খাতা পুনর্মূল্যায়ন

এইচএসসিতে ফেল থেকে পাস ৩৯৯, জিপিএ-৫ পেলো ৩১৫ জন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:০৩ পিএম, ১০ মার্চ ২০২৩
ফাইল ছবি

এএইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার খাতা পুনর্নিরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এতে প্রায় তিন হাজার পরীক্ষার্থীর ফলাফল পরিবর্তন হয়েছে। এর মধ্যে নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩১৫ জন শিক্ষার্থী। ফেল থেকে নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে একজন এবং ফেল থেকে নতুন করে পাস করেছে ৩৯৯ জন। বিভিন্ন গ্রেডে ২ হাজার ৮৩৫ জন শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়েছে।

শুক্রবার (১০ মার্চ) দেশে ১০টি শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে ৯টির ফল প্রকাশিত পুনর্নিরীক্ষণের ফল বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানা গেছে। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ফল এখনো বোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়নি। প্রতি বছরের মতো এবারও এত সংখ্যক পরীক্ষার্থীর ফলাফল পরিবর্তনের পেছনে পরীক্ষকদের গাফিলতি রয়েছে বলে মনে করছেন বোর্ড কর্মকর্তারা।

বিজ্ঞাপন

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুনর্নিরীক্ষণে নতুন করে কোনো উত্তরপত্র মূল্যায়ন করা হয় না। শুধু উত্তরপত্রের শিক্ষার্থীর প্রাপ্ত নম্বরের যোগ-বিয়োগগুলো দেখা হয়। এতেই এত সংখ্যক শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন। এটা শুধু পরীক্ষকদের গাফিলতির কারণে হয়েছে।

এর আগে ২০১৯ সালে টানা তিন বছর ধারাবাহিক গাফিলতির কারণে ১ হাজার ২৬ পরীক্ষককে শাস্তির আওতায় আনে শিক্ষাবোর্ড। বোর্ডের আইনানুযায়ী অভিযুক্তদের বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। অভিযুক্ত বেশিরভাগ পরীক্ষককে কালো তালিকাভুক্ত, কাউকে সারাজীবনের জন্য কোনো বোর্ডের পরীক্ষক হতে না পারার মতো শাস্তি দেওয়া হয়। তবে, যেসব পরীক্ষক খাতা মূল্যায়নে কেলেঙ্কারি বা ক্রাইমে যুক্ত হন তাদের বেতন-ভাতা বন্ধ এবং চাকরিচ্যুত করার নজির আছে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

এ ব্যাপারে আন্তঃবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এবং ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক আবুল বাশার বলেন, পুনর্নিরীক্ষণের ফল পরিবর্তন স্বাভাবিক ঘটনা। তবে, সংখ্যাটি যদি নির্দিষ্ট পার্সেন্টের বাইরে চলে যায় তখন তদন্ত করা হয়। সব বোর্ডের তথ্য সংগ্রহ করে যদি নির্দিষ্ট পার্সেন্টের বাইরে যায়, তবে চিহ্নিত পরীক্ষকদের বিভিন্ন ধরনের শাস্তি দেওয়া হবে। অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী অভিযুক্ত বেশিরভাগ পরীক্ষককে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। অপরাধের মাত্রা বেশি হলে তাদের বেতন-ভাতা বন্ধ করার জন্য মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হয়।

কোন বোর্ডে কতজনের ফল পরিবর্তন:
ঢাকা বোর্ডের এইচএসসি পরীক্ষার খাতা পুনর্নিরীক্ষণে ৯১৩ জনের ফল পরিবর্তন হয়েছে। এতে নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৩৪ জন। আর ফেল থেকে পাস করেছে ১৪৫ জন পরীক্ষার্থী। ফলাফলে সন্তুষ্ট না হয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে খাতা চ্যালেঞ্জ আবেদন করেছে ৩১ হাজার ৫৭৪ শিক্ষার্থী। তারা এক লাখ চার হাজার ৬৬৫টি ‘স্ক্রিপ্ট’ বা বিষয়ের খাতা পুনর্মূল্যায়নের আবেদন করেন।

চট্টগ্রাম বোর্ডে ফেল থেকে পাস করেছে ৭৪ জন শিক্ষার্থী। নতুন জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫৫ জন। সিলেট বোর্ডে ফেল থেকে পাস করেছে ১৯ জন। নতুন জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১ জন। রাজশাহী বোর্ড ফেল থেকে পাস করেছে ২৪ জন। নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৫ জন। দিনাজপুর বোর্ডে ১৬৬ জনের ফল পরিবর্তন হয়েছে। নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৯ জন। ফেল থেকে পাস করেছে ৬৪ জন। যশোর বোর্ডে ৯৩ জনের ফল পরিবর্তন হয়েছে। এতে নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৩ জন। নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৫ জন। কুমিল্লা বোর্ডে ফেল থেকে পাস করেছে ৪৪ জন। নতুন জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩২ জন। তাদের মধ্যে একজন পরীক্ষার্থী ফেল থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে। ময়মনসিংহ বোর্ডে ফেল থেকে পাস করেছে সাতজন। নতুন জিপিএ-৫ পেয়েছে দশজন।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

জাগোনিউজের খবর পেতে ফলো করুন

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সমন্বয়ক ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, করোনার পর এবার বেশি বিষয়ে পরীক্ষা হয়েছে। সঙ্গত কারণে এবার পুনর্নিরীক্ষণে আবেদন বেশি। এটা অস্বাভাবিক কিছু দেখছি না। তবে, অন্যান্য বছরের তুলনায় যদি বেশি হয় তবে তা তদন্ত-সাপেক্ষে পরীক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এমএইচএম/এমএএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।