তীব্র গরম
চার্জারফ্যানের দামে আগুন, নষ্ট ফ্যান মেরামতের হিড়িক

শরীয়তপুরে দুসপ্তাহ ধরে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ বইছে। এরওপর ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত জনজীবন। তাই অসহনীয় গরম থেকে রক্ষায় জেলায় চার্জারফ্যানের কদর বাড়ছে। কিন্তু বাড়তি দামেও মিলছে না ফ্যান। তাই ঘরে থাকা নষ্ট চার্জারফ্যান মেরামতের হিড়িক পড়েছে। বসে থাকার সময় পাচ্ছেন না ফ্যানের টেকনিশিয়ানও।
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ বাজারে নজরুল ইলেকট্রনিকের দোকানে ১০০-২০০ নষ্ট ফ্যান পড়ে আছে। প্রতিদিন গড়ে ১০০ ফ্যান ঠিক করে রাত ১১টায় বাড়ি যান তিনি।
নজরুল বলেন, এ তীব্র গরমের আগে দৈনিক ১০ জন ব্যক্তি পুরাতন ফ্যান ঠিক করতে আসতেন। তবে এখন একটা নতুন চার্জারফ্যানের দাম ৬ হাজার টাকা। তাই মানুষ কী করবে, বাধ্য হয়ে গরম থেকে একটু রেহাই পেতে পুরাতন ফ্যান খুঁজে খুঁজে দোকানে আনছেন। তবে ফ্যানের পার্সেরও দাম বাজারে অনেক বেশি। এরপরও নতুন ফ্যানের থেকে সাশ্রয়ী মূল্যে পুরাতন ফ্যান ঠিক করে চলতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, আমার দোকানে প্রতিদিন ১০০-১৫০ ভোক্তা পুরাতন ফ্যান ঠিক করতে নিয়ে আসে। প্রতিদিন আমি ৮০ থেকে ১০০ টাকা ফ্যান ঠিক করে তারপর বাড়ি যাই। অনেক চাপ পড়ে যায়। দুপুরে খাওয়া-দাওয়া করতে পারি না। এছাড়া লোডশেডিংয়ের যে অবস্থা, দোকানে কাজ করেও শান্তি পাচ্ছি না।
শরীয়তপুর সদর উপজেলার জামাল ইলেকট্রনিক্সের মালিক জামাল হোসেন বলেন, আমার দোকানে নতুন কিছু চার্জারফ্যান আছে। কিন্তু দাম বেশি হওয়ায় অনেকে কিনতে পারছেন না। আমাদেরও বেশি দামে ফ্যান কিনতে হচ্ছে। এছাড়া ফ্যানের স্টক নেই।
ভেদরগঞ্জ বাজারের নূর ইলেক্ট্রনিক্সের মালিক নূর মোহাম্মদ বলেন, আমি আজকে ঢাকা থেকে কয়েকটি ফ্যান এনেছি। গত সপ্তাহের তুলনায় প্রত্যেকটি ফ্যানে ৫ থেকে ৬০০ টাকা দরে বেশি কিনতে হয়েছে। তবে দাম অতিরিক্ত হওয়ায় চার্জারফ্যানের অনেক চাহিদা থাকলেও কিন্তু সবাই কিনতে পারছেন না। আমি মাত্র ১০টা প্যান্ট কিনে আনলাম। কারণ চাহিদা মতো আমাদের কাছে বিক্রি করতে পারছে না তাদের স্ট্রোক নেই।
ফ্যান ঠিক করতে আসা জাকির হোসেন বলেন, আমি আজকে একটি চার্জার ফ্যান কিনতে গিয়ে দেখি দাম চাই ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা।তাই আমার বাড়িতে তিনটা পুরনো চার্জারফ্যান ছিল নষ্ট। আমি ফ্যানগুলো নিয়ে তাড়াতাড়ি দোকানে ঠিক করতে চলে আসি । কিন্তু দোকানে এসে দেখি অনেক ভিড়। আমাকে দোকানদার বললেন দু-একদিন পর নিতে হবে। কিন্তু বাড়িতে লোডশেডিং এর সমস্যায় খুব অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছি আমরা পরিবারের সবাই। নতুন ফ্যান কিনার থেকে ঠিক করে নেওয়াই অনেক ভালো। এত টাকা পাব কোথায় যে অবস্থা দেশের সবকিছুর দাম বাড়তি।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সুজন কাজী( শরীয়তপুর) বলেন,আমরা নিয়মিত অভিযান করে যাচ্ছি। যদি কেউ ফ্যানের দাম বেশি বিক্রি করে তাদের জরিমানার আওতায় আনছি। তবে যেই গরম ও লোডশেডিং তাতে মানুষ অতিষ্ঠ হওয়ারই কথা। আমরা বিভিন্ন তথ্যসূত্রে বিভিন্ন বাজারে চার্জারফ্যানের দাম বেশি বিক্রি করার কথা জানতে পারছি। আমরা আবারও অভিযানে নামবো এবং যারা ফ্যান বেশি দামে বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসজে/এমএস