চুয়াডাঙ্গায় গরমে বেড়েছে তালশাঁসের কদর

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি চুয়াডাঙ্গা
প্রকাশিত: ১১:০৪ এএম, ০৬ জুন ২০২৩

চুয়াডাঙ্গায় তীব্র গরমে বেড়েছে তালশাঁসের চাহিদা। আম ও লিচুসহ মৌসুমি অন্য ফলের ক্ষেত্রে বিষাক্ত ফরমালিন ব্যবহারের ঘটনা খুবই স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। কিন্তু তালশাঁসে এসবের প্রয়োজন হয় না। তাই ভেজালমুক্ত তালশাঁসের কদর বেশি।

সরেজমিন দেখা যায়, চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের কোর্ট মোড়, রেল বাজারসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ সব পয়েন্টে ও জেলার উপজেলা শহরগুলোসহ গ্রাম্য বাজারগুলোতেও তালশাঁস বিক্রি হচ্ছে। চার পিস শাঁসের একটি তাল বিক্রি হচ্ছে ২০-৩০ টাকায়।

চুয়াডাঙ্গা পৌর কলেজপাড়ার বাসিন্দা কোর্ট মোড় এলাকার তাল ব্যবসায়ী মুন্না জাগো নিউজকে বলেন, গরম পড়ায় প্রচুর পরিমাণে তালশাঁস বিক্রি হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গায় গরমে বেড়েছে তালশাঁসের কদর

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হাটকালুগঞ্জ এলাকার ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম বলেন, ‘গতবারের তুলনায় এবার তাল বেশি দামে কিনছি। তাই তালশাঁসও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আমি ভালো তাল কাটতে পারি, এজন্য আমার বিক্রিও বেশি।’

সন্তান কোলে করে তালশাঁস কিনতে আসা চুয়াডাঙ্গা শহরের শান্তিপাড়ার বাসিন্দা শিউলী বেগম বলেন, ‘তালশাঁস অনেক পছন্দের। তবে গতবারের তুলনায় এবার দাম বেশি। দাম যা-ই হোক, বছরে এ ফল একবারই পাওয়া যায়। তাই নিতে এসেছি।’

চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের কোর্ট মোড়ে তালশাঁস বিক্রি করেন ব্যবসায়ী আলী কদর। তিনি গ্রামে গ্রামে ঘুরে গাছমালিকদের কাছ থেকে তাল সংগ্রহ করেন। পরে চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরসহ গ্রাম এলাকার বিভিন্ন হাটে বিক্রি করেন।

চুয়াডাঙ্গায় গরমে বেড়েছে তালশাঁসের কদর

কদর আলী বলেন, প্রতিবছর এ সময়ে তালশাঁস বিক্রি করি। গরমে বিক্রিও হয় ভালো। দাম ভালো পাওয়া যায়। সারাদিনে দেড় থেকে আড়াই হাজার টাকার তালশাঁস বিক্রি হয়। এতে এক হাজার টাকার মতো লাভ থাকে।

চুয়াডাঙ্গার ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. আওলিয়ার রহমান জাগো নিউজকে বলেন, গরমে তালের কচি শাঁস এবং এর ভেতরের মিষ্টি পানি তৃষ্ণা মিটিয়ে শরীরে আরামদায়ক অনুভূতি এনে দেয়। তালে আছে প্রতি ১০০ গ্রামে ০.৮ গ্রাম খনিজ পদার্থ, ২০.৭ গ্রাম শর্করা, ০.৮ গ্রাম আমিষ ও ০.৫ গ্রাম আঁশ। গরমে শরীরের পানির অভাব পূরণ করতে এর মধ্যে আছে ৭৭.৫ ভাগ জলীয় অংশ। ০.৫ গ্রাম খাদ্য আঁশ থাকায় এটি হজমে সহায়ক। অবাক করার মতো খাদ্যশক্তি রয়েছে তালশাঁসে—প্রায় ৮৭ কিলোক্যালোরি। ৮ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকায় হাড় গঠনেও দারুণ ভূমিকা রাখে তালশাঁস।

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, জেলার বিভিন্ন গ্রামীণ সড়কের দুপাশে ও খালের পাড়ে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে তালের চারা রোপণ করা হয়েছে। তালগাছের অনেক উপকারিতা রয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো এ গাছ বজ্রনিরোধক। মাঠপর্যায়ে কৃষকদের তালগাছ রোপণে উদ্বুদ্ধ করতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।

হুসাইন মালিক/এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।