যৌনতার ফাঁদে পা, ১২ কোটি টাকা খুইয়ে হাসপাতালে ৮০ বছরের বৃদ্ধ
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচয়। তারপর বন্ধুত্ব, বন্ধুত্ব থেকে প্রেম ও যৌনতার হাতছানি। ফাঁদে পা দিয়ে দুই বছরে মোট ৮ দশমিক ৭ কোটি রুপি খোয়ালেন এক বৃদ্ধ। বাংলাদেশি টাকায় এই অর্থের পরিমাণ ১২ কোটিরও বেশি।
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের মুম্বাইয়ে। সর্বস্ব হারিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন ভুক্তভোগী ওই বৃদ্ধ। এছাড়া প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে মানসিক আঘাতে বৃদ্ধকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়, যেখানে তার ডিমেনশিয়া ধরা পড়ে।
জানা গেছে, ঘটনার সূত্রপাত ২০২৩ সালে। শারভি নামে এক নারী ওই বৃদ্ধকে ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠান। সেখান থেকেই কথাবার্তা শুরু হয়ে দুজনের। ধীরে ধীরে সম্পর্ক গভীর হয়। শারভি জানান, তিনি তার স্বামীর সঙ্গে থাকেন না। সন্তানদের নিয়ে আলাদা থাকেন। একপর্যায়ে তাদের অনলাইন সম্পর্ক আরও ঘণিষ্ঠ হয়। এরই একপর্যায়ে সন্তানদের অসুস্থতার নাম করে শারভি বৃদ্ধের কাছ থেকে টাকা চাইতে শুরু করেন।
এর কয়েকদিন পর কবিতা নামে আরও এক নারী ভুক্তভোগী বৃদ্ধকে হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ পাঠাতে শুরু করেন। তিনি নিজেকে শারভির পরিচিত বলে দাবি করেন। এই নারীর সঙ্গে বৃদ্ধের ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। কবিতা বিভিন্ন অশ্লীল ছবিও পাঠাতে শুরু করেন বলে দাবি ভুক্তভোগীর।
একই বছরের ডিসেম্বরে দিনাজ নামে এক নারী বৃদ্ধের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এই নারী দাবি করেন, তিনি শারভির বোন ও জানান, শারভি মারা গেছেন। তিনি হাসপাতালের বিল পরিশোধের জন্য অর্থ চান এবং শারভি ও বৃদ্ধের কথোপকথনের স্ক্রিনশট পাঠিয়ে ব্ল্যাকমেইল শুরু করেন। পরে টাকা ফেরত চাইলে দিনাজ আত্মহত্যার হুমকি দেন।
এর কিছুদিন পর জাসমিন নামে আরেক নারী দিনাজের বন্ধু হিসেবে পরিচয় দিয়ে সাহায্য প্রার্থনা করেন। বৃদ্ধ তাকেও টাকা পাঠান।
এভাবে ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ৭৩৪টি লেনদেনে মাধ্যমে বৃদ্ধ মোট ৮ দশমিক ৭ কোটি রুপি পাঠান। সব সঞ্চয় শেষ হয়ে গেলে তিনি পুত্রবধূর কাছ থেকে ২ লাখ রুপি ধার নেন ও এরপরও প্রতারকের টাকা চাওয়া অব্যাহত থাকে। পরে ছেলের কাছে ৫ লাখ রুপি চান। ছেলে সন্দেহ করে বিষয়টি জানতে চাইলে বৃদ্ধ সব খুলে বলেন।
অবশেষে সর্বস্বান্ত বৃদ্ধ গত জুলাই মাসে পুলিশের দ্বারস্থ হন। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের ধারণা, এই প্রতারণা চক্রের নেপথ্যে রয়েছে একজনই। তিনিই বিভিন্ন নামে ওই বৃদ্ধের সঙ্গে আলাপ করতেন ও যৌনতার টোপ দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিতেন। তবে ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
সূত্র: এনডিটিভি
এসএএইচ