষের রক্তক্ষয়ী টেঁটা ও বন্ধুকযুদ্ধে দুইজন নিহত হয়। এছাড়া গত কয়েক মাসব্যাপী সংঘর্ষে উভয় পক্ষের সাতজন নিহত হয়। আহত হয় কমপক্ষে দুই শতাধিক গ্রামবাসী। নিহত পাঁচজন সাবেক চেয়ারম্যান সাহেদ সরকারের সমর্থক। অপর দুইজন বর্তমান চেয়ারম্যান সিরাজুল হকের সমর্থক। এ ঘটনায় উভয় পক্ষ এক অপরের বিরুদ্ধে পাল্টা-পাল্টি মামলা করেছিলেন।

শুক্রবার রায়পুরা থানা পুলিশ ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ধরতে বাঁশগাড়ী এলাকায় অভিযান চালায়। ওই সময় পুলিশ শাহেদ সমর্থক রুপু মেম্বার ও আজিম মিয়াসহ চারজনকে আটক করে।

এতে উত্তেজিত হয়ে যায় গ্রামবাসী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গ্রামবাসীর ওপর লাঠিচার্জ করে। পরে উত্তেজিত জনতা সংঘবদ্ধ হয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়।

এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। সংঘর্ষে ওসি মো. আজহারুল ইসলাম সরকার এবং ১০ পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়। আহত পুলিশ সদস্যের মধ্যে কনস্টেবল হামিদুল্লাহ, হিফজুবুল ও নায়েক হানিফকে গুরুতর অবস্থায় নরসিংদী জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে রুপু মেম্বার ও আজিম মিয়াসহ চারজনকে আটকের প্রতিবাদে গ্রামবাসী ৩ পুলিশ সদস্য আটক করে নিয়ে যায়। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে। এ সময় আটকদের হামলাকারীরা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে বলে জানায় পুলিশ।

রায়পুরা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) মো. মাহজারুল ইসলাম বলেন, রুপু মেম্বারকে আটক করা হয়েছিল। হামলাকারীরা তাকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ২৬ জনের নামে ও অজ্ঞাত আরও ৭/৮শ ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা হয়েছে। পরবর্তী সহিংসতা এড়াতে ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

সঞ্জিত সাহা/এএম/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।