ঈদ বাজারে শিশুদের আরামদায়ক পোশাক
ঈদের আনন্দ মানেই নতুন নতুন পোশাক। আর সেটা যদি হয় শিশুদের, তাহলে তো কথাই নেই। বলা চলে বড়দের মূল উৎসব বাচ্চা বা শিশুদের আনন্দ-উল্লাসে। এ জন্য শিশুদের কেনাকাটা সবার আগে। ইদুল ফিতর উপলক্ষে ইতোমধ্যে জমে উঠেছে রাজধানীর বিপনী-বিতানগুলো। অধিকাংশ মার্কেটেই বড়দের কাপড়ের তুলনায় শিশুদের কাপড়ের দোকানে ভিড় বেশি। রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এবারের ঈদে গরমে আরামদায়ক পোশাকের প্রতি জোর দিয়েছেন ডিজাইনাররাও। এছাড়া নতুন পোশাকে অস্বস্তি এড়াতে ক্রেতাদের মাঝেও সুতির কাপড় বা প্রিন্টের পোশাকের চাহিদা বেশি। তবে দেশি পোশাকের সঙ্গে ভারতীয় ও চীনা পোশাকের দৌরাত্ম্যও কম নয়।
সাধ ও সাধ্যের মধ্যে পোশাক পাওয়া যাচ্ছে পুরো রাজধানী জুড়েই। শৈশব, আড়ং, নিপুণ, রঙ বাংলাদেশ, অঞ্জন’স, দেশাল ও যাত্রায় পাওয়া যাচ্ছে জন্য নানা ডিজাইনের শিশুদের দেশীয় পোশাক। এছাড়া, পশ্চিমা পোশাকের জন্য জেন্টলপার্ক, টেক্সমার্ট, মি অ্যান্ড মম, ক্যাটস আই কিডস, লা রিভ, মেনজ ক্লাব, টেক্সমার্ট কিডস হাউসের আউটলেটগুলো অন্যতম।
সীমান্ত স্কয়ার, বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্কসহ বিভিন্ন শপিং সেন্টারেই পাওয়া যাচ্ছে মন মাতানো বিভিন্ন পোশাক। এছাড়া নিউমার্কেট ও সুবাস্তু টাওয়ার, নুরজাহান মার্কেট, বঙ্গবাজার, মৌচাক মার্কেট, তালতলা মার্কেটে রয়েছে শিশুদের জন্য নানা ডিজাইনের পোশাক।
অভিজাত শপিং মল বসুন্ধরা সিটিতে শিশুদের পোশাকের দোকান ‘কিডস ওয়ার্ল্ডে’ গিয়ে জানা গেছে, এবারও দেশি পোশাকের মধ্যে গরমে আরামদায়ক পোশাকের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি। তবে ভারতীয় ও চীনা পোশাকের বিক্রিও কম নয়।
কিডস ওয়ার্ল্ডের বিক্রয়কর্মীরা জানান, বড়দের মতো খুকী-কিশোরীদের পোশাকে এবারও ভারতীয় বিভিন্ন নাটক বা চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট পোশাকের চাহিদা বেশি। এর মধ্যে বজরঙ্গি ভাইজান, সুলতান অন্যতম।
বসুন্ধরা সিটির চিতা ডিজাইনের ব্যবস্থাপক মো. রনি জাগো নিউজকে জানান, ‘অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার শিশুদের পোশাকের দাম বেড়েছে গড়ে প্রায় ২০ ভাগ। মানের দিক থেকে বিদেশি পোশাকের চেয়ে দেশি পোশাক কোনো অংশে কম নয়, এছাড়া দামেও কিছুটা সাশ্রয়ী।’
জানা গেছে, এবার শিশুদের পোশাকের ধরণ ও উপকরণের উপর ভিত্তি করে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। ধরণ অনুযায়ী শিশুদের পেশোকের দাম ৫শ’ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা বা তার বেশি। এছাড়া গেঞ্জি, টি-শার্ট, হাফ হাতা শার্ট পাওয়া যাচ্ছে ১৫০ থেকে ১ হাজার টাকায়। গ্যাবার্ডিন ও জিনসের প্যান্টের দাম ৩০০ থেকে ৭৫০ টাকা। মেয়েদের ফ্রক, স্কার্ট ও টপ পাওয়া যাচ্ছে ৪৫০ থেকে ৮০০ টাকায়। শিশুদের শাড়ি ১ হাজার ৬শ’ থেকে ২ হাজার ২শ’ টাকা। পাঞ্জাবি ৫শ’ টাকা থেকে ১৫শ’ টাকায়, সালোয়ার-কামিজ ৮শ’ থেকে ২২শ’ টাকায়, ফতুয়া ৪৫০ থেকে ৮শ’ টাকায় এবং ফ্রক ৫শ’ থেকে ৪৫০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
ভারতীয় পোশাকের মধ্যে ‘বাজিরাও মাস্তানি’ নামক মেয়েদের জামা বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার ৫শ’ থেকে ৯ হাজার টাকায়। ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ বিক্রি হচ্ছে ৮ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকায়। এছাড়া ‘সুলতান’ বিক্রি হচ্ছে ২৫০০ থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকায়।
বসুন্ধরা সিটির বেবিস গ্যালারিতে কথা হয় বিক্রয়কর্মী মো. তাজুল ইসলামের সঙ্গে। জাগো নিউজকে তিনি জানান, এবার ঈদে ছোটদের জন্য চীন, থাইল্যান্ড ও ভারতীয় পোশাক এসেছে। ৬ থেকে ১২ বছরের শিশুদের থ্রি কোয়ার্টারের মূল্য ৯৮০ থেকে
২২৫০ টাকা, সালোয়ারের বিশেষ একটি সেটের মূল্য ২৪৮০ থেকে ১৮৫০ টাকা, ডিভাইডার ফ্রোক ১২০০ থেকে ১৮৫০ টাকা এবং ছেলেদের টি-শার্ট পাওয়া যাচ্ছে ৮৫০ থেকে ১৪৯০ টাকায়।
ফ্যাশন হাউস কে-ক্র্যাফটের ব্যবস্থাপক মো. নাসির হোসেন বলেন, বড়দের ডিজাইনগুলোই ছোটদের গঠন অনুযায়ী তৈরি করেছি। গরমে শিশুদের আরামের কথা ভেবে অধিকাংশ পোশাক তৈরি করা হয়েছে সুতি কাপড়ে। আমরা ২ বছর থেকে ১২ বছরের শিশুদের উপযোগী নতুন নতুন ডিজাইনের পোশাক এনেছি।
কে-ক্র্যাফটে থ্রি-পিস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০ টাকা থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায়, টপস ৪৫০ থেকে ১২৫০ টাকায়, ছোটদের সাধারণ শাড়ি ৭৫০ থেকে ১৫৫০ টাকায়, ছোটদের কুচি দেওয়া শাড়ি ১৫৫০ থেকে ৩৫০০ টাকায়, ছোট খোকাদের জন্য পাঞ্জাবি পাওয়া যাচ্ছে ২৫০ থেকে ৪০০ টাকায়, পায়জামা ২৫০ থেকে ৪০০ টাকায়, ফতুয়া ৪৫০ থেকে ১০৫০ টাকায় এবং শার্ট-প্যান্ট একসঙ্গে ৫৫০ থেকে ১২০০ টাকায়।
এমএ/আরএস/এমএস