টিকটকে প্রেম, নেপালি তরুণীকে বিয়ে করলেন জ্যোতিকা জ্যোতির ভাই

একজন বাংলাদেশি, অরেকজন নেপালি। টিকটকে পরিচয় তাদের। সেই থেকে ধীরে ধীরে মন দেওয়া-নেওয়া। এভাবেই কেটে যায় আড়াই বছর। একপর্যায়ে তারা আসেন বিয়ের সিদ্ধান্তে। কিন্তু ভিনদেশি ছেলে বলে আপত্তি তরুণীর পরিবারের। তবে তাদের ভালোবাসার মাঝে দেওয়াল হয়ে দাঁড়াতে পারেনি কোনো বাঁধা। অবশেষে প্রেমের টানে নেপালের বংশোদ্ভূত তরুণী চলে এলেন ময়মনসিংহের গৌরীপুরে। ভালোবাসার মানুষটিকেই করলেন বিয়ে।
এমনটাই ঘটেছে ময়মনসিংহের গৌরীপুরের সহনাটি ইউনিয়নের হতিহর গ্রামের পলাশ পালের সঙ্গে। তিনি ওই এলাকার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নিতাই চন্দ্র পাল ও পূর্ণিমা রাণী পাল দম্পতির ছেলে এবং চিত্রনায়িকা জ্যোতিকা জ্যোতির ভাই।
অনুদেবী ভুজেল নেপালের বংশোদ্ভূত। তার জন্ম ভারতের পশ্চিম বঙ্গের দার্জিলিং জেলার নকশালবাড়ি এলাকায়। অনুদেবীর বাবা ভারতে চাকরি করার সুবাদে সেখানেই বসবাস করতেন। তবে দাদির বাড়ি নেপালে।
গত ৭ মার্চ অনুদেবী ভুজেল পলাশ পালের হাত ধরে চলে আসেন বাংলাদেশে। ১০ মার্চ পলাশের বড় বোন চিত্রনায়িকা জ্যোতিকা জ্যোতি ঢাকায় তাদের বিয়ের আয়োজন করেন। সেখান থেকে ১১ মার্চ ময়মনসিংহের গৌরীপুরে বৌভাতের আয়োজন করে পলাশ পালের পরিবার।
শনিবার (১২ মার্চ) বৌভাতের দিন শুভেচ্ছা জানাতে আসেন ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন আহমেদসহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে পলাশ পাল জাগো নিউজকে বলেন, ‘গত ৬ বছর সিঙ্গাপুরের একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করতাম। সেখানে টিকটকে পরিচয় হয় নেপালের অনুদেবী ভুজেলের সঙ্গে। সেও সিঙ্গাপুরের একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করতেন। সেই পরিচয় থেকেই আমাদের কথা বলা শুরু। এরপর ধীরে ধীরে আমাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এভাবে আড়াই বছর প্রেম করার পর একসময় বিয়ের সিদ্ধান্ত নেই। প্রথমে অনুদেবীর পরিবার প্রথমে আপত্তি করলেও পরে মেনে নেন। আমরা দেশে ফিরে বিয়ে করি।’
পলাশ আরও বলেন, অনুদেবী নেপাল, ভারত, বাংলা ভাষা ছাড়াও আরও বেশকিছু ভাষায় কথা বলতে পারে। তাই আমার পরিবারের সঙ্গে সে খুব সহজেই মানিয়ে নিতে পারছে।’
কনে অনুদেবী জাগো নিউজকে বলেন, ‘সিঙ্গাপুরে একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরির সময় টিকটকে পরিচয় হয় পলাশের সঙ্গে। তখনই তাকে আমার খুব পছন্দ হয়। তাই পলাশকেই জীবনসঙ্গী করে নিলাম। এছাড়া ওর বাবা-মা অনেক ভালো। আমাকে ওরা আপন করে নিয়েছে। নিজের মেয়ের মতোই আমাকে আদর করে।’
পলাশের চাচা রঞ্জিত কুমার পাল জাগো নিউজকে বলেন, ‘অনুদেবীকে আমরা নিজের মেয়ের মতোই বরণ করে নিয়েছি। আশা করছি পরিবারের অভাব সে বুঝতে পারবে না।’
অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা চার ভাই বোনের মধ্যে পলাশ সবার ছোট। অনুদেবীকে পছন্দের বিষয়টি আগে থেকেই আমাকে জানিয়েছিল। পলাশ চেয়েছিল তাকে বিয়ে করবে, তাই হয়েছে। বিয়ের মাধ্যমে তাদের প্রেমের সফল পরিণয় ঘটেছে।’
পলাশের মা পূর্ণিমা রাণী পাল জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার ছেলে তাকে পছন্দ করে বিয়ে করেছে। এছাড়া মেয়েও খুব ভালো। আমাদের সবাইকে অল্প সময়ের মধ্যেই আপন করে নিয়েছে। তারা যদি সুখী হয়, তাহলে আমরাও খুশি।’
মঞ্জুরুল ইসলাম/এসজে/জেআইএম