রেড সি উৎসবে ইতিহাস গড়ল রোহিঙ্গা ভাষার সিনেমা ‘লস্ট ল্যান্ড’
বিশ্ব চলচ্চিত্রের মঞ্চে নতুন এক ইতিহাস রচিত হলো সৌদি আরবের জেদ্দায়। পঞ্চম রেড সি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সর্বোচ্চ সম্মান ‘গোল্ডেন ইউসর’ জিতে নিয়েছে রোহিঙ্গা ভাষায় নির্মিত প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘লস্ট ল্যান্ড’। জাপানি নির্মাতা আকিও ফুজিমোতোর এই মানবিক সিনেমাটি শুধু পুরস্কারই জিতেনি, বরং নিপীড়িত এক জনগোষ্ঠীর কণ্ঠস্বরকে পৌঁছে দিয়েছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির শিখরে।
উৎসবের সমাপনী রাতে জেদ্দার ঐতিহাসিক আল-বালাদ এলাকায় আয়োজিত জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে জুরি প্রধান ও একাডেমি পুরস্কারজয়ী নির্মাতা শন বেকার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করেন। বিচারক প্যানেলে ছিলেন প্রখ্যাত নির্মাতা নাদিন লাবাকি এবং অভিনেত্রী ওলগা কুরিলেঙ্কো ও নাওমি হ্যারিস।
আরও পড়ুন
শাহরুখ-মেসির ঐতিহাসিক সাক্ষাৎ হবে কলকাতায়
বিখ্যাত রাশিয়ান উপন্যাসের চরিত্রে জনি ডেপ
মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা দুই রোহিঙ্গা শিশুর বেঁচে থাকার লড়াই নিয়েই ‘লস্ট ল্যান্ড’। নয় বছরের সোমিরা ও তার ছোট ভাই শাফি মালয়েশিয়ায় থাকা চাচার কাছে পৌঁছাতে সাগর ও স্থলপথে পাড়ি দেয় বিপজ্জনক এক যাত্রা। পাচারকারীদের ভয়, শোষণ আর অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি হওয়া এই গল্প দর্শকদের গভীরভাবে নাড়া দেয়। সিনেমাটির বড় শক্তি হলো- এতে অভিনয় করেছেন মূলত বাস্তব জীবনের শরণার্থীরা, যা গল্পকে দিয়েছে তীব্র বাস্তবতা।
উৎসবে দ্বিতীয় সেরা চলচ্চিত্র বা ‘সিলভার ইউসর’ জিতেছে ফিলিস্তিনি-আমেরিকান নির্মাতা চেরিন ডাবিসের ‘অল দ্যাটস লেফট অফ ইউ’। জুরি পুরস্কার পেয়েছে ‘হিজরা’, আর সেরা পরিচালকের সম্মান জিতে নিয়েছেন আমির ফাখের এলদিন।
সমাপনী দিনে বিশেষ সম্মাননায় ভূষিত হন ব্রিটিশ অভিনেতা ইদ্রিস অ্যালবা, মার্কিন নির্মাতা ড্যারেন অ্যারোনোফস্কি এবং কিংবদন্তি অভিনেতা অ্যান্থনি হপকিন্স।
রেড সি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের এবারের আসরটি মধ্যপ্রাচ্য ও বিশ্বের নানা প্রান্তের ভাষা, সংস্কৃতি ও গল্পের মিলনমেলায় পরিণত হয়। সেই বহুস্বরের ভিড়ে সবচেয়ে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে নিপীড়িত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানবিক আর্তনাদ। যার নাম ‘লস্ট ল্যান্ড’।
এলআইএ