গভীর রাতে মহানন্দায় বিলীন পূর্ণিমার বসতবাড়ি, আতঙ্কে আরও আড়াইশো

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি চাঁপাইনবাবগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৭:৪২ পিএম, ০২ ডিসেম্বর ২০২১

অডিও শুনুন

চাঁপাইনবাবগঞ্জের মহানন্দা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে পূর্ণিমা রানী নামের একজনের বসতবাড়ি। পানি যত কমছে ভাঙন তত বাড়ছে। জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার চককির্তী ইউনিয়নে এ ভাঙনের ঘটনা ঘটে। এই অবস্থায় ভাঙন-আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয়রা। অনেকে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার চককির্তী ইউনিয়নের চাঁদপুর কুমার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পূর্ণিমা রানীর রান্নাঘরসহ বেশকিছু আসবাবপত্র নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন-আতঙ্কে রয়েছে রিতা রানী, কালু পাল, নয়ন পাল, মধু পাল, সুদেব হলদার, মদন পাল, সুকুমার পালসহ প্রায় ২৫০টি বসতবাড়ি।

পূর্ণিমা রানী জাগো নিউজকে বলেন, ‘বুধবার বিকেলে দেখি আমার রান্নাঘরের কিছু অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। কিন্তু তখন আমি তেমন গুরুত্ব দেয়নি। হঠাৎ রাত ১২টার দিকে কিসের যেন শব্দ শুনতে পেলাম। ওঠে দেখি নদীতে তলিয়ে গেছে আমার রান্নাঘরসহ বেশকিছু আসবাবপত্র।’

গভীর রাতে মহানন্দায় বিলীন পূর্ণিমার বসতবাড়ি, আতঙ্কে আরও আড়াইশো

পূর্ণিমা রানী তার বাড়ির মালামাল সরিয়ে নিচ্ছিলেন। পরে ঠাঁই নেন আত্মীয়ের বাড়িতে। তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে তিন বাচ্চা রয়েছে। তারা আমাকে কতদিন ঠাঁই দেবে? আমার অন্য কোনো জমি নেই যে গিয়ে বাড়ি করবো।’

রিতা রানী নামের আরেকজন বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। একটু জমির ওপর খুপড়ি তুলে পাঁচটি গরু ও তিনটি ছাগলসহ সন্তানদের নিয়ে বসবাস করছি। কিন্তু গতরাত থেকে আমার সম্বলটুকুও নদীতে বিলীন হতে শুরু করেছে। এমন হলে আমরা কোথায় গিয়ে আশ্রয় নেবো?’

ভাঙনে বিলীন হওয়া পূর্ণিমা রানীর বাড়ির পাশেই কলেজছাত্র সুব্রতর বাড়ি। গতরাতে তাদের বাড়িও ভেঙে গেছে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘রাত থেকে আমাদের চোখেও ঘুম নেই। এখন ভয়ে আছি কখন জানি আমাদের পাকাবাড়িটা ভেঙে যায়।’

গভীর রাতে মহানন্দায় বিলীন পূর্ণিমার বসতবাড়ি, আতঙ্কে আরও আড়াইশো

চককির্তী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আনোয়ার হাজান আনু বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি এরইমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। আগামীকাল থেকে কাজ শুরু হবে।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ময়েজ উদ্দিন বলেন, আমাদের কাছে জিও ব্যাগ মজুত রয়েছে। শুক্রবার থেকেই ভাঙনের জায়গায় জিও ব্যাগ ফেলা হবে।

সোহান মাহমুদ/এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।